কথায় বলে শ্মশান মানুষের শেষ আশ্রয়। জীবন শেষে সেখানেই অন্তিম আশ্রয়ে চলে যান সকলে। তবে কানহাইলাল শির্কে এবং তাঁর পরিবারকে বিপদের দিনে আশ্রয় দিয়েছে শ্মশানঘাট।
গত বছর লকডাউনে বহু মানুষের মতো তিনিও চাকরি হারিয়েছেন। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা হলেও চাকরি সূত্রে ভদোদরায় থাকতেন। চাকরি যাওয়ার পর মাথায় উপর ছাদও চলে যায়। তখন পরিবার নিয়ে চলে আসেন শ্মশানে।
প্রায় এক বছর ধরে কানহাইয়ালালের কাছে এই শ্মশানই তাঁর ঘরবাড়ি। এখানে থেকে দেহ সৎকার করেন। এ কাজে তাঁর স্ত্রীও তাঁকে সাহায্য করেন। পরিজনকে শেষ বিদায় দিতে আসা মানুষের দুঃখ তিনি কম করতে পারেন না ঠিকই, তবে খুব দায়িত্ব নিয়ে সৎকার করেন কানহাইয়া।
ভদোদরায় একলাই থাকতেন কানহাইয়া। সন্তানদের নিয়ে স্ত্রী অনিতা থাকতেন মুম্বইয়ে। সেখানেই ছোটখাটো একটা কাজ করতেন সংসার চালানোর জন্য। বরোদায় রঙের কাজ করতেন কানহাইয়া। তবে সক ডাউনে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কর্মহীন এবং রোজগারহীন হয়ে পড়েন কানহাইয়া। লক ডাউন শিথিল হওয়া পর পেট চালানোর জন্য মুটে-মজুরের কাজও করেছেন। এর মাঝে তাঁর পরিবারও চলে আসে ভদোদরায়।
আপাতত ভদোদরার বাসনা গাও-এর এই ছোট্ট শ্মশানই তাঁর এবং তাঁর পরিবারের ঠিকানা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দেহ সৎকারের কাজ করেন স্বামী স্ত্রী দুজনে। মাঝে মাঝে কাজে সাহায্য করে দুই ছেলেমেয়েও।
কানহাইয়া জানিয়েছেন, প্রথম প্রথম খুব সমস্যা হয়েছে। তবে যখন কোনও রাস্তাই খোলা ছিল না, তখন এই শ্মশান তাঁদের আশ্রয় দিয়েছে। রোজগারের পথ দেখিয়েছে। এখন খুব আনন্দের সঙ্গে নিষ্ঠা ভরে এই দেহ সৎকারের কাজ করেন তিনি। ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চলছে পাশে পাশে। যেখানে সকলে অন্তিম মোক্ষের খোঁজে আসেন, সেখানে অন্তিম সাহারা মিলেছে কানহাইয়ার।