সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর থেকে আর পদ্মার(Padma) ইলিশের জন্য বাংলাদেশের(Bangladesh) মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। এ রাজ্যেই মিলবে সুস্বাদু পদ্মার ইলিশ(Hilsa) মাছ। এমন ব্যবস্থা করছে খোদ ভারত(India) সরকার(Government)। বেসরকারি সংস্থা লারসেন অ্যান্ড টুবরোকে দিয়ে গঙ্গায় ফরাক্কা(Farakka) তে তৈরি করানো হয়েছে বিশেষ লক। ফলে কপাল ভাল থাকলে আসন্ন শীতের (Winter)মরশুমেও মিলতে পারে ইলিশের ঝাঁক। আর স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা কমবে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের যাতায়াত।
লারসন অ্যান্ড টুবরোর নেভিগেশন গেটেই কামাল
গঙ্গার উপর মুর্শিবাদাবাদের ফরাক্কায় ব্যারেজে নতুন নেভিগেশনাল লক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। নতুন নেভিগেশনাল লকটি তৈরি করছে বিখ্যাত নির্মান সংস্থা লারসেন অ্যান্ড টুবরো (L&T)। এর ফলে জাহাজ চলাচলেও সুবিধা হবে। এখন যে লকটি রয়েছে, তা জাহাজ চলাচল পরিচালনা করতে প্রায় অক্ষম। বহু সময় লাগে জাহাজ চলাচল করতে। ভারত সরকারে তরফে ফারাক্কা ব্যারেজে স্লুইস গেটটি প্রতিদিন চার ঘন্টার জন্য বর্তমান ওয়াটার লেবেলের চেয়ে বেশি হাইটে খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই লক খোলার ফলে ইলিশকে ডিম পাড়ার জন্য পদ্মা নদীর নোনতা জল থেকে গঙ্গা নদীর মিষ্টি জলে সাঁতার কেটে আসতে সাহায্য করবে।
পুরনো লকটি কার্যকর নয়
১৯৭৬ সালে পুরনো নেভিগেশন লকটি তৈরি হয়েছিল। ১৯৭৮ সাল থেকে ফারাক্কার বর্তমান লক গেটটি কার্যকর রয়েছে। তবে তা প্রায় কাজ করে না বললেই চলে। সে কারণেই নতুন লক তৈরির প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। নতুন নেভিগেশনাল লকটি দৈর্ঘ্য ২৫০মিটার, উচ্চতা ২৫ মিটারের কিছু বেশি বলেও সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। নতুন প্রস্তাবিত লকে থাকবে মিটার গেটস, সিজন গেটস, বাল্ক হেড গেটস এবং রেডিয়াল গেট। যা কালভার্টস গুলিতে জল ভরে। পাশাপাশি যা একটি কন্ট্রোল রুম থেকে সমস্ত গেটগুলিকে নিয়ন্ত্রিত করা যায় । নতুন এই প্রকল্প কাজ করা শুরু হলেই আবার বাংলার গঙ্গায় জাল ফেলেই উপভোগ করা যাবে পদ্মার ইলিশের স্বাদ।
পদ্মা থেকে উজানে গঙ্গায় আসবে সুস্বাদু ইলিশ
১৯৭৬ সালে ফারাক্কা নেভিগেশন লক তৈরির আগে এলাহাবাদ তথা অধুনা প্রয়াগরাজ অবধি ইলিশ মাছের অবাধ যাতায়াত ছিল। যা লক তৈরির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে চার দশকের পরে পদ্মা থেকে গঙ্গায় ইলিশ মাছ ডিম পাড়তে ঢুকতে পারবে। লারসেন অ্যান্ড টুব্রোর এই প্রকল্পে এ দেশের বিশেষ করে বাঙালিরা গঙ্গা নদীতেও তাজা ইলিশ এর স্বাদ উপভোগ করতে সক্ষম হবেন। এই প্রকল্পের ফলে মাছ বাংলাদেশ থেকে সাঁতার কেটে গঙ্গা নদীতে প্রবেশ করতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ গঙ্গার উজান বেয়ে চলে আসবে ভারতের দিকে। ফলে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ পর্যন্ত গঙ্গার ধারে মৎস্যপ্রেমীরা এই প্রকল্পের সুফল হিসেবে তাজা সুস্বাদু ইলিশের মজা উপভোগ করতে পারবেন।
নোনতা থেকে মিষ্টি জলে আসবে ইলিশ
বর্তমানে ফরাক্কা বাঁধের স্লুইস গেটটির জলস্তর যেখানে রয়েছে, এ বার তার চেয়ে বাড়িয়ে দেওয়া হবে জলস্তর। যার অর্থ, স্লুইস গেট এতদিন যতটা খোলা থাকছিল, তার চেয়ে অনেকটা বেশি খোলা হবে। এবং তা প্রতিদিন চার ঘণ্টার জন্য সেটি খোলা থাকবে। ওই বেসরকারি সংস্থার কর্তাদের দাবি, এর ফলে পদ্মা নদীর নোনতা জল থেকে গঙ্গা নদীর মিষ্টি জলে সাঁতার কেটে আরও বেশি সংখ্যক ইলিশের চলে আসার সম্ভাবনা বাড়বে। এই পরিস্থিতিতে গঙ্গায় ইলিশ মাছের ডিম পাড়ার সম্ভাবনাও বাড়বে।