বিজেপি (BJP) করার 'অপরাধ'এ পানিহাটি (Panihati)-তে এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ উঠল। অভিযুক্ত তৃণমূল (TMC)। শাসকদল সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পানিহাটি (Panihati) পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কালীতলা সারদাপল্লী বাসিন্দা শুভাশিস দাসকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার নিজের বাড়িতে সরস্বতী পুজো হচ্ছিল।বাড়িতেই বাজানো হচ্ছিল সাউন্ড বক্স।
আর তখন হঠাৎ কয়েকজন বাড়িতে এসে ঢুকে প্রথমে ওই সাউন্ড বক্স বন্ধ করতে বলে। কিন্তু তার কারণ জানতে চেয়ে প্রতিবাদ করেন শুভাশিস। এরপরই তাকে তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বেধড়ক মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ।
এ সময় ছেলেকে বাঁচাতে এসে আক্রান্ত হন শুভাশিসের স্ত্রী ও বাবা। শুভাশিসের বুকে-পিঠে ঘুষি মারা হয় বলে অভিযোগ। ঘুসি মেরে চোখ ফুলিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর ঘোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শুভাশিসের বাবা পরনের গেঞ্জি ছিঁড়ে দেওয়া হয়।
শুভাশিস ও তার বাবাকে ঘোলা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, তারা বিজেপি করে, আর সেই কারণেই তাদের ওপর তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওই হামলা চালিয়েছে। ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পরে। শুভাশিসের বাড়িতে চলে আসে বিজেপির অন্য কর্মীরা।
শুভাশিস দাসের দাবি, আমরা গত ৬০-৭০ বছর ধরে আছি। এরকম ঘটনা কোনও দিন ঘটেনি। আমি ওদের প্রধান লক্ষ্য ছিলাম। আমাকে পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে মারধর শুরু করে এবং বলতে থাকে যে বিজেপি করলেই লাশ ফেলে দেবো। আমার বাড়ি, গাড়ি চালিয়ে দেবে। আমার হাত থেকে মোবাইলটা কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিল। আমি তাদের বারণ করা সত্ত্বেও উল্টে সব জ্বালিয়ে দেবার হুমকি দেয়।
তাঁর বাড়ির পাশেই তৃণমূল কর্মী মুকুন্দ রায় বলে এক ব্যক্তি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলেও দাবি শুভাশিসের। তাঁর মতে, আমি বিজেপি করি ঠিক কথা কিন্তু সবার সঙ্গে আমার খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে। এরকম একটা ঘটনা যে ঘটবে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। এর আগে সিপিআইএম সরকার থাকলেও সে সময় এরকম ধরনের ঘটনা ঘটেনি।
শুভাশিসের মা জানান, আমার ছেলে বিজেপি করে। যদিও আমার স্বামী কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। যারা আমার পরিবারের ওপরে হামলা চালিয়েছে তারা তৃণমূলের সদস্য। তারা এসে হুমকি দেয় যে বিজেপি করা চলবেনা। বিজেপি করলেই মেরে খুন করে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, যে যার পছন্দ মতো রাজনৈতিক দল করবে। কিন্তু এখানে কেন দ্বন্দ্ব থাকবে? বাড়ির ছোট ছোট ছেলেমেয়েদেরও ধরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
শুভাশিসের পরিবারের তরফে ওঠা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন পানিহাটি তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক নির্মল ঘোষ। তিনি জানান, বিজেপি ভাবছে তারা ক্ষমতায় এসে গিয়েছে। আর সেই কারণে তাদের মাথাটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তাঁর দাবি, সরস্বতী পুজো উপলক্ষে শুভাশিসে রবাড়িতে জমায়েত দেখে ওই বাড়িতে কয়েকজন লোক যায়। এরপরই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়।
তিনি আরও দাবি করেন, ওই বাড়ির লোকেদের সঙ্গে সেখানে কোনও মারপিট হয়নি বা বাড়ির কোনও বৃদ্ধকে মারধর করা হয়নি। বরং শুভাশিসের বাড়ির সদস্যরা বাইরের লোক জড়ো করে শান্ত এলাকাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছিল। এখানে তৃণমূলের কোনও কর্মী কাউকে মারধর করেনি।