প্রথম থেকে চিয়ার ফর ইন্ডিয়া ক্যাম্পেন শুরু করেছিল ভারতীয় ক্রীড়া দফতর ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অলিম্পিয়ানরা যাতে এবার বুঝতে পারেন যে তাঁদের পিছনে রয়েছে পুরো দেশ। সেই আশা ও ভরসা দেওয়া হয়েছিল টোকিওতে উড়ে যাওয়া প্রতিটি ভারতীয় অ্যাথলিটকে।
তবে এবারের অলিম্পিক কিছুটা আলাদা, কারণ এবার যখন অ্যাথলিটরা পারফর্ম করছেন তখন আর চিয়ার করার জন্য গ্যালারিতে কাউকে দেখা যাচ্ছে না। কারণ একটাই কোভিড-১৯ অতিমারী। করোনা ভাইরাসের কারণে এবারের অলিম্পিক ক্লোজ ডোরে হচ্ছে। তবে টোকিও ও জাপানের মাটিতে থাকেন একঝাঁক ভারতীয়। আর প্রিয় ভারতীয় অ্যাথলিটরা যখন মাঠে খেলবে তখন কী আর তাঁদের চিয়ার না করে থাকা যায়?
সেই কারণে এবার টোকিও অলিম্পিকে ভারতকে সাপোর্ট করতে জাপানের ভারতীয়রা পৌঁছে গিয়েছিল স্টেডিয়াম ও গেমস ভিলেজের বাইরেই। সেই দুর থেকে তাঁরা ভারত মাতা কী জয় ও চিয়ার ফর ইন্ডিয়া স্লোগানে মাতলেন। যাঁর মধ্যে ছিলেন ভারতীয় সাপোর্টাররা। প্রিয় মেরি কম, মীরাবাই চনু, দীপিকা কুমারীদের পাশে থাকতে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁরা। ছিলেন বাঙালিও।
এবারের অলিম্পিকে তিন বাঙালি গিয়েছে। তবে প্রবাসী বাঙালি ও জাপানের ভারতীয়রা বাড়িতে আটকে নেই। মাঠের প্রতি ভালোবাসা তাঁদের টেনে নিয়ে গিয়েছে মাঠের বাইরে পর্যন্ত। অলিম্পিক ন্যাশানাল স্টেডিয়ামের বাইরে থেকেই তাঁরা তাঁদের প্রিয় অ্যাথলিটদের সাপোর্ট করছেন। এমন কিছু ছবি ধরা পড়েছে টোকিও শহরে। হাতে ব্যান্ড, ভারতের পতাকা নিয়ে হাজির ছিলেন তাঁরা।
হাজির ছিলেন অসিম মণ্ডল, ঈশিপ্তা মণ্ডল, শ্রীকান্ত রায়, রীতা রায়, সৌভিক রায়, সুদীপ নন্দী, শুভঙ্কর মণ্ডল, অমর্ত্য বিশ্বাস, শম্পা নন্দীর মতো ভারতীয় ফ্যানেরা। তবে আক্ষেপ একটাই বাইরের দেশে থেকে সেভাবে দেশের স্বাদ পান না তাঁরা। তবে বাইরের দেশে নিজের দেশের অ্যাথলিটদের সাপোর্ট করতে পারলে তাঁরা ধন্য থাকতেন।
প্রবাসী বাঙালি ও অলিম্পিকে ভারতকে স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে সাপোর্ট করতে যাওয়া ঈশিপ্তা মণ্ডল বলছিলেন, 'এই সুযোগ তো সব সময় আসে না। বাইরের দেশে এতদিন থাকি, ভারতের স্বাদ পাই না অনেক দিন। তবে এখানে যদি আমাদের দলকে সাপোর্ট করতে পারতাম তাহলে ভালো লাগতো। তবে কোভিডের কারণে সেটা হচ্ছে না। অ্যাথলিটরা আমাদের হিরো। আমরা এখানে থেকে তাঁদের জন্যই গর্ব করি। তবে অলিম্পিকে আমাদের সাপোর্ট রইল দলের জন্য আমরা স্টেডিয়াম ও গেমস ভিলেজের বাইরে থেকেই গলা ফাটাতে চাই।'
ইতিমধ্যেই ভারতের কিছু অ্যাথলিট ভালো খেলছেন। মীরাবাই চনু পদক এনে দিয়েছে ভারতকে। তবে কোথাও গিয়ে দর্শক ও সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে তাঁরা ভাসতে পারছেন না। কারণ একটাই কোভিড-১৯। ভারতীয় ও প্রবাসী বাঙালি জাপান থেকে বলছিলেন, আমরা সবাই চেষ্টা করেছিলাম কোনওভাবে ভারতকে সাপোর্ট করা যদি সম্ভব হয়। আগে বলা হয়েছিল টিকিট দেওয়া হবে। তবে কোভিড খুব খারাপ পর্যায় হওয়ায় সেটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবুও আমরা নিজেদের সাপোর্ট ভারতীয় দলকে দেখাতে চাই। অন্য দেশের সাপোর্টাররাও আসছে বাইরে থেকে সাপোর্ট করতে। আমরাও করছি।
এবারের অলিম্পিকে প্রথমে দর্শক ঢুকতে দেওয়ার কথা থাকলেও, বেশ ক্ষোভের মুখে পড়েছিল জাপানের আয়োজক ও অলিম্পিক সংস্থা। কারণ ছিল কোভিড। সেটার থেকে বেঁচে এই গেমস আয়োজন করতে হবে। তবে কোথাও গিয়ে গ্রেটেস্ট শো অফ আর্থ ৪ বছরে একবার হয়। তাই সবাই চায় সেই গেমসের স্বাদ নিতে। একই সঙ্গে নিজের দেশকে সাপোর্ট করতে আশা একটা আলাদাই আবেগ। কিন্তু এবছর সবটাই নষ্ট করে দিয়েছে করোনা। এক বছর কোভিডের কারণে পিছিয়েও গিয়েছে অলিম্পিক গেমস।