দেশের বিখ্যাত টু-হুইলার নির্মাতা কোম্পানি Bajaj Auto এবার নতুন ধামাল দেখালো। তারা এমন কাজ করে দিয়েছে যা গোটা দুনিয়ায় প্রথম বাজাজ অটো। পৃথিবীর প্রথম সিএনজি বাইক বাজাজ ফ্রিডম Bajaj Freedom Auto অফিসিয়ালি লঞ্চ করে দিয়েছে। আকর্ষণীয় লুক এবং স্পোর্টি ডিজাইন-এ তৈরি এই বাইকের শুরুর দাম ৯৫ হাজার টাকা।
এই ঐতিহাসিক মোটরসাইকেল লঞ্চের উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সড়ক এবং পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গডকরি উপস্থিত ছিলেন। তিনি এই বাইককে গেম চেঞ্জার বলে অভিহিত করেছেন।
প্রথম নজরে এই বাইক দেখলে আপনি যে প্রশ্ন উঠবে, তা হল এর সিএনজি সিলিন্ডার এই বাইকে কোম্পানি কোথায় লাগিয়েছে? এ বিষয়টি তারিফ করেছেন মন্ত্রী নীতিন গডকরি।
বাজাজ অটো দাবি করেছে, যেই বাইকের সেগমেন্টের সবচেয়ে লম্বা সিট ৭৮৫ এমএম দেওয়া হয়েছে এবং ফ্রন্টে ফিউল ট্যাঙ্কে অনেকটাই কভার করবে।
কোম্পানি বলেছে এই বাইক ইন্ডাস্ট্রিতে ১১ টি আলাদা আলাদা টেস্ট পাশ করেছে। যা এটিকে সম্পূর্ণ নিরাপদ বাইকে পরিণত করেছে। এই বাইকটিকে ট্রাকের নীচে ফেলে টেস্ট করা হয়েছে। বাজাজের দাবি যে এই বাইক আলাদাভাবে সিএনজি ফিট করা হয়নি। এটি সম্পূর্ণভাবে কোম্পানির রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে তৈরি করা হয়েছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রথম সিএনজি বাইক বাজাজ ফ্রিডমে কোম্পানি ১২৫ সিসি ক্ষমতা পেট্রোল ইঞ্জিন দিয়েছে।
এর মধ্যে কোম্পানি ২ লিটারের পেট্রোল ট্যাঙ্ক এবং ২ কেজির সিএনজি ট্যাঙ্ক দিয়েছে। কোম্পানির দাবি যে বাইক ফুল ট্যাংক পেট্রোল প্লাস সিএনজি তে ৩৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ড্রাইভিং রেঞ্জ দেবে।
এই বাইক পেট্রোল এবং সিএনজি দুটো মোডেই ড্রাইভ করা যাবে। এর জন্য কোম্পানি হ্যান্ডেল বারের উপর সুইচ দিয়েছে। যার মধ্যে মোড চেঞ্জ করার বাটন দেওয়া থাকবে। অর্থাৎ সুইচ টিপলেই বাইকের মোড পেট্রোল থেকে সিএনজি বা সিএনজি থেকে পেট্রোলের বদলে যাবে।
বাইকে সিএনজি সেন্টার দেওয়া হয়েছে তার ওজন ১৬ কেজি সেখানে সিএনজি ভরার পর এটি ১৮ কেজি ওজন হয়ে যাবে। বাজাজ ফ্রিডমের মোট ওজন ১৪৭ কেজি, যা সিটি ১২৫ এক্স এর চেয়ে ১৬ কেজি বেশি।
ডিজাইনের বিষয়ে বলতে গেলে বাজাজ ফ্রিডম ১২৫ কেজি মিনিমাম এর মধ্যে ফুল এলইডি হেডলাইট এবং টেল লাইটের সঙ্গে হ্যালোজেন ইন্ডিকেটর দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি মনোক্রম এলসিডি ডিসপ্লের সঙ্গে ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার পাওয়া যাবে যা ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি কে সাপোর্ট করে।
বাজাজের ফিউল ট্যাংকের উপর কমন ফ্ল্যাপ দেওয়া হয়েছে যাতে ওপেন করলে আপনি পেট্রোল এবং সিএনজি দুটো রিফিলই ভর্তি পারবেন।
bajaj ফ্রিডম এ লাগানো সিএনজি পেট্রোলিয়াম এন্ড এক্সক্লুসিভ সেফটি অর্গানিজেশন থেকে আধিকারিক সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। যা সরকারি সুরক্ষা মান কে সুনিশ্চিত করে।
Bajaj ফ্রিডমকে কোম্পানি মোট তিনটি ভেরিয়েন্টে পেস্ট করা হয়েছে। যা ডিস্ক ব্রেক এবং ড্রাম ব্রেক দুটো ব্রেকিং সিস্টেমের সঙ্গেই পাওয়া যাবে।
এই বাইক মোট সাতটি রংয়ে বিক্রির জন্য বাজারে এনেছে। যার মধ্যে ক্যারিবিয়ান ব্লু, ইবনি ব্ল্যাক, গ্রে পিউটার, গ্রে ব্ল্যাক, রেসিং রেড, সাইবার হোয়াইট, পিউটার গ্রে, ইয়ালো ইবনি ব্ল্যাক রেড কালার শামিল রয়েছে।
বাজাজ ফ্রিডমের ভেরিয়েন্ট এবং তার দাম
বাজাজ ফিডম ড্রাম ৯৫ হাজার টাকা
বাজাজ ফ্রিডম ড্রাম এলইডি ১ লাখ ৫ হাজার টাকা
বাজার ফ্রিডম ডিস্ক এলইডি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা।
(এগুলি সবই এক্স শোরুম দাম)
একসঙ্গে দুটি ফিউল ভ্যারিয়েন্টে দেওয়ায় রাস্তা চলার জন্য বেশি কনফিডেন্স দেবে এই বাইক বলে দাবি বাজাজের।
এর মডেলটি অভিনব ডিজাইন করা হয়েছে। এর সঙ্গে পুরনো বাইকগুলির তেমন মিল নেই। জেনারেশন ওয়াইয়ের এই মডেল পছন্দ হবে বলে আশাবাদী নির্মাতারা।
এই ইঞ্জিন 9.5 পি এস এর পাওয়ার এবং ৯.৭ এ নামের পিক টর্ক জেনারেট করে। এর ইঞ্জিনের পাওয়ার আউটপুটে কোন রেগুলার কম্পিউটার পেট্রোল বাইকের মত দেওয়া হয়েছে।
মাইলেজের কথা বলতে গেলে এই বাইক ১ কেজি সিএনজিতে ১০২ কিলোমিটার এবং এক লিটার পেট্রোলের ৬৭ কিলোমিটার মাইলেজ দেয়।
সিএনজি ট্যাঙ্ক এই সিটের নিচেই লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে সবুজ রঙের সিএনজি এবং অরেঞ্জ কালারের পেট্রোলের চিহ্ন ইঙ্গিত করে।
বাজাজ ফ্রিডম ১২৫-এর রানিং কস্ট যে কোনও পেট্রোল মডেলের তুলনায় অনেক কম। ডেলি ইউসের সময়ে এই অপারেশন কস্ট প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ কম হবে।
এই হিসেবে এই বাইক ইউজের জন্য বাহন মালিকরা আগামী পাঁচ বছরে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বাঁচাতে পারবেন।