প্রয়াত মিলখা সিং। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। ৯১ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই কিংবদন্তী। মিলখা সিংকে বলা হতো ফ্লাইং শিখ। এর পিছনে রয়েছে এক ইতিহাস।
সালটা ১৯৬০। সেবার পাকিস্তান ইন্টারন্যাশন্যাল অ্যাথলিটে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান মিলখা। তখনও দেশভাগের যন্ত্রণা ভুলতে পারেননি মিলখা। সেই কারণে, পাকিস্তানে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না তিনি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর হস্তক্ষেপে মিলখা পাকিস্তানে যেতে রাজি হন। সেই সময় পাকিস্তানের বিখ্যাত দৌড়বিদ ছিলেন আব্দুল খালিক।
প্রতিযোগিতায় প্রায় ৬০ হাজার ফ্যান আব্দুল খালিকের হয়ে গলা ফাটাচ্ছিল। তাকে সমর্থন করছিল। কিন্তু, মিলখা খালিককে হারিয়ে দেন। পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফিল্ড মার্শাল তখন মিলখা সিংকে ফ্লাইং শিখ নাম দেন। সেই থেকে এই নামেই বিশ্বে পরিচিত হয়ে ওঠেন এই দৌড়বিদ।
২০ নভেম্বর, ১৯২৯ সালে জন্ম মিলখা সিংয়ের। মিলখার ১৫ জন ভাই়-বোন ছিল। দেশভাগের শিকার হন মিলখা ও তাঁর পরিবার। চোখের সামনে বাবা, মা, এক ভাই ও দুই বোনের মৃত্যু দেখেছিলেন ৷ প্রাণ বাঁচাতে উঠে পড়েছিলেন দিল্লিগামী একটি ট্রেনে ৷
দিল্লিতে শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন মিলখা। সেই সব দিনের কথা বলতে গিয়ে মিলখা বলতেন, 'পেটে খাবার না থাকলে দেশ নিয়ে কেউ মাথা ঘামাতে পারে না। কিন্তু, আমি যখন খাবার পেলাম, তখন দেশকে নিয়ে ভাবতে শুরু করলাম।' তিনি আরও বলেছিলেন, 'যার মা-বাবাকে চোখের সামনে মরতে হয়েছে, সেই সন্তান কীভানে সুখে থাকতে পারে?'
এশিয়াডে ৪ বার স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন মিলখা। সবথেকে ভালো .ফলাফল করেছিলেন রোম অলিম্পিক্সে। ৪০০ মিটারের রেসে তিনি চতুর্থ হয়েছিলেন।
১৯৫৯ সালে পদ্মশ্রীতে সম্মানিত করা হয় মিলখাকে। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী-সহ দেশের সবস্তরের মানুষজন।