গোটা এপ্রিল মাস জুড়ে বাঙালিদের নানা পুজো ও আচার অনুষ্ঠান রয়েছে। চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তিতে (Chaitra Sankranti) পালিত হয় আরও একাধিক হিন্দুদের অনুষ্ঠান। বলা চলে চৈত্র সংক্রান্তির উৎসব আসলে বাঙালিদের ঐতিহ্যের বড় উদাহরণ।
যে অঞ্চলগুলি সৌর বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করে, বৈশাখ (Baisakh)মাসকে বছরের প্রথম মাস হিসাবে বিবেচনা করে, তাদের নতুন বছরটি এই মাসের প্রথম দিনেই উদযাপিত হয়। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে, বাংলা নববর্ষ সাধারণত ১৪ বা ১৫ এপ্রিল পড়ে। বাংলা সৌর ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস বৈশাখের প্রথম দিনটিকে নববর্ষ, পহেলা বৈশাখের মতো বিভিন্ন নামে ভারতের অংশ ডাকা হয়। এই বছর ১৪২৮-এ পা দেব আমরা। ১৫ এপ্রিল,বৃহস্পতিবার পড়েছে ১ লা বৈশাখ। সুতরাং চৈত্র সংক্রান্তি পালিত হবে তার আগের দিন অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল।
চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব
* চৈত্র সংক্রান্তি যেসব অঞ্চলে পালিত হয়, গ্রাম বাংলায় আদিদেবতা শিবের মন্দিরকে ঘিরে চলে উৎসব। শিবকে সেখানে
বুড়ো ঠাকুরও বলা হয়। বুড়ো ঠাকুর বাড়িতে চৈত্র সংক্রান্তির দশ বারোদিন আগে থেকেই শুরু হয় উৎসবের পর্ব।
* এছাড়াও চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে বাঙালি বাড়িতে নানা অনুষ্ঠান ও লোকাচার চলে। এদিনের আগেই বাড়ি - দোকানপাটের ঝুল ঝেড়ে পরিষ্কার করে নিতে হয়। জামাকাপড়, বাড়ির পর্দা, চাদর ধুয়ে পরিছন্ন রাখার নিয়ম আগে থেকেই।
* চৈত্র সংক্রান্তিতে পালিত হয় আরও এক হিন্দুদের অনুষ্ঠান, চড়কের পুজো (Charak Puja)। তবে চড়কের পুজোর রয়েছে আরও ভিন্ন নাম। পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন জেলায় একেক নামে এই পুজো-আচার পালন করা হয়। গম্ভীরা পূজা, শিবের গাজন, নীল পুজো ইত্যাদি ভিন্ন নামে চড়ক পুজো করা হয়।
আরও পড়ুন: চৈত্র মাসে বিয়ে হয় না হিন্দুদের! কেন জানেন?
* চৈত্র সেল বাঙালির শিরায় শিরায় রয়েছে। নববর্ষে নতুন জামাকাপড় পরার রীতি। তাই গোটা চৈত্র মাস জুড়ে চলে কেনাকাটা। আর সেজন্যেই বিভিন্ন দোকানে থাকে বিশেষ ছাড়। আর সেই সেলের জিনিসপত্র কিনতে বাঙালি মল থেকে রাস্তার ধারের দোকানপাট, কিছুতেই বাদ রাখেন না।
* যুগ যুগ ধরে এই দিন বেশীরভাগ বাঙালি বাড়িতেই নিরামিষ খাওয়ার চল। সেই সঙ্গে অনেক বাঙাল বাড়িতে চৈত্র সংক্রান্তির দিন পাঁচন খাওয়ার নিয়ম আছে। বিভিন্ন রকমের সবজি দিয়ে তৈরি এই বিশেষ পদ খুব সুস্বাদু হয়।
আরও পড়ুন: পয়লা বৈশাখ টু বিহু! এইভাবে নববর্ষ উদযাপনে মেতে ওঠে ভারতবর্ষ
বাঙালিদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো হলেও। নববর্ষের আলাদা গুরুত্ব আছে। বর্তমানে এই বিশেষ দিন উপলক্ষে সেজে ওঠে সমস্ত শপিং মল থেকে পশ্চিমবাংলার রাস্তাঘাট। আর সকলে রাগ-অভিমান, দুঃখ -কষ্ট ভুলে গা ভাসান উৎসবের আনন্দে।