পুজোর মরশুমে আমরা প্রত্যেকেই নতুন জামাকাপড় পরি। তাতে পুজোর মণ্ডপে গ্ল্যামার বাড়ে ঠিকই, কিন্ত ভিড়ে-গরমে শরীর বুঝতে পারে, কী ধকল যাচ্ছে তার উপর দিয়ে। নতুন জামা আর চারিদিকে ভিড়ভাট্টার চাপ, আমাদের শরীর থেকে বাড়তি ঘাম বের করে দেয়। তাই পুজোর ভিড়ে চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে প্রায়শই গা থেকে ঘামের দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করে।
বিভিন্ন কারণে ঘামের দুর্গন্ধ হয়
কম-বেশি আমরা সবাই ঘামি। কিন্তু কারও কারও ঘামের প্রচন্ড দুর্গন্ধ হয়। অনেকের পা ঘামতে থাকে, অনেকের হাতের তালু ঘামে। অনেকের শরীরের ভাঁজে ভাঁজে ঘাম হয়। তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। ফলে প্রকাশ্যে অপদস্ত হতে হয় এবং তা থেকে শুরু হয় মানসিক অবসাদ। গরমে ঘাম তো হয়ই, কিন্তু অনেকের হরমোনাল ডিসব্যালেন্সের জন্য ঘামে দুর্গন্ধ হতে পারে। শরীরে যদি ফাংগাল ইনফেকশন বেড়ে যায় তাহলেও ঘামে দুর্গন্ধ হয়।
আরও পড়ুনঃ ঘামের দুর্গন্ধ দূর হয় লেবু আর নিমে, Deodorant লাগবে না, কীভাবে?
গরমে ঘাম হওয়া খুব সাধারণ বিষয়। ঘাম হলে স্থূলত্ব কম হয়। অনেক রোগ দূরে থাকে। এমনি সাধারণভাবে ঘামের গন্ধ নেই। কিন্তু যখন ঘাম ত্বকের স্তরে এসে পৌঁছয়, ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মিলিত হয়, তখন ঘামের দুর্গন্ধ শুরু হয়।
সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ শেহনাজ হোসেনের টিপস
সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ শেহনাজ হোসেন এর বক্তব্য যে, লেবু জল, গোলাপ জল, দই, বেকিং সোডা, জল এর মত সহজ ঘরোয়া উপায়ে অবলম্বন করে ঘামের দুর্গন্ধের সমস্যা সম্পূর্ণ দূর করা যেতে পারে।
কীভাবে এড়াবেন দুর্গন্ধ
পুজোর সময় দিনে হোক কিংবা রাতে। মানুষের ভিড়ে চিঁড়ে-চ্যাপটা হওয়ার জোগাড় হয়। বহু মানুষের ভিড়ে গরমও বেশি লাগে। তাই সুতির জামা কাপড় পরা ভাল। যা ঘাম টেনে নিতে অনেকটা সাহায্য করবে।
১. পুজোর প্রত্যেকদিনই নিশ্চয়ই আলাদা জামা কাপড় পড়বেন। সম্ভব হলে দু-বেলা আলাদা জামা পড়লে ভাল। খোলামেলা হালকা কাপড় জামা পরাই ভাল।
২. গরমে ঘামের দুর্গন্ধ রুখতে ডিওডোরেন্ট অত্যন্ত ভালো বিকল্প। সব-সময় হালকা সুগন্ধিত ডিওডোরেন্ট প্রয়োগ করলে তা ভালো প্রমাণিত হয়। কারণ কড়া সুগন্ধে ত্বকে জ্বালা হতে পারে।
৩. ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা খুব ভাল। পাউডার ঘাম টেনে নেয়।
৪. শরীরের যে অংশে বেশি ঘাম হয় ও দুর্গন্ধ বেরোয়, সেই অংশে কাঁচা আলুর পাতলা করে কেটে রগড়ে দিলে ঘামের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি মেলে।
আরও পড়ুনঃ Tomato Eating Alert: গায়ে দুর্গন্ধ-কিডনিতে পাথর, বেশি টমেটো খেলে যা যা হতে পারে...
৫. বালতি বা বাথটবের জলে ফিটকারি বা পুদিনার পাতা ফেলে স্নান করলে শরীর তাজা এবং ফ্রেশ অনুভব হয় ও ঘামের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
৬. স্নানের জলে গোলাপজল মিলিয়ে স্নান করলে ঘামের দুর্গন্ধ দূর হয় বা স্থানের জলে দু'ফোঁটা টি-অয়েল মেশালে তা ঘামের দুর্গন্ধ দূর করে।
৭. চুলের ঘাম এর দুর্গন্ধ যদি রুখতে হয়, সেটি রুখতে হলে জলে গোলাপজল বা লেবু জল মিশিয়ে চুল ধুলে মাথার চুলের ঘাম দূর হয় এবং গন্ধ চলে যায়।
শেহনাজ হোসেনের টিপস
হারবাল কুইন নামে বিখ্যাত শেহনাজ হোসেনের বক্তব্য, বেকিং সোডা ঘামের দুর্গন্ধ রুখতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বেকিং সোডা, জল এবং লেবুর রস মিলিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিয়ে এই পেস্ট আন্ডার আর্মে দশ মিনিট লাগিয়ে রেখে তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ঘামের দুর্গন্ধ রুখে দেওয়া যেতে পারে।