এই মাত্র কয়েকমাসের আগে কথা, রাজ্যে তখন চলছিল বিধানসভা ভোট। সঙ্গে জোরকদমে চলছিল নির্বাচনী প্রচারও। ভোটের সভাসমিতি-মিছিলে ভিড় করছিলেন মানুষ। অন্যদিকে প্রায় একইসময় দেশের বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হয় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। সেই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ এড়াতে রাজনৈতিক সভাসমিতি ও মিছিল বন্ধ করার দাবি উঠতে থাকে বিভিন্নমহল থেকে। তবে তাতে যে খুব একটা কাজের কাজ হয়েছিল তেমনটা বলা যায় না। আর তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠলেই এক দল দুষেছে অপর দলকে। অবশেষে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে শেষ ৩ দফার প্রচারে কিছুটা বিধিনিষেধ জারি করে নির্বাচন কমিশন।
আটকানো হয়েছিল পুরসভা অভিযান
কিন্তু ভোট মেটার পরেই রাতারাতি বদলে যায় পরিস্থিতি। শপথ গ্রহণের দিনই নবান্নে জরুরি বৈঠক করে সমস্ত রাজনৈতিক জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশ রীতিমতো কার্যকর করতে দেখা যায় রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে। এক্ষেত্রে ভুয়ো ভ্যাকসিনের প্রতিবাদে বিজেপির কলকাতা পুরসভা অভিযানের কথা অবশ্যই উল্লেখ্য। করোনাকালে পুরসভা অভিযানের অনুমতি না দিয়ে পুলিশের তরফে সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হয়, জমায়েত করলে মহামারী আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও তারপরেও পুরসভা অভিযানে নামে বিজেপি। কিন্তু মাঝপথেই সেই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। গ্রেফতারও করা হয় কয়েকজনকে।
প্রচারে বাধা পুলিশের
শুধু তাই নয়, বুধবার ভবানীপুরে বিজেপি (BJP) প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালের মিছিলেও বাধা দেয় পুলিশ। সেখানেও পরোক্ষে চলে আসে কোভিড প্রসঙ্গে। সাংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ জানায়, কেউ করোনা বিধি ভাঙলে গ্রেফতার করা হবে। যদিও পুলিশের তরফে এদিন এও জানানো হয়, বিজেপি প্রাচারের জন্য যে রুটের অনুমতি নিয়েছিল সেই পথে না গিয়ে অন্যদিকে যাওয়ার কারণেই মিছিলে বাধা দেওয়া হয়েছে।
ত্রিপুরায় সভাসমিতিতে নিষেধাজ্ঞা
এদিকে আবার কার্যত একই ছবি ত্রিপুরাতেও (Tripura)। করোনা বিধি ভঙ্গের অভিযোগে মহামারী আইনে গত মাসে ত্রিপুরায় গ্রেফতার করা হয় দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত, সুদীপ রাহা সহ তৃণমূলের বেশকয়েকজনকে। আর সেখানেই শেষ নয়, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ত্রিপুরায় আগামী নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত সমস্ত রকমের সভাসমিতি ও জমায়েতের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সেই রাজ্যের সরকার। আর রাজ্য সরকারের সেই সিদ্ধান্তে সবুজ সংকেত দিয়েছে হাইকোর্টও। যার জেরে ত্রিপুরায় রাজনৈতিক কর্মসূচি স্থগিত করতে হয়েছে তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee)।
তবে রাজনৈতিকমহলের কেউ কেউ অবশ্য মনে করছেন করোনা মোকাবিলা প্রধান উদ্দেশ্য হলেও, এই ধরণের নির্দেশের নেপথ্যে হয়ত অন্য পরিকল্পনাও থাকতে পারে দুই রাজ্যের সরকার তথা শাসকদল। এক্ষেত্রে কি বিরোধীদের প্যাঁচে ফেলতে বা তাদের আন্দোলনকে ঠেকাতেও করোনা বিধি (Covid Protocols) ও সেই সংক্রান্ত আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে? প্রশ্ন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
আরও পড়ুন - ফোনের ওপারে অধীর: 'তুমি নাকি তৃণমূল যাচ্ছ?' মইনুল: 'হ্যাঁ দাদা যাচ্ছি...'