আপনি কী কখনও কাউকে বলতে শুনেছেন, যে খুব বেশি জল খাওয়া ভালো নয়? তা শরীরের ক্ষতি করে। হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন। জল বেশি করে খেতে যেমন বলেন চিকিৎসকরা, তেমনই বলেন তেমনিই অতিরিক্ত বেশি জল খাওয়া কিন্তু অত্যন্ত খারাপ এবং আপনি মারাত্মক রকম অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।
একটা স্টাডি অনুসারে এক ব্যক্তি কত গ্লাস দিনে জল খেতে পারে বা খাওয়া উচিত তা নিয়ে গবেষণা করা হয়। তাতে বহু বিজ্ঞানী এটা নিয়ে আলোচনা করো একমত হতে পারেননি। যারা সারাদিনে ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল পান করেন তারা অনুমান এবং আন্দাজ এর উপর ভিত্তি করে এ ধরনের কথা বলে থাকেন।
এক ব্যক্তি কত গ্লাস জল খেতে পারবে? বা খাওয়া উচিত তার পরিষ্কার কোনও হিসেব নেই। পরিবেশ পরিস্থিতি এবং শরীরের কন্ডিশনের উপর ভিত্তি করে এটি বদলে যায়। এমনকী আয়ু, লিঙ্গ এবং তার ফিটনেস এর উপর নির্ভর করে জল পান এর পরিমাণ।
স্বাভাবিকভাবেই সিমলায় বসে আপনার যা জল তেষ্টা পাবে এবং জলের প্রয়োজনীয়তা হবে শরীরে রাজস্থানের মরুভূমিতে বসে নিশ্চয়ই সেটুকু জলে আপনার কাজ হবে না। ফলে রাজস্থানে যদি আপনি দিনে ৮ লিটার জল খান, তাহলে সিমলায় গিয়ে আপনার সেটি দু লিটারে পরিণত হতে পারে।
তার মানে এই নয় যে আপনি কোথাও অসুস্থ হয়ে পড়বেন। যেখানে যেমন ঘাম বেরিয়ে যাবে আপনাকে পূরণ করতে ততটা জল খেতে হবে। যেখানে ঘাম কম হয়, সেখানে শরীরকে রিহাইড্রেট করতে জল খেতে হয়। কিন্তু প্রত্যেকটি পরিস্থিতি আলাদা।
জলের ঘাটতি এবং আধিক্য দুটোই ক্ষতিকর জল কম হওয়া এবং বেশি হয়ে যাওয়া দুটোই শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। জলের কমে যেমন শরীর ডিহাইড্রেট হয়ে যায়, তেমনই অনেক বেশি জল খেলে ওভার হাইড্রেট হয়ে যাওয়ার সমস্যা তৈরি হয়।
ক্ষেত্রে জল কম হয়ে গেলে শরীরের মাংসপেশি টাইট হয়ে যায় এবং সেখানে বেশি জল খেলে রক্ত তরল হতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞদের মত হল জল ততটাই খাওয়া উচিত যতটাতে চেষ্টা মিটবে। জল না খেলে জোর চেষ্টা না পেলে জোর করে জল খাওয়ার কোনও মানে নেই।
অনেক বেশি জল খেলে মাথা ঘুরতে পারে এবং ব্যক্তি অস্বাভাবিক এবং অস্বস্তি অনুভব করতে পারে। অনেকবার এমন হয়েছে যে হার্টবিট বেড়ে যায়। এর মানে হল যে আপনি অতিরিক্ত জল নিতে পারছেন না।
এর মানে এই নয় জল না খাওয়া উচিত নয়। অ্যালকোহল বাদ দিয়ে আমরা যে কোন তরল যদি নেই. তাতে কিছু না কিছু জলের মাত্রা ঠিকই থাকে। তাই তরল খেলেই হল, এমনকী দুধও।
জল তেষ্টা পাওয়ার মানে হল শরীরে জলের ঘাটতি তৈরি হয়েছে এবং সেটি পূরণ করতে হবে। তখন আপনি জল খান এবং যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার তেষ্টা মিটে যাবে জল খাওয়া বন্ধ করে দিন। আবার তেষ্টার জন্য অপেক্ষা করুন।
যখন শরীরের জল প্রয়োজন তখনই খান। ঘড়ি দেখে প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর বা দু ঘন্টা অন্তর নিয়ম করে জল খাওয়ার পেছনে কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। শরীরে জলের পরিমাণ ঠিক রাখা দরকার কিন্তু বেশি নয়।
শরীরে জলের ঘাটতি কীভাবে বুঝবেন? তা আপনি ইউরিন এর রং দেখেই বুঝতে পারবেন। আপনার ইউরিন যদি হলদে হতে শুরু করে, তাহলে বুঝবেন জল দরকার। তখনই জল খেয়ে সেটি পূরণ করতে পারেন। ঠিক করার জন্য অনেক বেশি জল খেয়ে নেওয়া ঠিক নয়।