তাঁরা একসময় একসঙ্গে পর্দা কাঁপিয়েছেন। একসঙ্গে বহু সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করেছেন। সেই থেকেই বন্ধুত্বের সূত্রপাত। সেই তাঁরাই এবার লোকসভা নির্বাচনে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছেন। যুদ্ধের ময়দান হুগলি লোকসভা কেন্দ্র। একজন তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য জন, বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তপ্ত রাজনীতির আবহে দুই তারকা প্রার্থীর মন্তব্যে ধরা পড়ল সৌজন্য। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক লড়াইকে সরিয়ে রেখে একে অপরের বন্ধুত্বের সম্পর্কের কথাই তুলে ধরলেন রচনা-লকেট।
লকেট প্রসঙ্গে রচনা
বুধবার প্রতিদ্বন্দ্বী লকেটকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে স্মৃতির সরণীতে হাঁটলেন রচনা। বললেন, 'কখনও যদি রাজনীতি বাদ দিয়ে লকেট আর আমি বসি, তাহলে কত কথা যে থাকবে, বলতে গেলে দিন কাভার হয়ে যাবে। কথা শেষ হবে না। প্রচুর স্মৃতি। সবই ছবি রিলেটেড। আমি সেই স্মৃতি নিয়ে লকেটকে রাখতে চাই।'
রচনা প্রসঙ্গে লকেট
রচনার এহেন মন্তব্য শুনে 'বন্ধু'র প্রতি সৌজন্যের বার্তা দিয়েছেন লকেটও। তিনি বলেছেন, 'দু'জনের মধ্যে সম্পর্ক খুবই ভাল। ১০ বছর হল ওই কাজটা ছেড়ে এসেছি। ওর কাছে টাটকা রয়েছে, কারণ এখনও লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের মধ্যে আছে ও। রাজনীতিতে ব্যক্তিগত সম্পর্ক যেন আঁচ না পড়ে। আমাদের সম্পর্ক যেন ভাল থাকে।'
বস্তুত, এই প্রথমবার ভোটের ময়দানে শামিল হয়েছেন একদা বাংলা ছবির সুপারহিট নায়িকা রচনা। বর্তমানে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো 'দিদি নং ১'-এর জনপ্রিয় সঞ্চালক রচনা। এই শোয়ের হাত ধরে ঘরে ঘরে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। তাঁর এই শোয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনপ্রিয় রচনাকে এবার হুগলি থেকে প্রার্থী করেছে জোড়াফুল শিবির। জোরকদমে প্রচার সারছেন রচনা। হুগলিতে প্রচারের মধ্যেই রচনাকে বলতে শোনা যায়, যদি তিনি জয়ী হন, তা হলে সবার আগে হুগলির দিদিদের 'দিদি নং ১'-এ ডাকবেন। রচনার এহেন প্রতিশ্রুতি নিয়ে সরব হন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী তথা বন্ধু লকেট চট্টোপাধ্যায়। বলেছেন,'মানুষ কাজ চায়, সুরক্ষা চায়, শিল্প চায়, দিদি নং ১ যেতে চায় না। টিভিতে মুখ দেখিয়ে কী হবে! মানুষ দুর্নীতি চায় না।' এরপরই বন্ধু রচনাকে লকেটের তোপ, 'এরকম প্রার্থী কেন করল, যার কোনও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই।' তাঁর সংযোজন, 'হুগলির মানুষ শিক্ষিত। বোকা নয়। কোনটা রাজনীতি, কোনটা অভিনয় হুগলির মানুষ বিচার করবে।' সম্প্রতি ভোটপ্রচার পর্বে রচনার নানা মন্তব্য ভাইরালও হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত একে অপরের বিরুদ্ধে তেমন ঝাঁঝালো আক্রমণ শানাতে দেখা যায়নি রচনা-লকেটকে। তবে সাংসদ লকেটের ভূমিকার নানা সমালোচনা শোনা গিয়েছে রচনার গলায়।