আগামী ২৬ মে বছরের প্রথম চন্দ্র গ্রহণই নয়, চন্দ্রের পূর্ণ গ্রহণ দেখা যাবে সে দিন। তার সঙ্গে আরও একটি দুর্লভ মহাজাগতিক দৃশ্য দেখা যাবে সে দিন।
গ্রহণের সময় চাঁদে গাঢ় লাল রঙ ধরবে। যাবে ব্লাড রেড মুন (Blood Red Moon) বলা হয়। বহু বছরে মাত্র একবারই এমন দৃশ্যের দেখা মেলে।
বৈজ্ঞানিকরা এই বিশেষ ইভেন্টকে সুপার লুনার ইভেন্ট বলছেন। কারণ সুপার মুন থাকবে, চন্দ্রহণ থাকবে এবং লাল রঙের চাঁদও থাকবে। এই তিনের ত্রহ্যস্পর্শে বিশেষ মাত্রা পেতে চলেছে বছরের প্রথম চন্দ্রগ্রহণ।
সুপারমুন কী?
প্রথমে জেনে নিন সুপারমুন কী? চাঁদ যখন পৃথিবীর খুব কাছাকাছি চলে আসে, তখন দেখতে প্রায় ১২ শতাংশ বড় লাগে। সাধারণত পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব প্রায় ৪ লক্ষ ১০ হাজার কিলোমিটারের আশপাশে থাকে। কিন্তু সুপারমুনের ক্ষেত্রে এই দূরত্ব কমে ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার ৭০০ কিলোমিটারে চলে আসে। সে জন্যই একে সুপারমুন বলা হয়।
চাঁদ পৃথিবার চারদিকে ডিম্বাকার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে। কক্ষের মাঝামাঝি চলে এলে চাঁদের দূরত্ব কমে যায়। তখন চাঁদ বড় দেখায়।
প্রদক্ষিণ করার সময় সূর্য এবং চাঁদের মাঝে যখন পৃথিবী চলে আসে, তখন তার ছায়া গিয়ে পড়ে চাঁদের উপর। সে কারণে চন্দ্রগ্রহণ হয়। অনেক সময় সেই ছাড়া আংশিক ভাবে চাঁদের উপর পড়ে, তখন হয় আংশিক চন্দ্রগ্রহণ। কখনও ছায়ায় পুরো ঢেকে যায় চাঁদ, তখন হয় চাঁদের পূর্ণ গ্রহণ।
গাঢ় লাল রঙের চাঁদ কেন দেখা যায়?
চাঁদ যখন পৃথিবীর ছায়ায় পুরোপুরি ঢেকে যায় তখন সূর্যের সাত রঙে থাকা লাল রঙের তরঙ্গ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে পৌঁছে যায় চাঁদে। তাই পূর্ণ গ্রহণের সময় অনেক বারই চাঁদকে গাঢ় লাল রঙের দেখতে লাগে। রায়ুমণ্ডলের কারণেই খানিকটা সরলরেখা পরবর্তন করে লাল রশ্মি গিয়ে লাগে চাঁদের গায়ে। সে কারণেই এমন দৃশ্যের দেখা মেলে।
চন্দ্রগ্রহণ কোথায় দেখা যাবে?
চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে দুপুর ২টো বেজে ১৭ মিনিটে। শেষ হবে সন্ধে ৭টা বেজে ১৯ মিনিটে। আমেরিকা, উত্তর ইউরোপ, পূর্ব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু অংশ থেকে এই দৃশ্য দেখা যাবে।
ভারত থেকেও গ্রহণ দেখা যাবে, তবে তা পূর্ণ গ্রহণ নয়। দেশের পশ্চিমাংশের রাজ্যগুলিতে এই দৃশ্য দেখা যাবে। পরবর্তী সুপারমুনের দৃশ্য দেখা যাবে চলতি বছরের ১৮ বা ১৯ নভেম্বর।