ক্যালশিয়াম শরীরের জন্য একটি অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান। হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য তা দরকার। হাড় সুস্থ রাখতে আপনার প্রধানত ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি প্রয়োজন। সাধারণ দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারের মাধ্যমেই শরীরে প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয়। তবে বহু মানুষই ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট। মানে দুধ পেটে সয় না। অনেকে আবার ভিগান হয়েছেন বলে দুধ খান না। তাহলে শরীর কীভাবে পাবে ক্যালশিয়াম?
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ে ক্ষয় দেখা দেয়। পাকা চুল কালো করা গেলেও হাড়ের সমস্যা রোধ করা যায় না। বিশেষ করে মহিলাদের বয়স বাড়লে দেখা দেয় অস্টিয়োপরেসিস। তা রোধ করার জন্য দরকার ক্যালশিয়ামযুক্ত খাবার। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রাপ্তবয়স্কদের দিনে ৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। এ জন্য বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন সুষম খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। দুধ, পনির এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবারে থাকে ক্যালশিয়াম। কিন্তু ক্যালশিয়ামের অন্যতম উৎস দুধ খেতে চান না অনেকে। তাঁদের জন্য দেওয়া হল বিকল্পের সন্ধান-
দুগ্ধজাত খাবার- দুগ্ধজাত খাবারে থাকে ক্যালশিয়াম। নতুন করে এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই। দুধ, দই এবং পনিরে থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম। যা হাড়ের গঠন ও মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক কাপ দুধ এবং এক কাপ দই ক্যালসিয়ামের চমৎকার উৎস যা প্রতিদিন খেতে পারেন।
কলা- ম্যাগনেসিয়ামের দারুণ উৎস কলা। ম্যাগনেসিয়াম হাড় এবং দাঁতের গঠন গঠনের জন্য একটি অপরিহার্য ভিটামিন। হাড় মজবুত করতে প্রতিদিন কলা খেতে হবে। প্রতিদিন একটি কলা দুর্বল হাড়ের সমস্যায় কার্যকর।
আরও পড়ুন- বিয়েতে কন্যাকে কখনও এই ৪ জিনিস উপহার নয়, সংসারে ঘোর অমঙ্গল
পালং শাক- ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ সবুজ শাক-সবজি দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে। এক কাপ সেদ্ধ পালং শাক শরীরের দৈনিক ক্যালসিয়ামের চাহিদার ২৫ শতাংশ পর্যন্ত সরবরাহ করতে পারে। ফাইবার সমৃদ্ধ এই পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং আয়রন। যার ফলে হাড় পুষ্টি পায়।
বাদাম জাতীয় খাবার- আমন্ড, আখরোট ও চিনা বাদামে থাকে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস। যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়কে মজবুত রাখতে চাইলে আমন্ড, আখরোট ও বাদাম খান। বলে রাখি, এক কাপ আমন্ডে থাকে ২৪৬ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম।
কমলা লেবু- জানলে অবাক হবেন, তাজা কমলা লেবুর রস শরীরকে ক্যালশিয়াম এবং ভিটামিন ডি-র যোগান দেয়। যা হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। নিয়মিত কমলালেবুর রস খেলে অস্টিয়োপরেসিস ঝুঁকিও কমানো যায়।
টফু- টফু বিদেশি খাবার। তবে এখন বাঙালির রান্নাঘরে সেঁধিয়ে গিয়েছে। টফুতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম পাওয়া যায়। আধ কাপ টফুতে ৮০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ক্যালশিয়াম মেলে।
ব্রকোলি- ব্রকোলিতে থাকে ক্যালশিয়াম। ব্রকোলির ক্যালশিয়াম খুব সহজেই শরীরে শোষিত হয়। ফলে এই ব্রকোলি অত্যন্ত উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও কে, ফাইবার এবং আয়রন।
আরও পড়ুন- মুখের স্বাদ থাকবে, আবার কোলেস্টেরলেও কমবে, ঘরেই বানান এই বীজের পরোটা
চিয়া বীজ- ক্যালশিয়াম ভরপুর থাকে চিয়া বীজে। স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ফাইবারও থাকে। টক দইয়ে ভিজিয়ে খান চিয়া বীজ।
সয়াবিন- সয়াবিন ক্যালশিয়ামের ভালো উৎস। এতে ক্যালশিয়াম ছাড়াও থাকে ফাইবার, আয়রন, পটাশিয়াম ও ফোলেট। অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে সয়াবিন খুব কার্যকর।
ডুমুর- পটাশিয়াম সমৃদ্ধ ডুমুর। এই পটাশিয়াম শরীরকে ক্যালশিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে। তাই ডুমুর খেলে শরীর প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়াম পায়।
গুড়- রুটি দিয়ে হোক বা পায়েস রান্নায়- গুড় খুব প্রিয় বাঙালির। এই গুড়েও রয়েছে ক্যালশিয়াম। ১০০ গ্রাম গুড়ে মেলে ৩৬৩ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম।
আরও পড়ুন- সকালে পেট সাফ হয় না? এই ৪ জিনিস খেলে গ্যাস-অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি
ভিটামিন ডি- হাড় মজবুত করার জন্য দরকার ভিটামিন ডি। হাড় মজবুত করার জন্য সূর্যের আলো থেকে মেলে ভিটামিন ডি। সকালে সূর্যের আলোয় হাঁটলে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ভিটামিন ডি ছাড়া শরীর ক্যালশিয়াম শোষণ করতে পারে না।