Advertisement

খেলা

'হ্যান্ড অব গডের' রহস্য কী, মারাদোনার খোলসা-দেখুন ছবিতে

Aajtak Bangla
  • 25 Nov 2020,
  • Updated 9:16 AM IST
  • 1/11

কিংবদন্তি আর্জেন্টাইন ফুটবলার দিয়েগো মারাদোনার মৃত্যুতে কার্যত শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন ব্রাজ়িলের ফুটবল সম্রাট পেলে। তিনি একটি টুইট করে জানিয়েছেন, "আমি একজন সত্যিকারের বন্ধুকে হারালাম।" শুধু পেলে নন, গোটা ফুটবল বিশ্ব মারাদোনার মৃত্যুতে কার্যত বাক্যহারা হয়ে পড়েছেন। 

  • 2/11

১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর বুয়েন্স আয়ার্সে জন্মগ্রহণ করেন মারাদোনা। তিনটে মেয়ের পর পরিবারে প্রথম পুত্রসন্তান আসায় আনন্দের কোনও শেষ ছিল না। মাত্র ১০ বছর বয়সে এস্ত্রেয়া রোজার হয়ে খেলা শুরু করেছিলেন মারাদোনা। কিন্তু, তাঁকে সেইসময় কেউ চিনতে পারেননি। ১২ বছর বয়সে শুরু করেন বল বয়ের কাজ। এরই ফাঁকে খেলার হাফটাইমের সময় বল দিয়ে জাদুকরি কারুকার্য দেখিয়ে তিনি দর্শকদের সন্তুষ্ট করতেন।

  • 3/11

১৯৭৬ সালের ২০ অক্টোবর আর্জেন্টিনার জুনিয়র দলে অভিষেক হয় মারাদোনার। ১৯৮১ সাল পর্যন্ত এখানে তিনি খেলেন। ১৬৭ ম্যাচে ১১৫টি গোল করেছিলেন। এরপর তিনি যোগ দেন বোকা জুনিয়র্স ক্লাবে। মরশুমের মাঝামাঝি এই ক্লাবে যোগ দিলেও ১৯৮২ সালে তিনি প্রথম লীগ চ্যাম্পিয়নশিপে জয়লাভ করেন। 

  • 4/11

এই বছরই আবার বার্সেলোনায় যোগ দেন মারাদোনা। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৮৩ সালে কোচ সিজার লুইস মেনত্তির অধীনে মারাদোনা রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে কোপা দেল রে এবং অ্যাথলেটিক বিলবাওকে হারিয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপে জয়লাভ করেন। বার্সায় মারাদোনাকে কিছুটা খারাপ সময় কাটাতে হয়েছে। প্রথমে তিনি হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হন, এরপর তিনি গোড়ালিতে চোট পান। তবে খুব তাড়াতাড়িই তিনি মাঠে ফিরে আসেন। বার্সেলোনায় মারাদোনা ৫৮ ম্যাচে ৩৮টি গোল করেন।

  • 5/11

এরপর তাঁর গন্তব্য হয় নাপোলি। নাপোলিতে মারাদোনা ক্রমশ পেশাদার ফুটবলার হয়ে ওঠেন। মারাদোনার জনপ্রিয়তার কারণে নাপোলিতেও ফুটবলের স্বর্ণযুগ তৈরি হয়। নাপোলি ক্লাবের হয়ে মারাদোনা ১৯৮৬–৮৭ ও ১৯৮৯–৯০ মরশুমে সিরি এ চ্যাম্পিয়নশিপে জয়লাভ করেন। পাশাপাশি  ১৯৮৯–৮৮ ও ১৯৮৮–৮৯ মরশুমে তাঁর দল রানার্স আপ হয়। শোনা যায়, এই ইতালিতে থাকাকালীনই মারাদোনা কোকেনের নেশা শুরু করেন। অনুশীলনে অনুপস্থিত থাকায় ক্লাবের পক্ষ থেকে তাঁকে ৭০,০০০ মার্কিন ডলার জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি ইতালিতে মারাদোনাকে পুত্রসন্তান সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির মুখেও পড়তে হয়েছিল। এরপর ১৯৯৫ সালে তিনি আবারও বোকা জুনিয়র্সেই ফিরে এসেছিলেন।

  • 6/11

এবার মারাদোনার আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ারে আলোকপাত করা যাক। ১৯৭৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, মাত্র ১৬ বছর বয়সেই হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে অভিষেক হয় মারাদোনার। ১৯৭৯ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি আর্জেন্টিনার হয়ে ফিফা বিশ্ব যুব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতার ফাইনালে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ৩–১ গোলে পরাস্ত করে জয়লাভ করে আর্জেন্টিনা। ওই একই বছরের জুন মাসে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সিনিয়র দলের হয়ে প্রথম গোল করেন মারাদোনা। এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, মারাদোনাই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ (১৯৭৯) ও ফিফা বিশ্বকাপ (১৯৮৬) এই দুটো প্রতিযোগিতাতেই গোল্ডেন বল অর্জন করেছেন।

  • 7/11

তো যাইহোক, ১৯৮২ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নামলেন মারাদোনা। কাতালান দর্শকরা তাদের ক্লাব বার্সেলোনায় নতুন যোগ দেওয়া মারাদোনার চমক দেখার জন্য আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু যেমনটা আশা করা হয়েছিল ঠিক ততটা নিজেকে উজাড় করতে পারেননি তিনি। এই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাও সেভাবে কিছু করে দেখাতে পারেনি। তবে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে দুটো গোল করেছিলেন তিনি।

  • 8/11

এরপর ১৯৮৬ ফুটবল বিশ্বকাপ। আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের অধিনায়ক হিসাবে মাঠে নামেন মারাদোনা। বিশ্বকাপের ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। গোটা টুর্নামেন্টে মারাদোনা মোট পাঁচটা গোল করেছিলেন। অ্যাসিস্ট করেছেন আরও পাঁচটি গোলে। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে তিনি নিজেকে কিংবদন্তি প্রমাণ করেন।

  • 9/11

 আপনারা তো সকলেই হ্যান্ড অফ গডের কথা জানেন। তাও একবার আলোচনা করি। আর্জেন্টিনা এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে এই ম্যাচ চলছিল। ম্যাচের প্রথমার্ধ গোলশূন্য হয়েই কাটে। দ্বিতীয়ার্ধের ৫১তম মিনিটে মারাদোনা একটি গোল করেন। কিন্তু, রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়, গোলটি করার সময় মারাদোনা বলে হাত লাগিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে এই গোলটির নাম হ্যান্ড অফ গড দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে মারাদোনা স্বীকার করেন যে তিনি গোলটি ইচ্ছাকৃতভাবেই হাত দিয়ে করেছিলে। তার মাথা বল স্পর্শ করেনি। তিনি নিজেও জানতেন যে এই গোলটি একেবারে অবৈধ। ইংরেজ খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ করলেও রেফারি গোলের বাঁশি বাজান। এর মিনিট চারেক পর আরও একটি গোল করেছিলেন মারাদোনা। যদিও এই গোলটি নিয়ে কোনও সংশয় ছিল না। ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। প্রতিযোগিতা শেষে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে মারাদোনাকে গোল্ডেন বল পুরস্কার দেওয়া হয়।

  • 10/11

এরপর ১৯৯০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপেও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে নেমেছিলেন মারাদোনা। কিন্তু, গোড়ালিতে চোট থাকার কারণে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। ফাইনালে আরও একবার পশ্চিম জার্মানির বিরুদ্ধে খেলতে হয় আর্জেন্টিনাকে। কিন্তু রুডি ফোলারকে ফাউল করার কারণে বিতর্কিত পেনাল্টি দেওয়া হয় পশ্চিম জার্মানিকে। সেই পেনাল্টিতে আনড্রেয়াস ব্রেহমার করা একমাত্র গোলে জয় পায় পশ্চিম জার্মানি।

  • 11/11

১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে মাত্র দুটো ম্যাচই খেলেছিলেন মারাদোনা। এরমধ্যে গিগের বিরুদ্ধে তিনি একটি গোলও করেছিলেন। ১৯৯৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের পরেই মারাদোনা তাঁর বর্ণাঢ্য কেরিয়ারের ইতি টানেন। আন্তর্জাতিক ফুটবলে তিনি ৯১ ম্যাচে ৩৪টি গোল করেছিলেন।

Advertisement
Advertisement