অযোধ্যার রাম মন্দিরের চূড়ায় উত্তোলিত হবে বিশালাকৃতির ধ্বজা। প্রস্তুতি প্রায় শেষ। এই ধ্বজা উত্তোলন করবেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উপস্থিত থাকবেন RSS প্রধান মোহন ভাগবতও। এই মেগা অনুষ্ঠানের দিকে নজর সকলেই। সুসজ্জিত অযোধ্যার রাম মন্দিরে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ভক্তরা। অযোধ্যা এবং কাশীর আচার্যরা এই অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে থাকবেন।
রাম মন্দিরের মাথায় উত্তোলিত হতে চলা ধ্বজাটি হবে ২২ ফুট লম্বা এবং ১১ ফুট চওড়া। শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের কোষাধ্যক্ষ গোবিন্দ দেব গিরি বলেন, 'বাল্মিকীর রামায়ণে উল্লিখিত সূর্য, ওম এবং কোবিদার গাছের প্রতীক সম্বলিত একটি গেরুয়া পতাকা ২৫ নভেম্বর রাম মন্দিরের ১৬১ ফুট উঁচু চূড়ার উপরে ৪২ ফুট উঁচু স্তম্ভের উপর উত্তোলন করা হবে।' ৩ কিমি দূর থেকেও ধ্বজা উড়তে দেখা যাবে।
রাম মন্দিরের শীর্ষে অবস্থিত এই পতাকার খুঁটি ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে ঘূর্ণায়মান বিয়ারিং বল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। পতাকাটি ৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে ঝড় সহ্য করতে পারে। ঝড়ের সময়ে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। পতাকার কাপড়ের গুণমান এবং ঝড় সহ্য করার ক্ষমতা ইতিমধ্যেই পরীক্ষা করা হয়েছে।
রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা উৎসবের মতোই জাঁকজমকপূর্ণ হতে চলেছে এই পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান। একইসঙ্গে ২৫ নভেম্বর সূচনা হবে রাম মন্দির নির্মাণ সমাপ্তির সূচনাও। শুভ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৫২ মিনিট থেকে ১২টা ৩৫ পর্যন্ত। ১২ জন বৈদিক আচার্য ও তাঁদের সহযোগীদের শঙ্খধ্বনীর মধ্যে নিশানা উত্তোলন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
রামমন্দির নির্মাণ সম্পূর্ণ হওয়ার পর এই প্রথমবার রাম সীতা বিবাহ উৎসব উদযাপিত হচ্ছে। ধ্বজারোহনের ৭দিন আগে থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে এই উৎসব। নেপালের জনকপুরী সহ দেশ বিদেশ থেকে প্রায় ৮ হাজার মানুষের আসবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
২৫ নভেম্বর এই ধ্বজারোহন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা সচিন তেন্ডুলকর থেকে শুরু করে অমিতাভ বচ্চনদের মতো ভিআইপিদের। মন্দির ট্রাস্ট জানিয়েছে, ২৬ নভেম্বর থেকে ফের দর্শন করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। নিরাপত্তার কারণে অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের মোবাইল ফোন আনতে নিষেধ করা হয়েছে।
২৫ নভেম্বর সকাল ১১টায় অযোধ্যায় পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। হনুমানগড়হি মন্দিরে পুজো করে ৩ ঘণ্টার অযোধ্যায় থাকবেন। তিনি রামলালা এবং রাম দরবার দর্শন করে আরতি করবেন।
অভিজিৎ মুহূর্তে ধ্বজারোহণ সম্পন্ন করার পরে প্রধানমন্ত্রী সপ্ত মন্দির পারকোটা, শেষাবতার মন্দির ইত্যাদি ঘুরে দেখবেন। তিনি মন্দিরে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীদের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন।
চন্দন রঙের পিলার, গোলাপী রঙের কলসির ডিজাইনে সেজে উঠেছে রাম মন্দির। এখনও পর্যন্ত রাম মন্দিরে ২১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে মন্দির নির্মাণ ও সংলগ্ন এলাকার উন্নয়নের জন্য। তৈরি করা হয়েছে এন্ট্রি প্লাজা, নতুন রাস্তা, ঘাটের সংস্কার করা হয়েছে।
ভক্তদের জন্য প্রায় ৫০০ কেজি লাড্ডু প্রসাদ হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে। অযোধ্যার ১২টি প্রধান মন্দির থেকে জমকালো শোভাযাত্রা বের করা হবে।