ওয়াদাওয়ার মতো প্রস্রাব দৈনন্দিন কাজের একটি অংশ। শরীরের সমস্ত বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। বেশিরভাগ লোকই প্রস্রাব করার সঠিক উপায় জানেন না যে কারণে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। সঠিকভাবে প্রস্রাব না করলে মূত্রাশয় সংক্রান্ত জটিল রোগ হতে পারে। প্রস্রাবের সময় এমন কিছু ভুল সম্পর্কে জানা উচিত যা এড়িয়ে চলা দরকার।
প্রস্রাব আটকে রাখা-প্রায়ই মানুষ কোনও না কোনও কাজের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রস্রাব আটকে রাখেন। মহিলাদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি। জেনে-বুঝে বা অজান্তে এমনটা করলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। প্রস্রাব আটকে রাখলে কিডনির উপর চাপ বাড়ে। সেই সঙ্গে কিডনিতে ঘা-ও হতে পারে। যে কারণে ভবিষ্যতে কিডনি সংক্রান্ত সমস্যায় পড়তে পারেন। পাশাপাশি প্রস্রাব আটকে রাখার ফলে মূত্রাশয়ও দুর্বল হতে শুরু করে। যে কারণে প্রস্রাব বের হওয়ার সমস্যা হতে পারে। প্রস্রাব আটকে রাখলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ পায়, ফলে মূত্রাশয়ের অভ্যন্তরে তা পৌঁছতে পারে। শুরু হয় ইউটিআই-এর সমস্যা।
মূত্রাশয় পুরোপুরি খালি না করা- প্রস্রাব করার সময় প্রায়শই তাড়াহুড়ো করে মূত্রাশয় সম্পূর্ণ খালি হওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন না অনেকে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে টয়লেট থেকে বেরিয়ে আসে। এটা উচিত নয়। বরং সম্পূর্ণ কাজ সেরেই শৌচাগারের বাইরে আসা উচিত। মূত্রাশয়ে কিছু পরিমাণ প্রস্রাবও অবশিষ্ট থাকলে বাড়ে ইউরিন ইনফেকশনের ঝুঁকি।
প্রস্রাব ধরে রাখার কারণে কোনও ব্যক্তির মূত্রাশয় সম্পূর্ণ খালি আছে কি না সে সম্পর্কে কোনও ধারণা থাকে না। এ কারণে প্রস্রাব বের হওয়া ও সংক্রমণের সমস্যা অনেক বেড়ে যায়। প্রস্রাব করার পরেও মূত্রাশয় ভর্তি অনুভব করেন তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আরও পড়ুন-রাতে চট করে ঘুম আসে না? এই ৫ টোটকায় চোখ বুজলেই শান্তির নিদ্রা
ঘন ঘন প্রস্রাব- ঘন ঘন প্রস্রাব খুবই বিপজ্জনক হতে পারে। এতে মূত্রাশয় সঠিকভাবে প্রস্রাব সংগ্রহ করতে পারে না। সাধারণত মূত্রাশয় ৪৫০ থেকে ৫০০ মিলি প্রস্রাব সংগ্রহ করে। কিন্তু কেউ যদি প্রতি আধঘণ্টা বা এক ঘণ্টায় প্রস্রাব করতে যান, তাহলে মূত্রাশয় খুব কম প্রস্রাব সংগ্রহ করে। যে কারণে মূত্রাশয় সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ পায়। মাঝে মাঝে প্রস্রাব করা ইউটিআই, কিডনি সংক্রমণ, মূত্রাশয় পাথর, ডায়াবেটিস বা পুরুষদের প্রোস্টেট সমস্যার কারণ হতে পারে।
প্রস্রাবের সংক্রমণ- মূত্রনালির সংক্রমণ মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই সংক্রমণের কারণে মহিলারা প্রস্রাব করার সময় ব্যথা পান। এই সংক্রমণ ঘটে যখন ব্যাকটেরিয়া প্রস্রাবের নালির মাধ্যমে মূত্রাশয়ে প্রবেশ করে। মূত্রাশয়ে পৌঁছানোর পরে এই ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তা প্রস্রাবকে অম্লীয় করে তোলে। যে কারণে প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া অনুভব করেন মহিলারা। প্রস্রাব করার সময় ব্যথার পাশাপাশি ইউটিআই হলে বারবার প্রস্রাবের বেগ আসে।
বছরে তিন বারের বেশি ইউরিন সংক্রমণের সমস্যা হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ইউরিন সংক্রমণের সমস্যা অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্যে নিরাময় করা যায়। যত্ন না নিলে তা কিডনি পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।
আরও পড়ুন- শরীরে এই ৫ সমস্যা থাকলে কলা একদম খাবেন না, কিডনি বিকলের ঝুঁকি
প্রস্রাবের গোলাপি এবং লাল রং- প্রস্রাবের লাল এবং গোলাপি রং নির্ভ করে ব্যক্তি কী খেয়েছেন তার উপরে। প্রস্রাবের এই রং প্রস্টেট সমস্যা, কিডনিতে পাথর, মূত্রাশয়ে বা কিডনিতে টিউমারের মতো অসুখের কারণেও হতে পারে।