Adhir Chowdhury on President Rule in WB: বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভেঙে পড়েছে। এই অভিযোগ করে কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি লিখেছেন। তিনি বাংলায় রাষ্ট্রপতির শাসনের দাবি জানিয়েছেন। বীরভূম জেলায় বোমা হামলায় উপপঞ্চায়েত প্রধান নিহত হওয়ার এবং তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে এই দাবি করেছেন কংগ্রেস নেতা।
অধীরের দাবি
শুধুমাত্র গত এক মাসে "পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি" এবং ২৬টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ করে চৌধুরী রাষ্ট্রপতি কোবিন্দকে বীরভূমে ভারতের সংবিধানের ৩৫৫ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করার অনুরোধ করেছেন।
“সোমবার, ২১ মার্চ ২০২২। বীরভূম জেলার বগটুই গ্রামে শাসক দলের দুটি গ্রুপের মধ্যে হিংসাত্মক লড়াই হয়েছিল। উপপ্রধান ভাদু শেখকে হত্যা করা হয় এবং প্রতিশোধ হিসেবে এলাকার বাড়িঘরে হামলা ও আগুন দেওয়া হয়। যার ফলে ১২ জন মহিলা ও শিশু নিহত হয়। নিহতরা সবাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের, "অধীর লিখেছেন।
আরও পড়ুন: হুগলিতে বাড়ির টালির চালা খুলে গুলি করে খুনের চেষ্টা, ভাড়া করা হয়েছিল 'সুপারি কিলার'
“পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক যে গত মাসেই পশ্চিমবঙ্গে ২৬টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ভোটের সময় হিংসা এবং ভোট-পরবর্তী হিংসায় অনেকের প্রাণ নিয়েছে। গোটা রাজ্য ভয় ও হিংসার কবলে রয়েছে,” বলেন তিনি।
“আমি গতকাল অর্থাৎ ২২ মার্চ সংসদে এই গুরুতর বিষয়টি উত্থাপন করেছি। রাজ্যে সাংবিধানিক ভেঙে পড়ার বিষয়ে দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে, আমি আপনাকে সংবিধানের ৩৫৫ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করার জন্য অনুরোধ করছি। যাতে পশ্চিমবঙ্গের সরকার সংবিধানের বিধান অনুসারে পরিচালিত হয়।"
বীরভূমে ভয়াবহ ঘটনা
সোমবার বীরভূমে একটি বোমার আঘাতে উপপ্রধান ভাদু শেখ নিহত হন। স্থানীয়দের মতে, প্রতিশোধ হিসেবে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সোনু শেখের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে পুরো একটি পরিবার পুড়ে মারা যায়। অগ্নিসংযোগে অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। প্রতিশোধের ভয়ে বেশ কয়েকজনকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।
এই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, বীরভূমের রামপুরহাটের এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। একাধিক মহিলা, শিশু এবং সদ্য বিবাহিত দুজনের প্রাণ গিয়েছে। আদালত তাই এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহন করে শুনানি করেছে।
ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ
ঘটনাস্থলকে সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে মুড়ে ফেলতে হবে। উপযুক্ত মেমরি যুক্ত ক্যামেরা লাগাতে হবে যা, ২৪ ঘণ্টা ক্রমাগত রেকর্ড করবে। এটা চলবে ততদিন, যতদিন না পরবর্তী নির্দেশ আসছে। জেলা আদালতের বিচারকের উপস্থিতিতে প্রতিটি কোনায় কোনায় ক্যামেরা বসাতে হবে।
CFSL টিম ঘটনাস্থলে এসে নমুনা সংগ্রহ করবে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুর দু'টোয় এই আদালতে কেস ডায়েরি পেশ করতে হবে রাজ্যকে। কোনও তথ্য বা নথি যেন নষ্ট না হয়, সেটাও দেখতে হবে। সাক্ষী ও গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং পূর্ব বর্ধমানের জেলা আদালতের বিচারকের তত্ত্বাবধানে সাক্ষী এবং গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে রাজ্য। কোনও ময়নাতদন্ত বাকি থাকলে সেটার ভিডিওগ্রাফি করতে হবে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুর ২টোয় এই মামলার পরবর্তী শুনানি।