ফের গোল অধিনায়কের। কিরঘিজস্তানকে (Kyrgyzstan National Football Team) ২-০ গোলে হারিয়ে ত্রিদেশীয় ফুটবল প্রতিযোগিতায় (Tri-Nation Football Tournament) জয় ব্লু টাইগার্সদের (Blue Tigers)।
মঙ্গলবার ইম্ফলের (Imphal) খুমান লাম্পাক স্টেডিয়ামে (Khuman Lampak Stadium), মুখোমুখি হয় ভারত (Indian Football Team) বনাম কিরঘিজস্তান (Kyrgyzstan Football team)। ত্রিদেশীয় ফুটবল প্রতিযোগিতায় এটি ছিল সুনীলদের (Sunil Chhetri) দ্বিতীয় ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে মায়ানমারকে (Myanmar) ১-০ গোলে হারিয়ে জয় পায় ভারত। গোল করেন অনিরুদ্ধ থাপা (Anirudh Thapa)। প্রসঙ্গত, এই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতার আসর বসে ইম্ফলের এই মাঠে। আর সেই স্টেডিয়ামে, জাতীয় দলের জার্সি গায়ে গোল করে ইতিহাসে নাম তুললেন অনিরুদ্ধ থাপা, সন্দেশ ঝিঙ্গান (Sandesh Jhingan) এবং সুনীল ছেত্রী।
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলের কোচ কে? দৌড়ে হাবাসও, সম্ভবত বাদ গাম্বাউ
ম্যাচের শুরু থেকেই চাপ বজায় রাখে ভারত। যদিও কিছু সময়ে পাল্টা আক্রমণে উঠে আসে কিরঘিজস্তানও। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে কোচ ইগোর স্টিমাচ (Igor Stimach) জানান, এই টুর্নামেন্টকে তারা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে চান। অন্যদিকে অধিনায়ক সুনীল এই ম্যাচের আগে বলেন, কিরঘিজস্তানকে তারা সমীহ করছেন। কারণ, এই দলের ফুটবলাদের গতি অনেক বেশি। কিন্তু ম্যাচের পর বোঝা গেল যে, ব্লু টাইগার্সরা রীতিমতো হোমওয়ার্ক করেই মাঠে নামেন। যদিও ম্যাচের কিছু সময় খেলা বেশ ঢিমেতালেই হয়েছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যে, মাঠে দর্শকদের (Supporters) উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মোট ৩০০০০ ফুটবলপ্রেমী (Football Fans) মাঠে বসে উপভোগ করলেন এই ম্যাচ। অন্যদিকে ইম্ফল স্টেডিয়াম স্মরণ করল সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার তুলসীদাস বলরামকে (Tulsidas Balaram)।
রক্ষণে সন্দেশ ঝিঙ্গান নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবেই পালন করেছেন। অন্যদিকে সুরেশ (Suresh Wangjam), ছাংতে (Lallianzuala Chhangte) এবং জিকসন সিং (Jeakson Singh) অনেক বেশি সপ্রতিভ ছিলেন। ম্যাচের ১০ মিনিটে ব্র্যান্ডন ফারনান্দেজের (Brandon Fernandes) ফ্রিকিক শরীর ছুঁড়ে সেভ করেন কিরঘিজস্তান গোলরক্ষক (Goalkeeper) এরঝান টকোটায়েভ (Erzhan Tokotoyev)। এই ম্যাচে কিরঘিজস্তান দল সাজায় ৪-২-৩-১ ছকে। অন্যদিকে ভারত গেমপ্ল্যান তৈরি করে ৪-৩-৩ ছকে। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে সহজ সুযোগ মিস করে কিরঘিজস্তানও। ম্যাচের ডেডলক ভাঙ্গেন সেই সন্দেশ ঝিঙ্গান। ঠিক ৩৪ মিনিটে, ফারনান্দেজের ফ্রিকিক থেকে নেওয়া শটে পা ছুঁইয়ে বুদ্ধিদীপ্ত গোল করেন ঝিঙ্গান। প্রথমার্ধেই ভারত এগিয়ে যায় ১-০ ব্যাবধানে।
আরও পড়ুন: মাঝরাতে আবার ইতিহাস, ১০০ তম গোল মেসির, হ্যাট-ট্রিকও
দ্বিতীয়ার্ধের একটা বড় সময় গোলবিহীন ম্যাচ এগোলেও, পরিস্থিতি বদলে যায় শেষ কোয়ার্টারে। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে টপ বক্সে ভারতের নাওরেম মহেশ সিংকে (Naorem Mahesh Singh) ফাউল করেন কিরঘিজস্তানের ডিফেন্ডার ড্যাভিডভ নিকোলাই (Davidov Nikolai) এবং পেনাল্টি (Penalty) পায় ভারত। সেই পেনাল্টি কিক থেকেই ৮৪ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। হেডস্যার স্টিমাচ মোট ছটি পরিবর্তন করেন দলে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অনেক ফুটবলারকেই দেখে নিলেন তিনি।
ভারত জয়ী ২-০ গোলে। পরপর দুটি ম্যাচ জয়ের ফলে, ছয় পয়েন্ট নিয়ে এবং ক্লিনশিট (Clean sheet) রেখেই টুর্নামেন্ট শেষ করল ভারত। টুর্নামেন্টের সেরা নির্বাচিত হয়েছেন লালিনজুয়ালা ছাংতে। অন্যদিকে ফুটবলের উন্নতির (Football Development) স্বার্থে, মণিপুরের (Manipur) মুখ্যমন্ত্রী (CM) বীরেন সিং-এর (Biren Singh) সঙ্গে মৌ-চুক্তি সাক্ষর করলেন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি (AIFF President) কল্যাণ চৌবে (Kalyan Chaubey)। ম্যাচের পর অধিনায়ক সুনীল সহ গোটা দল স্টেডিয়ামের দর্শকদের ধন্যবাদ জানায় এই বিপুল পরিমাণ জনসমর্থনের জন্য। কাপ সেলিব্রেশনের সময় অধিনায়ক নিজে পিছনে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের হাতে কাপ তুলে দেন, আবারও উদাহরণ তৈরি করলেন “ক্যাপ্টেন, লিডার, লেজেন্ড।“