সোনার ছেলে নীরজ চোপড়া। অলিম্পিক্সে জ্যাভলিনে সোনা জিতে এখন গোটা দেশের নয়নের মনি তিনি। তবে এর আগে জাকার্তায় এশিয়ান গেমসে সোনা জিতেছিলেন তিনি।
১৯৯৭ সালে ২৪ ডিসেম্বর হরিয়ানায় জন্ম নীরজের। ছোটোবেলায় কার্যত পেটুক ছিলেন তিনি। খেতে খুব ভালোবাসতেন। নীরজ প্রথম নজরে আসেন ২০১১ সালে। পানজাপটের শিবাজি স্টেডিয়ামে সেদিন জগিং করছিলেন নীরজ। তাঁকে সেখানে দেখেন আর এক পেশাদার জ্যাভলিন থ্রোয়ার তথা কোচ জয়বীর।
হরিয়ানার খান্ডারাতে বাড়ি নীরজের। তাঁর বাড়ি থেকে পানজাপটের শিবাজি স্টেডিয়ামের দূরত্ব ছিল প্রায় ১৭ কিলোমিটার। অতটা পথ পেরিয়ে নিয়মিত প্র্যাক্টিসে আসতেন নীরজ।
তবে নীরজ প্র্যাক্টিসে আসা শুরু করেছিলেন শরীরের গঠন ঠিক করতে। ওজন কমানোর জন্য। কারণ, মাত্র ১৩ বছর বয়সে তাঁর ওজন ছিল ৮০ কেজি। পানজাপটের শিবাজি স্টেডিয়ামে তাঁকে নিয়ে আসেন নীরজের কাকা। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, 'স্কুলে অন্য বাচ্চারা মোটা বলে রাগাত নীরজকে।'
সেখানে প্র্যাক্টিস করতে করতে SAI-এ যোগ দেন নীরজ। তখন তিনি ইতিমধ্যে জ্যাভলিন থ্রোয়িং শুরুও করে দিয়েছেন। কিন্তু, বাড়ির লোক সেই বিষয়ে কিছুই জানতেন না।
নীরজের কাকা ভীম চোপড়া বলেন, 'জ্যাভলিন থ্রোয়িং নিয়ে আমাদের কোনও ধারণা ছিল না। আমাদের পরিবারের কেউ জ্যাভলিন থ্রো করেননি কোনওদিন। নীরজ করছে তাও জানতাম না। একদিন স্থানীয় কাগজে ওর ছবি বের হয়। তখন আমরা প্রথম জানতে পারি।'
পানিপথ সাই সেন্টারে নীরজকে জ্যাভলিনের প্রাথমিক পাঠ দেন জয়বীর। তিনি বলেন, 'ওজন কমানোর জন্য মাঠে তখন আসন নীরজ। একদিন ওকে আমি বলি, জ্যাভলিন থ্রো করো। ও করে । আর আমি দেখে অবাক হয়ে যায়। প্রশিক্ষণ ছাড়া সেদিন ও এত ভালো থ্রো করেছিল যে, আমি ওকে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করি।'
বিগত ৫ বছরে একাধিক পদক জিতেছেন নীরজ। ২০১৮ সালে জাকার্তায় কমনওয়েলথ গেমস ও এশিয়ান গেমসে সোনা জিতেছেন নীরজ।
নীরজ হরিয়ানার কৃষক পরিবারের সন্তান। অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা স্বচ্ছল নয়। তবে নীরজের বাবা জানান, 'ছেলের মধ্যে সম্ভাবনা দেখে আমরা কোনওদিন ওকে অভাব বুঝতে দিইনি। আজ ও আমাদের মুখ উজ্জ্বল করল।'