ভয়াবহ চিত্র গোটা দেশের। রবিবার দেশে দৈনিক আক্রান্ত ছিল সাড়ে তিন লক্ষ ছুঁইছুঁই। সোমবার সেই গণ্ডিও পেরিয়ে গেল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত ৩ লাখ ৫২ হাজার ৯৯১ জন।
সবচেয়ে আতঙ্ক ধরাচ্ছে দেশের মৃত্যু হার। গত ২৪ ঘণ্টায় মারণ ভাইরাস প্রাণ কেড়েছে ২ হাজার ৮১২ জনের। দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৯৫ হাজার ১২৩।
দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের আকাল অব্যাহত। রবিবারই হরিয়ানার রেওয়ারি হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে ৮ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ও অক্সিজেন পরিষেবা অব্যাহত রাখতে ৫৫১ টি অক্সিজেন জেনারেশন প্ল্যান্ট তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এই প্ল্যাট তৈরির সমস্ত খরচ বহন করবে PM Care Fund।
দিল্লির হাসপাতালগুলিতে এদিনও থিকথিক করছে ভিড়। রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে একটিও বেড খালি নেই। এদিকে সোমবার থেকে দিল্লির সরদার পটেল কোভিড কেয়ার সেন্টার ও রাধা স্বামী কোবিড কেয়ার সেন্টার খুলে দেওয়া হয়েছে।
দেশের সবচেয়ে করোনা আক্রান্ত পাঁচটি রাজ্য হল মহারাষ্ট্র, কেরল, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশ। এর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও রবিবার রেকর্ড সংক্রমণ হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ১৫,৮৮৯ জন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। মৃত ৫৭।
এর মাঝেই অশনি সংকেত মিলল মার্কিন গবেষণায়। জানা যাচ্ছে, মে মাসে ভারতে আরও ভয়ংকর চেহারা নিতে পারে করোনা (Covid 19)। ওই গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে করোনায় ভারতে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি হতে পারে। মার্কিন গবেষণার এই তথ্য রীতিমতো রাতের ঘুম কেড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ভারতে এপ্রিল থেকে অগাস্টের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে।
ওই গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, চলতি বছরের ১০ মে ভারতে একদিনে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছুঁতে পারে ৫ হাজার ৬০০। ১২ এপ্রিল থেকে ১ অগাস্টের মধ্যে দেশে মৃত্যু হতে পারে ৩ লাখ ২৯ হাজার জনের। জুলাইয়ের শেষে এই সংখ্যা বেড়ে হতে পারে ৬ লাখ ৬৫ হাজার।
IIT বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, দেশে ১১ থেকে ১৫ মে-র মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হতে পারে। ওই সময় দেশে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ছুঁতে পারে ৩৩-৩৫ লাখ।
সম্প্রতি ড্রোন থেকে তোলা রাজধানী দিল্লির ছবি গা শিউরে ওঠার মতো। সারি সারি জ্বলছে চিতা। একই চিত্র কবরস্থানগুলোর। মরদেহ সমাহিত করার জায়গা খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
গুজরাট, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে শ্মশানের বাইরে দেহ নিয়ে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। তবে দিল্লিতে পরিস্থিতি এমন যে, শ্মশানের বাইরে লাইনেও জায়গা পাচ্ছেন না অনেকে। বাধ্য হয়ে বাড়িতেই প্রিয়জনের মৃতদেহ রেখে দিতে হচ্ছে।