২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোট করে লড়েছিল কংগ্রেস। লাভের লাভ তেমন কিছু হয়নি। ২০২১ সালেও সেই জোট রাজনীতিতেই ভরসা রাখতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। আর এই আবহে মালদা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা দক্ষিণ মালদার কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীর কথা নতুন করে শোরগোল তুলে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এই বর্ষীয়াণ নেতা দাবি করেছেন ভোটের পর পরিস্থিতি তেমন হলে তৃণমূলকে সমর্থন করতে পারে কংগ্রেস।
গনি খান চৌধুরীর ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরী রাজনীতির ময়দানে তাঁর ডাক নাম 'ডালু' হিসাবেই পরিচিত। ডালুবাবু বলেছেন, ‘ভোটের পর যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে কংগ্রেসকে হয় তৃণমূল নয় বিজেপিকে সমর্থন করতে হবে তাহলে কংগ্রেস অবশ্যই তৃণমূলকে সমর্থন করবে। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত।’ তাঁর দাবি, বামফ্রন্ট বুঝতে পেরেছে তারা বিধানসভায় ৮-১০টার বেশি আসন পাবে না। তাই আব্বাস সিদ্দিকীর হাত ধরেছে। কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীর এই মন্তব্য ঘিরে মালদা জেলার সিপিএম নেতাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই তারা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য কমিটির কাছে নালিশ জানিয়েছেন।এই মন্তব্যের পর বহু সিপিএম নেতা এই জেলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে না যাওয়ার পথেই সওয়াল করতে শুরু করেছেন।
ক্ষোভের আঁচ আলিমুদ্দিনে পৌছঁতেই আগামী বৃহস্পতিবারই মালদায় আসছেন রাজ্য নেতৃত্ব। সেদিন নির্বাচন নিয়ে সিপিএমের জেলা কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা।প্রসঙ্গত তৃণমূলকে হাঁটাতে এবং বিজেপিকে রুখতে কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকীর আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট বেঁধেছে সিপিএম। যদিও কংগ্রেস আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে এই জোট নিয়ে খুশি নয়।ইতিমধ্যেই তা জানিয়ে প্রকাশ্যেই বিরোধিতায় সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এবারে আব্বাস সিদ্দিকী কে নিয়ে সুর বদলালেন দক্ষিণ মালদার সাংসদ তথা মালদা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী। মালদা দক্ষিণের সাংসদ বলেন, ‘সিপিএম আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে জোট করেছে। কংগ্রেস করেনি।’
'ডালু' জানান,' আব্বাস সিদ্দিকীর দল ধর্মের নামে চলে। আমরা জানিনা ওরা কারা, ওরা নতুন এসেছে, আমার পছন্দ হয়নি। ওদের ধর্ম নিয়ে কথা বলছেন সিদ্দিকী, যা অন্যায়, তাই ব্যক্তিগতভাবে আমার পছন্দ হয়নি। আমাদের রাজ্যে অনেক সন্ন্যাসী জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তারা কেউই চাননি জাতপাতের রাজনীতি। এই রাজনীতি ক্ষণস্থায়ী হতে পারে, দীর্ঘস্থায়ী নয়।' প্রসঙ্গত মালদা ও মুর্শিদাবাদে এরাজ্যে কংগ্রেস অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী। এই দুই জায়গায় প্রার্থী দেওয়া নিয়েই আব্বাস সিদ্দিকীর দলের সঙ্গে মতভেদ রয়েছে হাত শিবিরের। সেই জায়গা থেকেই এবার মালদার বেতাজ বাদশা আবু হাসেম খান চৌধুরী মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে নতুন গুঞ্জনের জন্ম দিল।