Advertisement

খেলা

গরিবি দেখেননি সৌরভ! সৌগত রায়ের বক্তব্য কতটা সত্য, দেখে নিন মহারাজের পরিবার

কৌশিক বিশ্বাস
  • 25 Nov 2020,
  • Updated 7:17 PM IST
  • 1/13

বেহালার নামজাদা পরিবার - গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার। ঠাকুরদা নীরদকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের ছাপাখানার ব্যবসা তখনই বেশ ফুলেফেঁপে উঠেছে। আপনারা অনেকেই এনসি গোঁসাই প্রেসের নাম শুনে থাকবেন। তো যাইহোক, নীরদবাবুর বড় ছেলে চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায় একসময় চুটিয়ে ক্রিকেট খেলেছেন। এরপর ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের দায়িত্বও তিনি সামলেছেন। এমনকী বিসিসিআই-এর সাবকমিটিতেও তিনি ছিলেন। ফলে গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারে ক্রিকেটীয় সংস্কৃতি বহু আগে থেকেই ছিল।

  • 2/13

চন্ডীবাবুর দুই ছেলে। স্নেহাশিস এবং সৌরভ। বলা ভালো, বীরেন রায় রোডের এই বাড়িতে স্নেহাশিসের হাত ধরেই ক্রিকেটটাকে সিরিয়াসলি নেওয়া শুরু করেছিল গোটা পরিবার। সৌরভের অবশ্য ছোটোবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি কোনও আসক্তি ছিল না। ছিল ফুটবলে। সৌরভের বাবার বাড়ির পাশাপাশি মায়ের বাড়ির দিকেও ক্রিকেটের কানেকশন ছিল। দাদু সচ্চিদানন্দ চট্টোপাধ্যায় বড়িশা স্পোর্টিং ক্লাব চালাতেন। মামা অরূপ চট্টোপাধ্যায় ময়দানে যথেষ্ট নামকরা ক্রিকেটার ছিলেন।

  • 3/13

ফলে ছোটোবেলা থেকেই ক্রিকেটের পরিবেশে সৌরভ বেড়ে উঠছিলেন। ছোটোবেলা থেকে ফুটবলের প্রতি ঝোঁক থাকলেও দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখে ধীরে ধীরে ক্রিকেটের দিকে ঝুঁকছিলেন সৌরভ। ১৯৮৭ সালে বাংলার অনূর্ধ্ব-১৫ দলে জায়গা পেলেন সৌরভ। এরপর দেখতে দেখতে ক্রিকেটের একের পর এক দরজা খুলে গেল সৌরভের সামনে। অনূর্ধ্ব-১৯, ভারতের স্কুল দল, মুম্বইয়ের কৈলাশ ঘাটানির স্টার ক্লাবের হয়ে ইংল্যান্ড সফর। সবমিলিয়ে ভালোই চলছিল সৌরভের ক্রিকেটীয় যাত্রা।

  • 4/13

 ১৯৮৯-৯০ মরশুমে বাংলার রনজি দলে ডাক পেলেন সৌরভ। নেটে যথেষ্ট ভালো পারফরম্যান্স করলেও বাংলার চূড়ান্ত একাদশে কিছুতেই আসতে পারছিলেন না। আসবেনই বা কী করে? তখন অরুণ লাল, অশোক মালহোত্রা, প্রণব রায়, রাজা বেঙ্কট এবং দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় দুরন্ত ফর্মে ব্যাট করছেন। ইডেনে রনজি ফাইনাল। প্রতিপক্ষ দিল্লি। ম্যাচের আগের দিন সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তাঁর একজন জোরে বোলার লাগবে। নাম একটাই, সৌরভ। কিন্তু, বসবে কে? অবশেষে স্নেহাশিসকে বসিয়েই সৌরভকে বাংলার দলে নেওয়া হল। সেই ম্যাচে স্নেহাশিস খেললে আজকের ছবিটা একেবারেই আলাদা হতে পারত। কিন্তু, এই ফাইনালে জিতলেই জাতীয় ক্রিকেট দলে অনায়াসে জায়গা করে নিতে পারতেন স্নেহাশিস। কিন্তু, শেষপর্যন্ত তা আর হয়নি।

  • 5/13

এরপরের ইতিহাস তো সকলেরই জানা। সালটা ১৯৯২ ভারতের সিনিয়র ক্রিকেট দলের হয়ে প্রথম অস্ট্রেলিয়া সফর। ত্রিদেশীয় একদিনের সিরিজ়ে সৌরভ মাত্র ৩ রান করেছিলেন। এরপরই তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে, সৌরভের মধ্যে ঔদ্ধত্য থাকার কারণেই তাঁকে জাতীয় দলে জায়গা দেওয়া হয়নি। এমনকী, 'মহারাজ' নাম নিয়েও চলে বিভিন্ন ধরনের রসিকতা।

  • 6/13

চারবছর পর আবারও ভারতের বিদেশ সফর। ভারতীয় ক্রিকেট দলে একজন অলরাউন্ডার হিসেবে জায়গা পেয়েছিলেন সৌরভ। এরপর লর্ডসের বুকে অভিষেক টেস্টে শতরান। হ্যারি গ্রাহাম এবং জন হ্যাম্পশায়ারের পর সৌরভ তৃতীয় ক্রিকেটার যাঁর লর্ডসের মাঠে টেস্ট অভিষেক হয় এবং তিনি শতরান করেন। পরের টেস্ট ম্যাচ ছিল ট্রেন্ট ব্রিজে। সেখানেও সৌরভের ব্যাট থেকে বেরিয়ে আসে ১৩৬ রানের ঝকঝকে একটা ইনিংস। এরপর তাঁকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

  • 7/13

ইংল্যান্ড থেকে ফিরেই সৌরভ বিয়েটা সেরে ফেলেন। পাত্রী ডোনা রায়। সেইসময় রায় পরিবার এবং গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের মধ্যে বিস্তর ঝামেলা ছিল। সেসব পাত্তা না দিয়েই ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়ে করেন সৌরভ। ডোনা পেশায় ওড়িশী নৃত্যশিল্পী। প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী কেলুচরণ মহাপাত্রের কাছ থেকে নাচ শিখেছেন ডোনা। বর্তমানে দীক্ষামঞ্জরী নামে একটি নাচের স্কুলও আছে ডোনার।

  • 8/13

 সালটা ২০০০। ম্যাচ গড়াপেটার কাদায় ক্রমশ ডুবে যাচ্ছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। সেইসময় এমন একজনের হাতে ভারতীয় ক্রিকেটের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার কথা চলছিল যাঁর ভাবমূর্তি একেবারে পরিষ্কার। প্রথমে সচিনের কাছে এই প্রস্তাব গেলেও তিনি নিতে রাজি হননি। এরপরই সৌরভের হাতে তুলে দেওয়া হয় ভারতীয় ক্রিকেট দলের ব্যাটন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জয় দিয়েই শুরু হয় সৌরভের অধিনায়কত্বের যাত্রা।

  • 9/13

সৌরভের নেতৃত্বে ভারত ৪৯টি টেস্ট ম্যাচের মধ্যে ২১টিতে জয়লাভ করেছে। জয়ের শতকরা হার ৪২.৮৫। অন্যদিকে ১৪৬টি একদিনের ম্যাচে ৭৬টি ম্যাচ জয় করেছেন। জয়ের শতকরা হার ৫৩.৯০। এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, সৌরভের নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেট দল কখনও কোনও টি-২০ ম্যাচ খেলেনি। যদিও আইপিএল টুর্নামেন্টে তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং পুনে ওয়ারিয়র্স দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

  • 10/13

এবার আসা যাক সৌরভের রানের পরিসংখ্যানে। ১১৩টি টেস্ট ম্যাচে সৌরভ ৭,২১২ রান করেছেন। এরমধ্যে ১৬টি শতরান রয়েছে। অন্যদিকে ৩১১টি একদিনের ম্যাচে তিনি ১১,৩৬৩ রান করেছেন। শতরান ২২টি। টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান ২৩৯ এবং একদিনের ক্রিকেটে ১৮৩। এছাড়া বল হাতে টেস্ট ক্রিকেটে ৩২টি এবং একদিনের ক্রিকেটে ১০০টি উইকেট তিনি শিকার করেছেন।

  • 11/13

ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর প্রশাসক হিসেবেও যথেষ্ট দক্ষ ভূমিকা পালন করেছেন সৌরভ । ১৯৫৪ সালে ভিজ়িয়ানাগ্রামের মহারাজের পর সৌরভই দ্বিতীয় ভারতীয় ক্রিকেটার যিনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলেন। গতবছরই তাঁকে এই পদে অভিষেক করা হয়। এখনও পর্যন্ত সৌরভ ভারতীয় ক্রিকেটের হয়ে যা কাজ করেছেন, তাতে তাঁকে দেশের অন্যতম সেরা প্রশাসক বলতেও কেউ কুণ্ঠাবোধ করছে না। এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কার্যত সৌরভ একা হাতে আইপিএল ২০২০ আয়োজন করে ফেললেন। পাশাপাশি এও জানিয়ে দিয়েছেন, পরের বছর শুরুতেই ইংল্যান্ড ভারতের মাটিতে খেলতে আসছে।

  • 12/13

সম্প্রতি একটি পরিসংখ্যান থেকে সৌরভের মোট সম্পত্তির পরিমাণ জানা গেছে। সৌরভের মোট সম্পত্তির পরিমাণ আনুমানিক সাড়ে তিনশো কোটি টাকা। পাশাপাশি সৌরভের ব্র্যান্ড ভ্যালুও যথেষ্ট বেশি। ইতিপূর্বে ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করার পর ধারাভাষ্যকার হিসেবেও তিনি যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করেছেন। 

  • 13/13

ISL টুর্নামেন্টে ATK মোহনবাগানের সহ মালিক হওয়ার পাশাপাশি, সৌরভ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি। এই পদ তাঁর ব্র্যান্ড ভ্যালুয়েশনে যে আরও সাহায্য করবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সমীক্ষার আশা, আগামী বছর সৌরভের আর্থিক সমৃদ্ধি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। পাশাপাশি সৌরভের ব্যক্তিগত সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ৪৫ কোটি টাকা, বিলাসবহুল গাড়ি সাত কোটি টাকা, বিসিসিআই-এর থেকে পারিশ্রমিক পাঁচ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ড এন্ডোর্সমেন্ট থেকে তিনি বছরে আনিমানিক ২-৩ কোটি টাকা উপার্জন করেন।

Advertisement
Advertisement