'চায়ের আড্ডায়' প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। প্রযুক্তি থেকে শুরু করে মানব উন্নয়ন, বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। AI, স্বাস্থ্য ও জলবায়ুসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন মোদী-বিল গেটস। দু'জনের মধ্যে স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে প্রযুক্তি এবং জলবায়ুর মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'আমাদের দেশে যখন একটি শিশু জন্ম নেয়, সেও প্রথমে 'আই' (মা) বলে... আবার একই সঙ্গে 'AI' (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)ও বলে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি স্বাস্থ্য, কৃষি এবং শিক্ষা নিয়ে কাজ করেছি। গ্রামে গ্রামে দুই লক্ষ আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির তৈরি করেছি। আমি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করেছি। প্রযুক্তির দৌলতে বড় হাসপাতালে যেটা হচ্ছে, ছোট আরোগ্য মন্দিরেও তাই হচ্ছে। আমি শিশুদের সর্বোচ্চ মানের শিক্ষা দিতে চাই এবং প্রযুক্তি দিয়ে শিক্ষকের ঘাটতি পূরণ করতে চাই। শিশুদের ভিজ্যুয়াল, গল্প বলার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে চাই। এই ধরনের কনটেন্ট তৈরির বিষয়ে কাজ করতে হবে।' তিনি আরও বলেন, 'আমি এখানে কৃষিতেও বড় বিপ্লব আনার চেষ্টা করছি, খালি মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন চাই।'
'প্রথম এবং দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবে আমরা পিছিয়ে ছিলাম...'
নরেন্দ্র মোদী বিল গেটসকে বলেন, 2023 সালের G20 শীর্ষ সম্মেলনেও AI-এর ব্যবহার করা হয়েছিল। কাসি তামিল সঙ্গম অনুষ্ঠানের সময় তাঁর হিন্দি বক্তৃতা কীভাবে তামিল ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল সেটারও উল্লেখ করেন। এর পাশাপাশি কীভাবে নমো অ্যাপে AI ব্যবহার করা হয়েছিল তার উল্লেখও করেন মোদী।
এদিনের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, 'ঐতিহাসিকভাবে, প্রথম এবং দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের সময়, আমরা পিছিয়ে ছিলাম। কারণ সেই সময়ে একটি উপনিবেশ ছিলাম। এখন, আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছি। ডিজিটাল প্রযুক্তিই তার মূলে। আমার বিশ্বাস ভারত এটা করে দেখাবে। আর তাতে AI-এর গুরুত্ব অপরিসীম।'
মহিলাদের নিয়ে কী বললেন প্রধানমন্ত্রী?
প্রধানমন্ত্রী বিল গেটসকে বলেন, 'আমি যখন বিশ্বে ডিজিটাল বিভাজনের কথা শুনতাম, তখন একটাই কথা বলতাম। সেটা হল, আমি আমার দেশে এমন কিছু হতে দেব না। আজ গ্রামে গ্রামে ডিজিটাল পরিষেবা পৌঁছে যাচ্ছে। আমার অভিজ্ঞতা বলে, এ দেশের নারীরা খুব দ্রুত নতুন জিনিস গ্রহণ করেন। তাঁদের কাজে লাগতে পারে, এমন কী কী প্রযুক্তি তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, তাই নিয়ে আমরা ভাবনাচিন্তা করছি। ভারতের গ্রামের ৩ কোটি নারীকে আমরা লাখপতি দিদি বানাতে চাই। আমি মানুষের মানসিকতায় পরিবর্তন করতে চাই।'
প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেন, আমি প্রযুক্তিকে মহিলাদের হাতে তুলে দিতে চাই। গ্রামের মানুষ যেন এটা উপলব্ধি করেন যে, প্রযুক্তি প্রয়োগে গ্রামের হাল বদলে যাচ্ছে। আজকাল যখন আমি ড্রোন দিদিদের সঙ্গে কথা বলি, তাঁরা বলেন, 'আমি সাইকেল চালাতে জানি না, আর আজ আমি ড্রোন চালাচ্ছি এবং পাইলট হয়েছি।'