বর্ষায় এবার তেমন ইলিশ ভাগ্যে জোটেনি। তাই মন খারাপ বাঙালির। ইলিশের জন্য চলছে হাপিত্যেশ। পুষ্টিবিদরা আবার বলেন এর স্বাদ যেমন ভাল পুষ্টিগুণও নাকি তেমনি উত্তম। তবে ইলিশের এই অকালে কিন্তু গুণাগুণের দিকে কম যায় না চিংড়িও।
চিংড়ির নাম শুনলেই অনেকেই বলেন এ তো মাছ নয়, জলের পোকা! আবার কেউ কেউ বলেন, চিংড়ি খাওয়া হয় শুধুই স্বাদের জন্য, এই খাদ্যের কোন উপকারিতা নেই। কিন্তু এটা একেবারেই ভুল ধারণা।
চিংড়িমাছকে পোকা বললেও এই বিশেষ সুখাদ্যের উপকারিতাগুলি কিন্তু অস্বীকার করার উপায় নেই। চিংড়িতে থাকে ফ্যাট, প্রোটিন এবং মিনারেলসের একটি সুষম অনুপাত যা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ভাল।
চিংড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সেলেনিয়াম যা শরীরে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে। অর্থাৎ ক্যানসার প্রতিরোধে চিংড়ি অত্যন্ত কার্যকরী। চিংড়ি প্রতিদিনের সেলেনিয়ামের চাহিদার ৫০ শতাংশ পূরণ করতে পারে।
চিংড়ি অস্ট্রাক্যানথিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস ছাড়াও ওমেগা-৬ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস। তাই এই খাবার হৃৎপিণ্ড ভাল রাখতে সাহায্য করে। ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং লিভারের পক্ষেও ভাল।
চিংড়ি হল প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়ামের উৎস। এছাড়া চিংড়িতে ১২ ফসফরাস ও ১১ শতাংশ নায়াসিন রয়েছে।
ভিটামিন-ই প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় চিংড়িতে। তাই পরিমিত পরিমাণ চিংড়ি নিয়মিত খেলে ত্বক ভাল থাকে এবং ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ে।
চিংড়িতে রয়েছে ভিটামিন বি-১২। এই বিশেষ ভিটামিনটি স্মৃতিশক্তি প্রখর রাখতে সাহায্য করে এবং হৃৎপিণ্ড ভাল থাকে।
চিংড়ি হল প্রচুর পরিমাণ প্রোটিনের উৎস আর প্রোটিন শরীরের একটি প্রয়োজনীয় উপকরণ। শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ প্রোটিন না থাকলে যে কোন আঘাত বা ক্ষত সেরে উঠতে দেরি হয়।
অন্যান্য অনেক মাছ এবং মাংসের তুলনায় চিংড়িতে ক্যালোরির পরিমাণ অনেকটা কম। তাই যাঁরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাঁরা চিংড়ি বেশি করে খেলেও ওজন বাড়ার আশঙ্কা নেই। চিংড়িতে কোনও কার্বসও থাকে না। চিংড়িতে থাকা প্রায় ৯০ শতাংশ ক্যালরি প্রোটিন থেকে আসে। বাকিগুলি ফ্যাট থেকে আসে।
ডায়াবেটিসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যও চিংড়ি খেতে পারেন। কারণ চিংড়িতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম দেহকে টাইপ-২ ডায়বেটিসের হাত থেকে রক্ষা করে।
আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদার প্রায় ৪২ শতাংশ চিংড়ি পূরণ করতে সক্ষম। শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিন থাকলে ত্বক, চুল, নখ ইত্যাদি সুরক্ষিত থাকে।
চিংড়িতে রয়েছে নিয়াসিন নামক অত্যন্ত উপকারী উপাদান। যা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি, কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনকে এনার্জিতে রুপান্তরিত করে। ফলে শরীরে চর্বি জমার কোন অভিপ্রায় নেই ও ওজন থাকে সঠিক।
নিয়মিত চিংড়ি মাছ খেলে হাড়ের ক্ষয় রোধ হয় এবং হাড় মজবুত থাকে। কারন চিংড়ি মাছে রয়েছে ফসফরাস।
চিংড়ি আমাদের দেহের বিষন্নতা দূর করে।