সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির লেফটেন্যান্ট গভর্নর, একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত হয় নীতি আয়োগের পরিচালনা পরিষদ। শনিবার ছিল নীতি আয়োগের সেই পরিচালনা পরিষদের বৈঠক, যার সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেই বৈঠকে গরহাজির থাকলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই প্রধানমন্ত্রী বার্তা দিলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য এক সঙ্গে কাজ করলেই হবে উন্নয়ন, এগিয়ে যাবে দেশ।
বৈঠকের আগে বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল কৃষি, সামগ্রিক পরিকাঠামো, উৎপাদন ও মানবসম্পদ উন্নয়নের বিষয়গুলি নিয়ে এবার আলোচনা করা হবে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন যে, করোনাকালে আমরা দেখেছি যে কীভাবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার কী ভাবে একসঙ্গে কাজ করেছে। এটি বিশ্বের কাছে দেশের ইতিবাচক চিত্র তুলে ধরেছে। অনেক রাজ্য দ্রুত গতিতে উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। কেন্দ্র-রাজ্যগুলির একসাথে কাজ করা উচিত, উন্নয়নই হোক প্রধান অ্যাজেন্ডা।
আত্মনির্ভর ভারত বিশ্বের মধ্যে প্রথম হওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে, এমন দাবিই করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগগুলির প্রতি মুখ্যমন্ত্রীদের গুরুত্ব দিতে বলেন মোদী। তোলেন কেন্দ্রীয় বাজেটের প্রসঙ্গ। রাজ্যগুলি কর্পোরেট করের সুবিধা যাতে নেয়, সেই আহ্বান জানান। কেন্দ্রের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রাজ্যগুলিকে বাজেট তৈরির প্রস্তাব দেন মোদী। দেশে রফতানি বাড়ানোর বিষয়টির উপরও জোড় দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিনেরবৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অনুপস্থিত ছিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। এর আগেও নীতি আয়োগের বৈঠক এড়াতে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে। নীতি আয়োগ নিয়ে অতীতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, নীতি আয়োগের এই বৈঠক করে কোনও লাভ নেই। এর পরিচালনা পরিষদের কোনও আর্থিক ক্ষমতা নেই এবং তারা রাজ্যের পরিকল্পনাগুলিকে কোনওদিক থেকেই সমর্থন করতে পারে না।
এরাজ্যে যত ভোটের দিন এগিয়ে আসছে কেন্দ্র রাজ্য বিরোধিতা প্রকট হয়ে উঠছে। মোদীর সরকারি অনুষ্ঠান এড়াচ্ছেন মমতা। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে না রাজ্যবাসী, এই নিয়ে গলা ফাটাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এবার নীতি আয়োগের বৈঠকে কেন্দ্র-রাজ্য় যৌথভাবে কাজ করার কথা বলে সেই বিতর্ক কি আরও উস্কে দিলেন প্রধানমন্ত্রী?