চরম দারিদ্র। তবুও স্বপ্ন দেখা ছাড়ছে না পূর্ব বর্ধমানের সোনালী সোরেন। ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ রাজ্যের সেরা মহিলা ফুটবলার হয়েছিলেন সোনালী। তাঁর মা-বাবাও ফুটবলার ছিলেন। তাঁদের অনুপ্রেরণাতেই ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সোনালী। তাঁর লক্ষ্য অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের জার্সি পরা। বর্তমানে জাতীয় ক্যাম্পে রয়েছে সোনালী। সম্প্রতি নেপেলসে গিয়ে খেলার আমন্ত্রণ পেয়েছে সে।
তাঁর কোচ রঘুনাথ মুর্মু আজতক বাংলাকে বলেন, ''ওর খেলার প্রতি আগ্রহ ছোট থেকেও খুব বেশী। যা বলা হত শুনে চলত। এখনও অনেকটা পথ যেতে হবে ওকে। তবে ও খুব ফোকাসড একটা মেয়ে।''
ছোটবেলায় ফুটবল খেলতে গিয়ে গ্রামের নানা মানুষের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে সোনালীকে। কী ভাবে সেই সব বাধা পেরিয়ে নিজের স্বপ্নের দিকে এগিয়ে চলেছে সে সেই কথাও জানালেন তার কোচ। রঘুনাথ বলেন, ''অনেকেই নানা কথা বলত। ছোট প্যান্ট পরে ফুটবল খেলা নিয়ে। আমাকেও অনেক কথা শুনতে হয়েছে। ওর বাবা-মাকেও অনেকে অনেক কিছু বলেছে। আমি শুধু ওর বাবা-মা-কে বোঝাতাম সাফল্য আসলে দেখবে সবার মুখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর সেটাই আজ ও করে দেখিয়েছে। এখন আর আমাকেও কেউ বাজে কথা বলে না।''
আরও পড়ুন: ইমামির হাতে শুধু ফুটবল শর্ত, ক্রিকেটসহ সব দেখবেন ক্লাব কর্তারা
কলকাতায় অনুষ্ঠিত কলকাতা-নেপেলস ফ্রেন্ডশিপ কাপে নেপেলস প্রতিনিধিদের নজরে আসে সোনালী। টুর্নামেন্টের সেরা ফুটবলার নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি সবচেয়ে বেশী গোল করে দলকেও চ্যাম্পিয়ন করে সোনালী।
কৃষক পরিবার থেকে উঠে আসা সোনালী ইস্টবেঙ্গল দলেও খেলেছে। মাত্র ৯ বছর বয়স থেকে ফুটবল খেলা শুরু করেছে সোনালী। সৃজা ইন্ডিয়া অ্যাকাডেমিতে রঘুনাথ মুর্মুর কাছেই ফুটবল শিখতে শুরু করে সে। সেখান থেকে প্রয়াত কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো মারাদোনার শহর নেপেলসে গিয়ে খেলার আমন্ত্রণ পেয়েছে সোনালী। সেখানে প্রশিক্ষন নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে সে। এই খবরে দারুণ খুশি তাঁর কোচ রঘুনাথ। তিনি বলেন, ''ও কিন্তু বাঁ পায়ের ফুটবলার। লেফট উইংয়ে খেলে। আসলে আমি নিজেও ফুটবলার ছিলাম। তবে স্বপ্ন সফল করতে পারিনি। সুনীতার মত মেয়েদের দিয়েই নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।''