Madhyamik 2023 Physical Science Last Minute Suggestion: আর মাত্র কয়েকটা দিন, জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা- বোর্ডের পরীক্ষা, মাধ্যমিক (Madhyamik Examination 2023)। মাঝে হাতে গোনা মাত্র কয়েকটা দিন। স্বভাবতই একটা টেনশন কাজ করে। উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য চাই বিষয়ের প্রতি ভালোবাসা, সঠিক অনুশীলন ও যথাযথ প্রস্তুতি। মাধ্যমিকের ভৌতবিজ্ঞান অন্যতম একটি বিষয় যেটি নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে হাজারো দুশ্চিন্তা, এই বুঝি কঠিন প্রশ্ন হয়ে গেল! কিন্তু সঠিক অনুশীলন মহৌষধি। কিন্তু সঠিক অনুশীলন আর কৌশলগত প্রয়োগে ৮০% নম্বর পাওয়া সম্ভব। এমনটাই মত ভোগপুর কেনারাম মেমোরিয়াল হাইস্কুলের ভৌতবিজ্ঞানের শিক্ষিক্ষা মণিমালা বেরার। কীভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষায় ভাল নম্বর তোলা যাবে, পরীক্ষার শেষ মুহূর্তে কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে, পরীক্ষার্থীদের বিস্তারিত জানালেন তিনি।
ভৌত বিজ্ঞানের পাঠ্য পুস্তকের পাঠ্যসূচির তিনটি অংশ সাধারণ অংশ, পদার্থবিদ্যা অংশ এবং রসায়নবিদ্যার অংশ। লিখিত পরীক্ষার মোট ৯০ নম্বরের মধ্যে ৩৯ নম্বর থাকে রসায়নবিদ্যার অংশ থেকে। অষ্টম অধ্যায়টির পুরোটাই হল রসায়নবিদ্যার অংশ। এখানে রয়েছে পর্যায় সারণী ও মৌলের পর্যাবৃত্ততা, আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন, তড়িৎ প্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া, পরীক্ষাগারে ও রসায়ন শিল্পে অজৈব রসায়ন, ধাতুবিদ্যা ও জৈব রসায়ন। শেষ কয়েকটা দিনের প্রস্তুতির জন্য কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া যায় যেগুলি কাজে লাগতে পারে। ৮০% নম্বর পাওয়ার জন্য সারাবছরের খুঁটিয়ে পাঠ্য বই পড়াই যথেষ্ট বাকি ২০% জন্য অনুশীলনটি একটু নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন। রসায়ন অংশে ৩৯ নম্বর এর পুরোটাই পাওয়া সম্ভব। প্রথমে পর্যায় সারণির কথা বলি তাহলে বলব পর্যায় সারণীটি হাতের তালুর মত মোটামুটি হিসেব-নিকেশ করেই আয়ত্ত করা যায়। এই কয়েকটা দিনে পুরোটা খুঁটিয়ে পড়া সম্ভব নয়। তাই ব়্যাপিড ফায়ারের মতো প্রশ্ন উত্তর বলতে হবে সামনে পিরিয়ডিক টেবিলটা রেখে। আটকে গেলে টেবিলটি দেখেই উত্তরটা খুঁজতে হবে।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে বাংলায় কীভাবে লেটার? ৬ উপায় জানালেন বিশিষ্ট শিক্ষক
যেগুলির উপর জোর দেওয়া প্রয়োজন সেগুলি হল বিভিন্ন সূত্র (যেমন- ত্রয়ী সূত্র, অষ্টক সূত্র, আধুনিক পর্যায় সূত্র, পর্যায়ে সূত্র।) শ্রেণী বরাবর মৌল গুলির নাম, প্রতিটি শ্রেণীর মৌল গুলির বিশেষ নামকরণ (যেমন - ক্ষার ধাতু, ক্ষারীয় মৃত্তিকা ধাতু, সন্ধিগত মৌল মুদ্রা ধাতু, হ্যালজেন, চালকোজেন, নিকটোজেন, নিষ্ক্রিয় মৌল বা নোবেল গ্যাস।) কোন মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক দেওয়া থাকলে মৌলটির পর্যায় সারণিতে অবস্থান নির্ণয়, প্রকৃতি নির্ণয়। দুটি মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক দেওয়া থাকলে তাদের মধ্যে যৌগ গঠন হলে, যৌগটির বন্ধন এর প্রকৃতি কী রকম হবে এবং যৌগটির সংকেত কি হবে। যেমন, AওB দুটি মৌল তাদের পরমাণু ১৭ ও ১২ এদের দ্বারা গঠিত যৌগটির মধ্যেকার বন্ধনের প্রকৃতি ও যৌগটি সংকেত লেখো।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে ইংরেজিতে ভাল নম্বর কীভাবে? ৭ টিপস দিলেন বিশিষ্ট শিক্ষক
পর্যায়গত ধর্ম গুলি কিভাবে শ্রেণী ও পর্যায় বরাবর পরিবর্তন হয়। কয়েকটি মৌলের নাম দেওয়া থাকলে সেগুলি পর্যায়গত ধর্ম (যেমন- তড়িৎ ঋণাত্মকতা, পারমাণবিক ব্যাসার্ধ, আয়নন বিভব, ইত্যাদি) অনুযায়ী সাজাও। হাইড্রোজেনের অবস্থান বিতর্ক, মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণির সফলতা ও ত্রুটি। পরমাণু ক্রমাঙ্ক মৌলের স্বকীয় ধর্ম - ব্যাখ্যা কর। কোন ধর্ম গুলি পর্যায়গত নয়। বিরল মৃত্তিকা মৌল কারা? আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধনে কি পার্থক্য? লুইস ডট গঠন ও দ্বৈতসূত্র। আয়নীয় যৌগের একক অনুর অস্তিত্ব নেই। তড়িৎ প্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে ধাতব ও পরিবাহী ও ইলেকট্রনীয় পরিবাহী। তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ, জলের তড়িৎ বিশ্লেষণ, কপার তড়িৎদ্বার ব্যবহার করে কপার সালফেট দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণ, তড়িৎ বিশ্লেষণের প্রয়োগ, অ্যালুমিনিয়ামের আকরিক থেকে অ্যালুমিনিয়াম ধাতু নিষ্কাশন। তড়িৎ লেপন, অ্যানোড মাড, গোল্ড ও সিলভার প্লেটিং এর ক্ষেত্রে ক্যাথোড, অ্যানোড ও তড়িৎ বিশ্লেষ্য রূপে কী ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে ভূগোলে লেটার পেতে ৯ টিপস
অজৈব রসায়নে সমস্ত প্রস্তুতির রাসায়নিক বিক্রিয়া, মূলনীতি, শুষ্ক করন, সংগ্রহ। অ্যামোনিয়ার ঝরনা পরীক্ষা। তরল অ্যামোনিয়া, লাইকার অ্যামোনিয়া, হেবার পদ্ধতি, ধাতব লবনের সঙ্গে অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণের রাসায়নিক বিক্রিয়া। অসওয়াল্ড পদ্ধতি, স্পর্শ পদ্ধতি, নেসলার বিকারক। হাইড্রোজেন সালফাইড এর জারন ধর্ম। হাইড্রোজেন সালফাইড এর সাহায্যে ধাতবমূলক শনাক্তকরণ। ধাতুর আকরিকের নাম, সংকর ধাতু (পিতল, কাঁসা ডুরালুমিন, গান মেটাল) খনিজ ও আকরিক, থার্মিট পদ্ধতি, মরচে, সমুদ্রগামী জাহাজ ও জলের নিচে পাইপলাইনে মরচে, জৈব ও অজৈব যৌগের পার্থক্য, নামকরণ, কার্যকরী মূলক, সমাবয়বতা, সমগনীয় শ্রেণী, জৈব যৌগে ধীরগতিতে রাসায়নিক বিক্রিয়া হয় কেন? অ্যালকেন, অ্যালকিন, অ্যালকাইন - এদের রাসায়নিক বিক্রিয়া, সিএনজি, এলপিজি। পলিথিন, টেফ্লন, পিভিসি। ডিনেচার স্পিরিট, রেকটিফাইড স্পিরিট। এস্টারিফিকেশন।
এগুলিতে জোর তো দিতেই হবে। তাছাড়া মক টেস্ট দিতে হবে বারবার। তাহলে দুর্বল জায়গা গুলি সহজে চিহ্নিত করে সংশোধনের সুযোগ থাকবে। পাঁচ থেকে ছটি সালের question solve করতে হবে এবং প্রশ্ন বিচিত্রা বা টেস্ট পেপার এর পাঁচ থেকে ছয়টি পেজ সলভ করলে ৯৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া সম্ভব। আর বাকি৫শতাংশের লড়াইটা একটু কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। যখন কোনও একটা ৯০ নম্বরের কোশ্চেনের অথবা সহ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর করতে পারছো, তখন জানবে মাধ্যমিক ২০২৩ এর ভৌত বিজ্ঞানে তোমার প্রাপ্ত নম্বর ১০০ হতে চলেছে। অনুশীলনে লেখার বিকল্প নেই তাই শুধু পড়া নয় প্রচুর পরিমাণে লিখতে হবে। তাহলে ভুলের সংশোধন হবে। তাই সারা বছরের পড়ার সময়ের তুলনায় এই সময় অনুশীলনের সময় বেশ খানিকটা বাড়াতে হবে।