আর কতদিন অবশিষ্ট রয়েছে পৃথিবীর কাছে? কত দিনে নিঃশেষ হবে মানবজাতির অস্তিত্ব? অস্তিত্বের সংকট মেটাতে কী কী কাজ করা যেতে পারে? এ সব নিয়েই আলোকপাত করলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং বৈজ্ঞানিক অ্যাভি লোয়েব।
তাঁর মতে, বিশ্বের তাবড় বৈজ্ঞানিকরা সঠিক দিশায় কাজ করছেন না। অধ্যাপক লোয়েব আবেদন করেছেন, বৈজ্ঞানিকরা যাতে বিশ্বের ক্লাইমেট চেঞ্জ নিয়ে দ্রুত কোনও কাজ করেন। ভ্যাকসিন তৈরিতে জোর দেন। খাদ্য সমস্যা মেটানোয় গবেষণা করেন, যাতে সকল মানুষ খেতে পারেন। মহাকাশে বেস স্টেশন তৈরির দিকেও নজর দিতে হবে। তার সঙ্গে এলিয়েনদের সঙ্গেও সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
অধ্যাপক লোয়েবের মতে, যে দিন মানুষ প্রযুক্তির শীর্ষে পৌঁছে যাবে, সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তিগত ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠে, সে দিন গোটা মানবজাতি ধ্বংসের মুখে পৌঁছে যাবে।
একই সঙ্গে পৃথিবীরও সময় ফুরিয়ে আসবে। তখন এ সমস্ত মানবকল্যাণ মূলক কাজই বিশ্ব এবং মানবজাতিকে রক্ষা করতে পারে।
তিনি বলেন, 'মানুষের লোভের কারণে যে ভাবে পৃথিবীর অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে, তাতে মনে হয় না মানুষ আর খুব বেশি দিন পৃথিবীতে থাকতে পারবে। সামনের শতাব্দীর মধ্যে পৃথিবী আর বাসযোগ্য থাকবে না। তখন হয়তো মহাকাশেই বসতি স্থাপন করতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'ক্লাইমেট চেঞ্জ তো রয়েইছে, তার সঙ্গে মানুষের তৈরি দুই আরও ভয়ংকর সমস্যা সম্মুখীন হবে পৃথিবী। প্রথমটি মহামারী। দ্বিতীয়টি যুদ্ধ। এ নিয়ে যদি এখনই কোনও সদর্থক ভূমিকা না নেওয়া হয়, তবে মানুষ নিজেই পৃথিবী ধ্বংস করে ফেলবে। বা এটাও হতে পারে যে মানুষের অতিরিক্ত অত্যাচারে পৃথিবীর নিজে থেকেই ধ্বংস হতে থাকবে।'
তিনি জানান, জলবায়ুর লাগাতার পরিবর্তন হওয়ার কারণে বহু দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। হিমবাহ গলে যাচ্ছে। সমুদ্রের জ্লস্তরও প্রতি নিয়ত বাড়ছে। কয়েক শো বছর ধরে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি ফের জেগে উঠছে। দাবানলে জঙ্গল পুড়ে ছাই হচ্ছে।
আমাজন এবং অস্ট্রেলিয়ার জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা ভোলার নয়। কত ধরনের জন্তু জানোয়ার মারা গিয়েছে তার ঠিক নেই। একই সঙ্গে অক্সিজেনের জোগানেও টান ফেলছে এমন ঘটনা। ক্রমাগত বাড়ছে দুষণ।
তাঁর মতে, ফিজিক্সের নিয়ম অনুযায়ী সব কিছুই ৫টি মৌলিক তত্ত্ব দিয়েই তৈরি। প্রকৃতির নিয়ম মেনে এই বেসিক তত্ত্বে যদি কেউ ক্রমাগত আঘাত করতে থাকে, তার কুফল ভোগ করতেই হবে। যার শুরু হয়ে গিয়েছে।
মানব সভ্যতা আর কতদিন বেঁচে থাকবে তা নির্ভর করছে কত দ্রুত প্রযুক্তির বিকাশ এবং মানব কল্যাণে কাজ করা হচ্ছে তার উপর। না হলে মানুষ নিজেই নিজের ধ্বংস ডেকে আনবে।