এবার মৃত্যুর শংসাপত্রেও নিজের ছবি লাগান! বৃহস্পতিবার কারও নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)-কে এভাবেই বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (WB CM Mamata Banerjee)। কোভিড টিকার শংসাপত্র (Covid Vaccine Certificate)-এ প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকে। আর তা নিয়ে তিনি কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি।
প্রবল আক্রমণ
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (WB CM Mamata Banerjee) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)-র প্রবল সমালোচনা করেন। তিনি কার নাম নাম নিয়ে বলেন, আপনি দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্য নষ্ট করতে পারেন না। আমি আপনাকে পছন্দ করি না। তা-ও আমাকে আপনার ছবি নিয়ে ঘুরতে হবে! মৃত্যুর শংসাপত্রেও আপনার ছবি লাগান! টু মাচ।
সতর্কবার্তা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (WB CM Mamata Banerjee) বলেন, আপনি এখন ক্ষমতায় আছেন। কাল না-ও থাকতে পারেন। চেয়ার সবার জন্য স্থানী নয়। তবে দেশ, সংবিধান স্থায়ী। মানুষের ওপর জোর করতে পারেন না। আমি আপনার সমর্থক নই। তারপরও কেন আপনার ছবি ব্যবহার করব? আমাকে তা-ও তা নিয়ে ঘুরতে হবে কেন?
দুয়ারে সরকার
একুশের বিধানসভা ভোটের আগে সারা বাংলা জুড়ে ঝড় তুলেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের 'দুয়ারে সরকার' কর্মসূচি। এক ছাতের তলায় রাজ্য সরকারের সব প্রকল্পের সুযোগ পেয়েছিল রাজ্যবাসী। ভোটবাক্সে এর সুফল পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী (WB CM Mamata Banerjee)।
তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ফের একবার দুয়ারে সরকার নিয়ে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আগামী ১৬ অগাস্ট থেকে রাজ্যে ফের শুরু হচ্ছে 'দুয়ারে সরকার' কর্মসূচি। এবার এই শিবির চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। নবান্নে এ কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (WB CM Mamata Banerjee)।
প্রকল্পের ফর্ম
রাজ্য সরকারের নানান প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পেতে গন্তব্য এখন একটাই— ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির শিবির। ওই সব শিবির ছাড়া অন্য কোথাও থেকে কোনও প্রকল্পের ফর্ম বা আবেদনপত্র বিলি বা সংগ্রহ করা যাবে না। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে একথা স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী (WB CM Mamata Banerjee)। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ফর্মও একমাত্র দুয়ারে সরকার' থেকেই সংগ্রহ করতে হবে।
কবে থেকে শুরু হচ্ছে?
রাজ্যে দুই পর্বে চলবে দুয়ারে কর্মসূচি। আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী (WB CM Mamata Banerjee)। দ্বিতীয় পর্বের ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar) কর্মসূচি শুরু হচ্ছে ১৬ অগাস্ট থেকে। চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তারমধ্যে ৮ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর আবেদনের কাগজপত্র পরীক্ষা করা হবে। আর সাধারণ মানুষকে কার্ড দেওয়া হবে ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। দুয়ারে সরকারে এবার ১৭ হাজারের বেশি ক্যাম্প খোলা হচ্ছে।
প্রয়োজনে সেই সংখ্যাটা আরও বাড়ানো হবে বলেই জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোট ১৮টি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যাবে এবার দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar) কর্মসূচি থেকে। যার মধ্যে নতুন সংযোজন ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ (Lakshmir Bhandar) এবং ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’ (Student Credit Card)।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার
নির্বাচনী ইস্তেহারে 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার' (Lakshmir Bhandar) প্রকল্পের কথা বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মতো জুলাই মাসেই এই প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের ১.৬ কোটি পরিবারের মহিলারা পাবেন মাসিক হাতখরচ। জেনারেল ক্যাটেগরির মহিলারা পাবেন মাসিক ৫০০ টাকা এবং সংরক্ষিত ক্যাটেগরির মহিলারা পাবে মাসিক ১০০০ টাকা।
সেই প্রকল্পের নির্দেশিকা ইতিমধ্যে জারি করেছে রাজ্যের শিশু সুরক্ষা ও পরিবার কল্যাণ দফতর। গত ৩০ জুলাই নির্দেশিকা জারি হয়েছে। তবে প্রকল্পের ফর্ম কোথা থেকে মিলবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হচ্ছিল। নবান্নে এদিন তা দূর করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যা।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুয়ারে সরকার শিবির ছাড়া অন্য কোথাও থেকে কোনও প্রকল্পের ফর্ম বা আবেদনপত্র বিলি বা সংগ্রহ করা যাবে না। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, রাজনৈতিক প্রভাব থেকে দুয়ারে সরকার কর্মসূচিকে আড়াল করতেই এমন পদক্ষেপ।
কারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাবেন?
শিশু সুরক্ষা ও পরিবার কল্যাণ দফতরের জারি করা নির্দেশিকাতে জানানো হয়েছে যে যাঁরা ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের জন্য নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন সেই সব মহিলারা লক্ষীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাবেন। তবে যদি আবেদনকারীর স্বাস্থ্যসাথী বা আধার কার্ড না থাকে তাঁকে প্রথমে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার সুযোগ দেওয়া হবে।
এর জন্যে সেই মহিলার বয়স ২৫ থেকে ৬০ এর মধ্যে হতে হবে। যাঁরা পেনশনভোগী, তাঁরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না বলেই জানানো হয়েছে। যোগ্য মহিলা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা জমা পড়বে। এ ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার লিঙ্ক থাকতে হবে।
কারা পাবেন না
তবে সরকারি কর্মচারী বা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কেন্দ্রের ও রাজ্যের, কোনও স্বশাসিত সংস্থা, সরকারি নিয়ন্ত্রিত কোনও সংস্থা, পঞ্চায়েত, মিউনিসিপালিটি, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, সরকারি স্কুল গুলির ক্ষেত্রে বা যদি কেউ নিয়মিত বেতন বা পেনশন পান তাঁরা এই সুবিধা পাবেন না।
সরকারি আধিকারিকরা আবেদন গুলোকে যাচাই করবে। গ্রামাঞ্চলে ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার এবং শহরাঞ্চলে সাব ডিভিশনাল অফিসাররা আবেদনপত্রগুলিকে খতিয়ে দেখবেন।