ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে এজবাস্টনে পঞ্চম টেস্ট ম্যাচের খেলা চলছে। এই ম্যাচে সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে আয়োজক ইংল্যান্ড। শেষ দিনে ১১৯ রান করতে হবে তাদের। হাতে রয়েছে সাত উইকেট।
টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় দিনে বিরাট কোহলি ও জনি বেয়ারস্টোর মধ্যে তুমুল বিতর্ক হয়েছে। মহম্মদ শামির একটি ডেলিভারিতে বেয়ারস্টো পুরোপুরি বিট হন।
এরপর স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা কোহলি কিছু বললেন। বেয়ারস্টোও চুপ করে বসে থাকতে পারেননি, এরপরই দু'জনের মধ্যে এই বিতর্ক হয়।
বিরাট কোহলি এবং জনি বেয়ারস্টোর মধ্যে উত্তপ্ত তর্ক থামানোর জন্য আম্পায়ারদেরও হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল। এরপরই বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। ভারত-ইংল্যান্ডের মধ্যকার টেস্ট ম্যাচে এমন ঘটনা এর আগেও বহুবার হয়েছে। আসুন জেনে নেই এরকম পাঁচটি বিবাদ সম্পর্কে-
অ্যান্ডারসন-জাদেজা: ২০১৪ সালে রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে উত্তপ্ত তর্ক হয়েছিল। নটিংহ্যামে খেলা প্রথম টেস্ট ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে গোটা বিতর্কের জন্ম হয়। সেদিন লাঞ্চের আগে প্রথম মাঠে রবীন্দ্র জাদেজা ও জেমস অ্যান্ডারসনের মধ্যে তর্ক হয়। এরপর লাঞ্চ করে প্যাভিলিয়নে ফেরার সময় জাদেজার পাশাপাশি তৎকালীন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে ঝামেলায় পড়েন অ্যান্ডারসন। অ্যান্ডারসন ভারতীয় ড্রেসিংরুমে এসে জাদেজাকে দাঁত ভাঙার হুমকিও দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
স্টোকস-কোহলি: ২০১৬ সালের মোহালি টেস্টে বিরাট কোহলি এবং বেন স্টোকসের লড়াই হয়েছিল, যা এখনও মানুষের মনে রয়েছে। সেই টেস্টের প্রথম দিনে, আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার সময় কোহলির সঙ্গে স্টোকসের ঝামেলা বেঁধে যায়। এরপর দ্বিতীয় দিনে যখন টিম ইন্ডিয়া ব্যাট করছিল, সেই সময় বিরাট কোহলির উইকেট তুলে নেন বেন স্টোকস। কোহলি আউট হয়ে গেলে স্টোকস মুখে আঙুল দেখিয়ে তাঁকে বিদায় দেন। সেই টেস্ট ম্যাচের পর, স্টোকসকেও আইসিসি তিরস্কার করেছিল এবং তাঁর একটি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হয়।
ইয়ান বেল রানআউট: ২০১১ সালের নটিংহাম টেস্টের স্মৃতি এখনও ভক্তদের মনে রয়েছে। সেই ম্যাচে আম্পায়ার আউট দিলেও ধোনি, ইয়ান বেলকে ডাকেন। তৃতীয় দিনে চায়ের সময়ের মাত্র এক বল আগে এই পুরো ঘটনাটি ঘটে। সে সময় ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৭ রানে ব্যাট করছিলেন ইয়ান বেল। ইশান্ত শর্মার ডেলিভারিতে ইয়ন মর্গ্যান ডিপ স্কোয়ার লেগের দিকে খেলেন। ইয়ান বেলের মনে হয়েছিল বলটি বাউন্ডারি ছুঁয়ে গেছে এবং তিন রান শেষ না করেই তিনি মর্গানের কাছে চলে আসেন।'টি টাইম' অনুমান করে প্যাভিলিয়নের দিকে যেতে শুরু করেন।
কিন্তু বাউন্ডারি লাইনে বল থামিয়ে প্রবীণ কুমার, ধোনির দিকে বল ছুড়ে দেন। এরপর ধোনি বলটি নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে দেন, যেখানে অভিনব মুকুন্দ স্টাম্প ভেঙে দেন। ভারতীয় খেলোয়াড়রা রান আউটের আবেদন করলে আম্পায়ার বেলকে রান আউট ঘোষণা করেন। চায়ের সময় ইংল্যান্ডের অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রস এবং কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার আপিল প্রত্যাহারের অনুরোধ করতে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে পৌঁছেছিলেন। টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করে আপিল প্রত্যাহার করে নেন ধোনি। এমন পরিস্থিতিতে চায়ের সময় পর ম্যাচ শুরু হলে ব্যাট করতে মাঠে নামেন বেল।
জেলি বিন বিতর্ক: জেলি বিন বিতর্ক ২০০৭ সালের ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে আলোড়ন ফেলেছিল। জহির খান যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন পিচের চারপাশে কিছু জেলি বিন দেখতে পান। জহির খান সেই জেলি বিনগুলোকে পিচ থেকে তুলে নেন। কিন্তু, কিছুক্ষণ পরে, তিনি আবার পিচে জেলি বিন দেখতে পান। এরপর স্লিপে উপস্থিত কেভিন পিটারসেনের উদ্দেশে রেগে কিছু বলতে দেখা যায় জহির খানকে। নিজের ভুল স্বীকার না করে জহির খানের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন পিটারসেন। এমন পরিস্থিতিতে রেগে গিয়ে পিটারসেনকে ব্যাট দেখান জহির।
নাসের হুসেন-সচিন তেন্ডুলকর: ২০০১ সালের ডিসেম্বরে ব্যাঙ্গালোর টেস্ট ম্যাচে, ইংলিশ অধিনায়ক নাসির হুসেন মহান ব্যাটসম্যান সচিন তেন্ডুলকরকে আউট করার জন্য একটি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এই পর্বে, নাসির স্পিনার অ্যাশলে জাইলসকে লেগ-স্টাম্পে সব বল করতে বলেছিলেন। এই স্ট্র্যাটেজি সচিন তেন্ডুলকরকে খুব বিরক্ত করেছিল কারণ তিনি এই বলে রান করতে পারছিলেন না। সচিন তাঁর ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন এবং স্টাম্পড হন। তাঁর টেস্ট কেরিয়ারে প্রথমবার ঘটে এই ঘটনা। নাসির হোসেনের এই কৌশল নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছিল।