বিমান বিপর্যয়
গুজরাটের আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের কাছে বড়সড় বিমান দুর্ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। এয়ারপোর্টের কাছে মেঘানিনগরে এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রীবাহী AI171 বিমান ভেঙে পড়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হস্টেলে।
২৪১ জন যাত্রীর মৃত্যু
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিমানে ক্রু সহ মোট ২৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ১৬৯ জন ছিলেন ভারতীয়। ৫৩ জন ব্রিটিশ, ১ জন কানাডিয়ান এবং পর্তুগালের ৭ নাগরিক ছিলেন বিমানে। অবিশ্বাস্য ভাবে বেঁচে গিয়েছেন কেবলমাত্র ১ জন।
টেক অফের পরই ক্র্যাশ
আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন যাচ্ছিল বিমানটি। কিন্তু এয়ারপোর্ট থেকে টেক অফের কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। তবে এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানা যায়নি।
ফ্লাইট যাত্রা কতটা নিরাপদ?
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর দেশজুড়ে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে বিমানযাত্রা কতটা নিরাপদ? সকলেই জানতে চাইছেন, কোনও বিমানে সবথেকে সুরক্ষিত আসন কোনটি? যা বিপদের সময়েও প্রাণ রক্ষা করবে যাত্রীর?
সবথেকে সুরক্ষিত ট্রান্সপোর্ট!
সকলেরই জানা উচিত, বিমানযাত্রা অন্যতম নিরাপদ একটি ট্রান্সপোর্ট। শুধুমাত্রা সময় বাঁচায় তা নয়, অন্যান্য যাত্রাপথের তুলনায় এটি যথেষ্ট নিরাপদও। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
মৃত্যুর হার অত্যন্ত কম
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ অ্যাভিয়েশনের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক চ্যাং লুং বলেন, 'গাড়িতে সফরের তুলনায় বিমানে যাত্রায় মৃত্যু হার অনেকটাই কম।'
মৃত্যু হার ১৩.৭ মিলিয়নের মধ্যে ১
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, যে কোনও বিমান দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে মৃত্যুর সম্ভাবনা ১৩.৭ মিলিয়নের মধ্যে ১। তবে পরিস্থিতি এবং অভিঘাতের উপর নির্ভর করে দুর্ঘটনায় যাত্রীদের উপর কী প্রভাব পড়তে পারে।
এমারজেন্সি
যদি ভাবেন, কোন আসনে বসলে দুর্ঘটনার মুহূর্তেও সুরক্ষিত থাকা সম্ভব, তবে তা এমারজেন্সি পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। সাধারণত বিমানের মাঝে এবং পিছন দিকের আসনগুলিকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ মনে করা হয়।
FAA ডেটা
টাইম ম্যাগাজিনের FAA (Federation Aviation Administration) ডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিমানের পিছনের তিন অংশে বসা যাত্রীদের মধ্যে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান সবথেকে কম।
সামনের অংশে বিপজ্জনক
অ্যাভিয়েশন সেফটি রিসার্চার ড্যানিয়েসল ক্যায়াসি বলেন, 'বেশিরভাগ বিমান দুর্ঘটনায় সামনের অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।'
উইংয়ের নিকটবর্তী আসন
অধ্যাপক চ্যাং লুংয়ের দাবি, 'ফ্লাইটে উইংয়ের কাছে আসন কিছুটা হলেও লাভজনক হয়। বিমানের এই অংশ মজবুত বেশি।'
এমারজেন্সি এক্সিট
উইংয়ের নিকটবর্তী আসনটি সাধারণত এমারজেন্সি এক্সিটের কাছেই থাকে। ফলে দুর্ঘটনার সময়ে এই আসনে বসা যাত্রীর সুরক্ষিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কিছু বিশেষজ্ঞের বক্তব্য, জানালার পাশের আস থেকে জরুরি পরিস্থিতিতে বাইরে বেরিয়ে আসা সুবিধাজনক। তবে এক্ষেত্রে একটু এদিক-ওদিক হলে যাত্রীরা আটকেও যেতে পারেন। ক্র্যাশ কিংবা ধাক্কার সময়ে মাঝের আসনের যাত্রীরা কিছুটা হলেও সুরক্ষিত হন। আইল সিট থেকে বাইরে বেরিয়ে আসা অপেক্ষাকৃত সহজ। তবে হুড়োহুড়ির সময়ে ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।
বিপদ কীসে?
তবে উইংয়ের নিকটবর্তী আসনটি ফুয়েল ট্যাঙ্কেরও একদম সামনে থাকে। ফলে কিছু ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার সময়ে এই অংশে দ্রুত আগুন লাগার সম্ভাবনা থাকে। তবে জরুরি অবতরণের সময়ে সাধারণত ফুয়েল ট্যাঙ্ক খালি করে দেওয়া হয়। ঠিক একই ভাবে এক্সটি রো-এর কাছে বসা আসনের যাত্রীদের বিপদ কিছুটা কম হয়।