প্রেমের সম্পর্কের সূচনার ক্ষেত্রে একটি কথা খুব প্রচলিত আছে যে, 'মেয়েটি হেসেছে মানেই ফেঁসেছে ...' । কিন্তু না, আপনি যদি মেয়েদের মনের কথা জানতে এই সূত্র অনুসরণ করতে যান তাহলে আপনিই ফেঁসে যাবেন। ভুলে যাবেন না যে আরও একটি কথাও প্রচলিত আছে যে 'স্ত্রীয়াশ্চরিত্রম দেবা না জানন্তি কুতো মনুষ্যা', অর্থাৎ, মেয়েদের মনের হদিশ ঈশ্বরই পান না তো কী করে মানুষ পাবে?
তাই প্রেমের বীজ বপন করতে হলে বুঝেশুনে পা ফেলুন। আপনাকে একটি মেয়ের মনের তল পেতে হলে ভাল করে তাঁকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে, তাঁর হাঁটাচলা, আপনার সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁর অঙ্গভঙ্গী সমস্তই খেয়াল করতে হবে আপনাকে, তবেই হয়তো পেতে পারেন আপনার প্রিয়তমার মনের হদিশ।
যখন দেখবেন যাকে পছন্দ করছেন তিনি কোনও আপত্তি না করেই আপনার সঙ্গে ঘুরতে কিংবা কফিশপে যেতে রাজি হয়ে যাচ্ছেন তখন বুঝে নিতে হবে- তিনি আপনাকে মনে মনে পছন্দ করেন। আর যদি যে সেজেগুজে আসে তবে তো বুঝে নেওয়া আরও সহজ।
সেই মেয়েটি যখন আপনার সঙ্গে একান্তে কথা বলবে তখন খেয়াল করবেন মাঝেমধ্যে সেই আঙুল দিয়ে আনমনে নিজের চুল নিয়ে খেলা করছে। তখন বুঝেতে হবে আপনার প্রতি তার আকর্ষণ আছে। তবে তা প্রকাশ করতে পারছে না। তখন দেরি না করে আপনি তাকে ভালোবাসার কথাটি বলে ফেলুন।
বলা হয়- ‘চোখ মনের কথা বলে’। যখন কোনও মেয়ের চোখে চোখ রেখে কথা বলবেন তখন খেয়াল করবেন মেয়েটির চোখের পলক পড়ছে না। সে অপকল দৃষ্টিতে আপনার দিকে তাকিয়ে আপনার কথা শুনছে। তখন বুঝবেন তার হৃদয়ে আপনার জন্য আসন তৈরি হচ্ছে।
যাকে ভালোবাসেন সে আপনাকে বাসে কিনা তা পরখ করার জন্য কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে যাওয়ার অফার করুন। যদি রাজি হয় তখন বুঝবেন- সেও আপনাকে পছন্দ করে বলেই নিরিবিলি আপনার সঙ্গ পেতে রাজি হয়েছে।
আপনাকে যদি কোনও মেয়ে পছন্দ করেন তাহলে তিনি আপনাকে স্পর্শ করারও অজুহাত খুঁজবেন। অর্থাৎ আপনার সঙ্গে গল্প করার সময় বা কথা বলার সময় আপনার হাত ধরবেন। আর এই ঘটনা ঘটলেই বুঝবেন, মেয়েটি আপনাকে একটু বিশেষভাবেই পছন্দ করছেন।
আপনার কোনও কথায় কেউ হাসলো না, কিন্তু ওই মেয়েটি হেসেছে। তখন বুঝতে হবে- আপনার প্রতি তার স্পেশাল গুরুত্ব আছে। যেটাকে প্রেমের লক্ষণ ধরে নিতে পারেন।
সবচেয়ে উত্তম উপায় হচ্ছে, মেয়েটির সামনে অন্য মেয়ের প্রশংসা করুন। তখন যদি সে রেগেমেগে মুখ ভার করে রাখে বুঝে নেবেন সে আপনার প্রতি দুর্বল।
কলেজ কিংবা অফিস শেষে কোনও সুন্দরী রমণী যদি বলে- একটু বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেবে? তখন একশো ভাগ নিশ্চিত থাকুন যে, সে আপনাকে মনেপ্রাণে ভালোবাসে।
যদি এমন হয় যে আপনি যাঁকে পছন্দ করছেন তিনি তাঁর পরিবার বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কথা বলার সময় আপনার প্রসঙ্গ টানছেন তাহলে বুঝবেন তিনি আপনার প্রতি দুর্বল। বন্ধুবান্ধবের দলের মধ্যে যদি আপনিও থাকেন তাহলে তো সহজেই এই ইশারা বুঝতে পারবেন, আর তা না হলে মেয়েটির বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ জমিয়ে তাঁর মনের ভাব বোঝার চেষ্টা করুন।
আপনি হয়তো এমন কিছু রসিকতা করছেন যা বেশ প্রাপ্তবয়স্ক রসিকতা, সেটাও যদি আপনার পছন্দের মেয়েটি মন দিয়ে শোনেন বা হেসে জবাব দেন তাহলে বুঝবেন তিনি আপনার কথা শুনতে চাইছেন।
যদি মেয়েটি আপনার সঙ্গে কথা বলার অজুহাত খোঁজে, হোয়াটসঅ্যাপে জোকস বা ইমোজি পাঠায়, তাহলে বুঝতে হবে যে তিনি সম্ভবত আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাইছে। এর আরও একটি অর্থ হল যে মেয়েটি আপনার মনোযোগ চায়। সুতরাং আর পিছিয়ে না থেকে তাঁর সঙ্গে আলাপ করা শুরু করুন, দেখবেন আস্তে আস্তে সম্পর্ক এগোবে।
‘প্যায়ার কো চাহে ভুল ভী যায়ে তারিখে না ভুলায়ে...' এটি ফিল্মের গান হলেও কথাটা কিন্তু ঠিক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েরা তারিখগুলো ভুলে যায় না। বিশেষ করে তাঁর পছন্দের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কিত তারিখগুলো তো মনে রাখারই চেষ্টা করে। আর এর জন্য তাঁদের কোনও ডায়েরিও বজায় রাখতে হয় না, এটা আসলে মেয়েদের লুকানো প্রতিভা ।
পছন্দের কোনও মেয়ের মধ্যে যদি উপরের এই লক্ষণগুলো দেখতে পান তখন আর দেরি না করে বলে ফেলুন মনের কথাটি। তবে হ্যাঁ, এ সবই মন বোঝার সামান্য কিছু উপায়। তবে কারোর মন পেতে চাইলে তাঁর সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করার থেকে আর ভালো কোনও উপায় তো হতেই পারে না।