করোনার ধাক্কায় এ দেশে টাইপ-১ ডায়াবিটিস বাড়ছে বলে সতর্ক করল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR)।টাইপ-১ ডায়াবেটিস সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করেছে তারা। তাতে বলা হয়েছে,কমবয়সি ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মধুমেহ ছড়িয়ে পড়ছে। ছোট থেকেই ইনসুলিন নেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে আক্রান্তদের।
তিন দশকে ডায়াবেটিস আক্রান্ত ১৫০% বৃদ্ধি
করোনা আক্রান্তদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আইসিএমআর-এর মতে, ওই আক্রান্তদের একাংশের ওষুধ খাওয়ার পরে শরীরে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। তবে বাকিরা পাকাপাকি ভাবে ডায়াবেটিস আক্রান্ত। যা ভবিষ্যতে কিডনি থেকে দৃষ্টিহীনতা মতো সমস্যার কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সোমবার আইসিএমআর-র প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশে গত তিন দশকে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ দেশের প্রতি ছ'জনের এক জন ব্যক্তি এখন মধুমেহ আক্রান্ত।
২০১৯ সালে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিসের কারণে ৪০ লক্ষের বেশি মৃত্যু হয়েছে। ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যায় দ্বিতীয় এ দেশ।
ভবিষ্যতে আক্রান্ত বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
শারীরিক কসরতের অভাব, খেলাধুলো নেই, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড খাওয়ার জন্য স্থূলতার শিকার হচ্ছে ছোটরা। দেখা দিচ্ছে টাইপ-১ ডায়াবেটিস। বিশ্বজুড়ে ১০ লক্ষেরও বেশি শিশু ও কিশোর-কিশোরী টাইপ-১ ডায়াবেটিসের শিকার। 'আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন'-র একটি সাম্প্রতিক তথ্য বলছে,ভারতে টাইপ ১ ডায়াবেটিসের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। টাইপ ১ ডায়াবেটিস রোগীদের বেঁচে থাকার জন্য ইনসুলিন এবং থেরাপির প্রয়োজন। নানা শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয়।
দেশে প্রি-ডায়াবেটিসের ক্রমবর্ধমান। যা ভবিষ্যতে মধুমেহ রোগীর সংখ্য়া বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ দেশে ডায়াবেটিস কোনও বাদবি়চার করেনি। ধনী থেকে মধ্যবিত্ত হয়ে গরিবের পর্ণকুটিরেও পৌঁছে গিয়েছে। আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে টাইপ ২ ডায়াবেটিসও। এর মধ্যে ২৫-৩৪ বছর বয়সী শহুরে এবং গ্রামীণ যুবকরাও রয়েছেন। ফলে ৪০-র উপরে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার যে মিথ তা-ও ভেঙে গিয়েছে।
ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসায় অগ্রগতি
চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতিতে এখন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। ইনসুলিন অ্যানালগ, পাম্প, স্বয়ংক্রিয় ইনসুলিন ব্যবস্থা এবং সেন্সর প্রযুক্তি চলে এসেছে।
ভারতে ডায়াবেটিস চিকিৎসার কেমন হাল?
ভারতে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা অনেকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। যেমন পরিষেবার মান, ওষুধের ক্রয়ক্ষমতা, বিশেষজ্ঞদের অভাব এবং ল্যাবোরেটরি। টাইপ ১ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু আন্তর্জাতিক নির্দেশিকাও রয়েছে।
আইসিএমআর টাইপ-১ ডায়াবেটিস নির্দেশিকায় শিশু, কিশোর এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর এই নির্দেশিকা তৈরি।
আরও পড়ুন- বিগড় যাচ্ছে মেজাজ? হরমোনের সমস্যার ৮ লক্ষণ! জানুন কী ভাবে প্রতিকার?