হিসেবটা খুব সহজ ছিল। বল হাতে আট উইকেট শিকারের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও শতরান করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কারটা তাঁর হাতেই উঠে আসবে। আর হলও তাই। আজ চেন্নাইয়ে আয়োজিত ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে ভারত ৩১৭ রানে জয়লাভ করে। সেইসঙ্গে সিরিজ়েও ১-১ ব্যবধানে সমতা ফিরিয়ে আনে।
অশ্বিন পুরস্কার গ্রহণ করতেই তাঁকে জড়িয়ে ধরেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। যেন অশ্বিনের হাত ধরেই তাঁর শাপমোচন হল। অ্যাডিলেডে আয়োজিত অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট ম্যাচে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। সেই ম্যাচে ভারতকে হারতে হয়। এরপর তিনি পিতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন। এরপর তিনি এক কন্যাসন্তানের বাবা হন। মেয়ের নাম রাখেন ভামিকা। তো, এরপর দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচে বিরাটের হাতে আবারও ভারতীয় ক্রিকেট দলের নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু, প্রথম টেস্ট ম্যাচে বিরাট কোহলি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় ক্রিকেট দলতকে জেতাতে পারেননি। এরপর তাঁকে নিয়ে অনেক সমালোচনাই হয়। কিন্তু, দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে অশ্বিনের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের ওপর ভর করে ভারত জয়লাভ করে। সেইসঙ্গে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন বিরাটও।
আজ পুরস্কার নেওয়ার পর অশ্বিন বললেন, "প্রথম টেস্ট ম্যাচের থেকে এই উইকেটের চরিত্র একেবারে আলাদা। এই উইকেটে বল করার জন্য অতিরিক্ত গতির দরকার হয়। এখানে আমি বছরের পর বছর খেলেছি। নিজের পারফরম্যান্সটা ধরে রাখাই এই উইকেটে প্রধান কাজ।"
এরপর মাঠে উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে অশ্বিন তামিল ভাষায় বলতে শুরু করেন। তিনি বলেন, "এই স্টেন্ডে বসে আমিও প্রচুর ক্রিকেট দেখেছি। আমার বাবার হাত ধরে এখানে আসতাম আমি। তবে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে এখানে আমি চারটে টেস্ট ম্যাচ খেললাম। তারমধ্যে এটাই আমার কাছে সবথেকে সেরা হয়ে থাকবে। আমি এখানে নায়কের সংবর্ধনা পেয়েছি। এখনও কোভিড পরিস্থিতি থেকে দেশ সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়নি। কিন্তু, তার মধ্যেও দর্শকেরা নির্ভীকভাবে খেলা দেখতে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আবার মুখে মাস্ক পরেননি। যতবার আমি ব্যাট কিংবা বল করতে এসেছি, ততবারই আমার জন্য গলা ফাটিয়েছেন। এইসব মুহূর্তগুলো এককথায় অসাধারণ। একেবারে আলাদা একটা অনুভূতি।"
আজ গোটা চেন্নাই স্টেডিয়ামে রবির জন্য দর্শকেরা এতটাই চিৎকার করেছেন যে তাঁর কথা মাঠে বসেও বিন্দুমাত্র শুনতে পাননি অশ্বিনের স্ত্রী প্রীতি। তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, "বাড়িতে ফেরা পর্যন্ত আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না। ম্যাচের পর সাক্ষাৎকার টেলিভিশনের পর্দায় দেখতে হবে। মাঠে বসে একটাও কথা আমি শুনতে পাইনি। শুধুমাত্র দর্শকদের গর্জন শুনতে পেয়েছি।"