জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে আবহাওয়ার খামখেয়ালির শিকার হচ্ছে গোটা বিশ্বই। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা থেকেই রেহাই পাচ্ছে না ভারতও। যার নির্যাস, সবচেয়ে দুর্বিসহ তাপপ্রবাহের শিকার হয়েছে উত্তর ভারত। রেহাই নেই শীতেও। চরম শৈত্যপ্রবাহের সম্মুখীন হতে চলেছে সেই উত্তর ভারতই। সৌজন্যে 'লা লিনা'। বস্তুত, দুর্বল হচ্ছে এল নিনো। তাই এ বার ঋতুচক্রের উপর প্রভাব বাড়ছে লা নিনার।
আরও পড়ুন: রাজ্যে চলবে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি, শীত কবে? জানাল হাওয়া অফিস
তীব্র ঠান্ডার সতর্কতা
IMD-এর সাম্প্রতিক পূর্বাভাস বলছে, লা লিনার জেরে তীব্র ঠান্ডা হাওয়া বইবে উত্তর ভারত জুড়ে। তাপমাত্রা শীতকালের স্বাভাবিকের থেকেও ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে নামবে। ইতিমধ্যেই অপ্রত্যাশিত বৃষ্টির শিকার হয়েছে উত্তর ভারতের একটা বড় অংশ। এল নিনো সক্রিয় হলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ে আর তা দুর্বল হলে বিপরীত প্রতিক্রিয়ায় বাড়তে থাকে শীতলতা। তাকেই বলে লা নিনা।
আরও পড়ুন: রাজ্য থেকে অবশেষে বর্ষা বিদায়, মন এখন শীতের অপেক্ষায়
জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে বিশ্বের আবহাওয়ার ধরন বদলেছে। প্রভাব পড়েছে ভারতেও। যার জেরে দেরিতে বিদায় নিয়েছে বর্ষা। ২০১০ সাল থেকেই যদি দেখা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেরিতে বিদায় নেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
নয়া পূর্বাভাসে কী সতর্কবার্তা রয়েছে?
ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, লা নিনা-র জেরে তাপমাত্রার পারদ অনেকটাই নামবে উত্তর ভারত জুড়ে। লা নিনার প্রভাব ছাড়াও সুমেরুর কারা সাগরে সি-আইস গলার জেরে তৈরি হওয়া সমস্যারও সম্মুখীন হবে ভারত।
জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে সমুদ্রের বরফ গলার খেসারত দিতে হবে উত্তর-পূর্ব এশিয়াকে। তা হল তাপমাত্রার পতন। আর্থ সায়েন্স মন্ত্রকের প্রাক্তন সচিব এম রাজীবন বলছেন, 'বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে তাপমাত্রা বাড়ার জেরে ঘূর্ণিঝড় বাড়ছে। এ বছর আবার লা নিনার প্রভাব থাকায় প্রশান্ত মহাসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তের অবশিষ্টাংশ বঙ্গোপসাগরে ঢুকবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ফের ঘূর্ণাবর্ত তৈরির অনুকূল পরিস্থিতি হবে।'
লা নিনা কী?
স্প্যানিশ শব্দ লা নিনার অর্থ হল ছোট বালিকা। লা নিনাকে অনেক সময় El Viejo,anti-El Nino বলা হয়ে থাকে। সাধারণত এল নিনোর বিপরীত অবস্থায় হল লা নিনা। লা নিনার ফলে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল বরাবর দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে স্বাভাবিকের থেকে শীতল সমুদ্র স্রোতের প্রবাহ লক্ষ্য করা যায়।