করোনা পরিস্থিতির জেরে এই বছর টান পড়ল না মাহেশের ৬২৫ বছরের রথে (Mahesh Rath Yatra 2021)। তবে নিয়ম মেনে ভক্তিভরে হচ্ছে জগন্নাথদেব (Jagannath Rath Yatra), সুভদ্রা ও বলরামের পুজো।
আজ থেকে ৬২৫ বছর আগে সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী স্বামী ধ্রুবানন্দ মাহেশের এই রথযাত্রার প্রবর্তন করেন। তারপর থেকে তা আজও চলে আসছে। প্রতিবছর এই রথযাত্রা উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, রাজ্যের বাইরে থেকেও লক্ষ লক্ষ মানুষ ছুটে আসেন প্রভু শ্রী জগন্নাথদেবের আশীর্বাদ নিতে।
শোনা যায় এই উৎসবকে কেন্দ্র করে শ্রীচৈতন্যদেব, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ঠাকুর রামকৃষ্ণদেব, মা সারদামণি থেকে বহু মনীষীর পদধূলি পড়েছিল এই মাহেশে।
শুধু রথযাত্রাই নয়, একে কেন্দ্র করে মাহেশে বসে হয় একমাসব্যাপী বিশাল মেলা। দোকানিরা হরেকরকম পসরা নিয়ে এই মেলায় হাজির হন। প্রতিদিনই প্রচুর মানুষ এসে জমায়েত হন মেলা প্রাঙ্গণে।
কিন্তু গত দু'বছর ধরে সারা পৃথিবী জুড়ে করোনার অতিমারীর জেরে মাহেশের রথযাত্রার ছবিটা বদলে গিয়েছে। নেই বিগত বছরগুলির মতো কোনও ব্যাস্ততা। স্নানপিঁড়ির মাঠে বসেনি কোনও মেলার স্টল।
মন্দির ট্রাস্টের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী জানাচ্ছেন, কোভিড বিধি মেনেই হচ্ছে পুজো। ভক্তদেরও মন্দিরে প্রবেশ করতে হবে করোনা বিধি মেনেই।
বিকাল সাড়ে তিনটেয় জগন্নাথদেব, সুভদ্রা ও বলরামকে মন্দিরের চাতাল থেকে মূল মন্দিরের পাশেই অস্থায়ী মাসির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে।
সেখানেই ৯ দিন অবস্থান করবেন তাঁরা। বেলা চারটের সময় জগন্নাথদেবের প্রতিভূ হিসেবে নারায়ণ শিলাকে রথের চারিদিকে তিনবার প্রদক্ষিণ করিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে মন্দির থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মূল মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে।
এরপর নয়দিন সেখানেই চলবে নারায়ণশিলার পূজার্চনা। উল্টোরথের দিন পুনরায় নারায়ণ শিলাকে যথাযথ মর্যাদায় মাহেশের মূল মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হবে।
তবে ভক্তদের প্রার্থনা, এবার না হলেও সামনেরবারে যেন সুস্থ হয়ে ওঠে পৃথিবী। যেন আবার টান পড়ে রথের রশিতে।