Advertisement

Bengal BJP Rout: বছর ঘুরতেই ৩৮% ভোট কমে ১৩%! দায় কার? বঙ্গ বিজেপিতে গৃহদাহ

West Bengal BJP: গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট কমে এখন তলানিতে। ৩৮ শতাংশের ভোট ১০৮ পুরসভা ভোটে ঠেকেছে ১৩ শতাংশে। হাতছাড়া হয়েছে দ্বিতীয়স্থানও। উঠে এসেছে বামেরা।

রাহুল সিনহা, অমিতাভ চক্রবর্তী, সুকান্ত মজুমদার ও দিলীপ ঘোষ।
শুভঙ্কর মিত্র
  • কলকাতা,
  • 07 Mar 2022,
  • अपडेटेड 1:11 PM IST
  • বঙ্গ বিজেপিতে গৃহযুদ্ধ।
  • দলের ব্যর্থতার দায় কার?
  • পারস্পরিক দোষারোপ নেতৃত্বের।

কলকাতা পুরভোটের পর রাজ্যের ১০৮ পুরসভার নির্বাচনেও ভরাডুবি বিজেপির। গত লোকসভা নির্বাচনে বামেদের সরিয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠেছিল তারা। সেই বিজেপিই এখন প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে চলে গিয়েছে তৃতীয়স্থানে। গেরুয়া শিবির পেয়েছে ১৩.৪২ শতাংশ ভোট। আর বামেরা ১৩.৫৭%। কেন দলের এই হাল? পুরভোটে বাম-তৃণমূল আঁতাঁতের অভিযোগ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দলের বিদ্রোহী শিবিরের বক্তব্য, বিধানসভা ভোটে হারের পর ময়নাতদন্তই হয়নি। পুরভোটের পর অমিতাভ, সুকান্ত ও মালব্যকে নিশানা করে আবারও মুখ খুলেছেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তা আরও বেআব্রু করে দিলেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। দলের বৈঠকে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন,'কাজের লোক নয়। কাছের লোককে জায়গা দেওয়া হয়েছে কমিটিতে।' তার পাল্টা দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। বঙ্গ বিজেপির অন্দরে এখন কার্যত গৃহদাহ!

একুশের বিধানসভা ভোটে ২০০ আসন জেতার লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছিল রাজ্য বিজেপি। তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি তারা। মোটে ৭৭ আসন এসেছে ঝুলিতে। মন্দের ভাল, এই প্রথম ঔপচারিকভাবে বাংলার বিরোধী দল হয়েছে তারা। বিরোধী দলনেতা হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।তবে অবস্থা ক্রমে শোচনীয় হয়েছে। কলকাতা পুরভোটে ভোট শতাংশের নিরিখে বামেরা দ্বিতীয় হয়েছে। রাজ্যের ১০৮ পুরসভাতেও তথৈবচ। ভোটের হারে বিজেপিকে তৃতীয় স্থান পাঠিয়ে দিয়েছে বামেরা। কেন এমন হাল? বিজেপির একাংশের দাবি, বিধানসভা ভোটের ফল নিয়ে পর্যালোচনাই করা হল না। সাংগঠনিক ব্যর্থতা থাকলে তার দায় কেন নেবেন না সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী? যে কথাটা বলছেন জয়প্রকাশ মজুমদাররা। জয়প্রকাশের কথায়,'ভোটে হারের পর কারণ খুঁজে দেখা হল না। তার উপরে রাজ্য সংগঠনে আনকোরা মুখ। চতুর্থ শ্রেণির দল নিয়ে কি মেসির দলের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া যায়! হারের দায় নিয়ে কে পদ ছাড়বেন? কোচ ভার্চুয়াল চক্রবর্তী এবং টেকনিক্যাল ডিরেক্টর অমিত মালব্য পদত্যাগ করবেন?'

Advertisement

ঘটনা হল, ভোটে ভরাডুবি হলেও দায় স্বীকারে নারাজ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। হারের কারণ পর্যালোচনাতেও তাঁদের অনীহা। পুরভোটের বালুরঘাটে নিজের বুথেই 'হেরো' বিজেপির রাজ্য সভাপতি ভোট-সন্ত্রাসের অভিযোগকে ঢাল করেছেন। তিনি জানিয়ে দেন,'যে নির্বাচনকে আমরা মানি না তার হার-জিতের দায় নির্ধারণ করব কী করে?' দলের চিন্তন বৈঠকে আবার তৃণমূল-সিপিএম আঁতাঁতের অভিযোগ করেছেন সুকান্ত। যার বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিজেপির অন্দরেই।  

ভোটলুঠ, সিপিএম-তৃণমূল যোগসাজশের অভিযোগকে প্রাধান্য দিয়ে যে আত্মমন্থন হবে না তা দলীয় বৈঠক এবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। জয়প্রকাশ, রীতেশ তিওয়ারিরা যে দাবি করছিলেন তা শোনা গেল লকেটের মুখেও। হুগলির সাংসদ বলেন,'মঞ্চে বলবেন এক, অথচ কাজের লোককে বাদ দিয়ে কাছের লোককে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেবেন।' অর্থাৎ সাম্প্রতিক রদবদলে যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি বলে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়,'যোগত্যা নয়, কোটা দেখে বিজেপির জেলা সভাপতি করা হয়েছে। পুরভোটে সন্ত্রাস হয়েছে ঠিকই, কিন্তু যেখানে হয়নি সেখানে কেন তৃতীয়স্থানে বিজেপি? পুরনোদের বাদ দেওয়াই অন্যতম কারণ।'

বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, একেবারে ভীমরুলের চাকে ঢিল মেরেছেন লকেট। পক্ষান্তরে কাঠগড়ায় তুলেছে অমিতাভ চক্রবর্তীকে। তাতে দলের অস্বস্তি আরও বেড়েছে।দলীয় সাংসদকেই আক্রমণ করে বসেছেন প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়,'আত্ম সমালোচনা করতে গেলে সবার আগে নিজের সমালোচনা করা উচিত। যাঁরা ময়দানে ছিলেন না তাঁরা কী করে আত্মসমালোচনা করবেন? লড়াইটা যাঁরা করেছে তাঁরা জানেন কত কঠিন।'

তার পাল্টা লকেট বলেন,'যা বলার দলের মধ্যে বলেছি। আগামীতেও তাই বলব। দিলীপদা দলের সহ-সভাপতি। উনি জানেন আমি কোথায় কোন দায়িত্বে ছিলাম।' বর্তমান রাজ্য সভাপতি আবার বিষয়টিকে হালকা করতে চেয়েছেন। তাঁর কথায়,'দলের ভিতরে কী আলোচনা হয়েছে সেটা প্রকাশ্যে কথা বলব না। লকেট চট্টোপাধ্যায় যা বলেছেন সব নথিবদ্ধ করা হয়েছে।'

বিজেপির বিদ্রোহী শিবিরের মতে, পশ্চিমবঙ্গে পুরসভা বা পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা চিরকালই হয়েছে। বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার বিরুদ্ধে লড়াই করে আজ এখানে। ফলে শুধু ভোট সন্ত্রাসের সাফাই দিয়ে সংগঠন ও নেতৃত্বের দুর্বলতাকে ঢাকা যাবে না। এমন চলতে থাকলে লোকসভা ভোটের আগে সামনের বছর পঞ্চায়েত ভোটেও একই পরিণতি অপেক্ষা করে রয়েছে।তেমনটা হলে ২০২৪ সালে ১৮ আসন ধরে রাখা তো দূর, দুই অঙ্কে পৌঁছনোই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠবে বঙ্গ বিজেপির।        

আরও পড়ুন- 'যারা মাঠে নেই তারা এসব বোঝে না', লকেটকে কটাক্ষ দিলীপের

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement