পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে মূলত, করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার উপরেই আপাতত জোর দেওয়া হচ্ছে। কারণ, কেভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার পর প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গিয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা এ রাজ্যে নেহাত কম নয়।
মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে কেন্দ্র থেকে এ রাজ্যে যে পরিমাণ করোনা টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ এসে পৌঁছেছিল, তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট ছিল না। টিকার জোগানের অভাবে অ্যাপ থেকে রেজিস্ট্রেশনের ডেট পাচ্ছেন না অনেকেই। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও টিকার দ্বিতীয় ডোজ কবে নেওয়া যাবে, সে বিষয়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে লক্ষাধিক রাজ্যবাসীর।
সূত্রের খবর, মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে এ রাজ্যে জোগানের সমস্যা দেখা দিয়েছিল প্রধানত কেভিশিল্ডের ক্ষেত্রে। জোগানের ব্যাপক ঘাটতির ফলে কেভিশিল্ডে প্রথম ডোজ নেওয়ার পর প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ডেট পাচ্ছিলেন না অনেকেই।
কিন্তু বর্তমানে রাজ্যে কেভিশিল্ডের জোগান পর্যাপ্ত। তবু কেভিশিল্ডের ডোজ টিকাকেন্দ্র থেকে স্টোরে ফেরৎ যাচ্ছে টিকা নেওয়ার লোকের অভাবে! শুনতে অবাক লাগলেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কেভিশিল্ডের ক্ষেত্রে নয়া কেন্দ্রীয় নীতির ফলে।
বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ মেনে কেন্দ্রীয় নির্দেশের ফলে কেভিশিল্ডের দু’টি ডোজের মধ্যে ব্যবধান বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। আগে কেভিশিল্ডের দু’টি ডোজের মধ্যে ব্যবধান ছিল ৪২ থেকে ৫৬ দিনের, বর্তমানে যা বেড়ে অন্তত ৮৪ দিন করা হয়েছে।
নতুন নিয়মে কেভিশিল্ডের দু’টি ডোজের মধ্যে ব্যবধান বেড়ে যাওয়ার ফলে এখন অনেকেরই এই টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে ঢের দেরি! তাই বাধ্য হয়েই কেভিশিল্ডের ডোজ টিকাকেন্দ্র থেকে স্টোরে ফেরত পাঠাতে হচ্ছে।
নতুন নিয়মে কেভিশিল্ডের দু’টি ডোজের মধ্যে ব্যবধান বেড়ে যাওয়ায় কেভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষায় থাকা রাজ্যবাসীর তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে, যা চিন্তা বাড়াচ্ছে রাজ্য প্রশাসনের।
কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডেই করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। করোনার গণটিকাকরণের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, এ রাজ্যের যে সমস্ত বাসিন্দা ৪ মার্চের আগে কেভিশিল্ডের প্রথম ডোজ নিয়েছেন তাঁদের টিকার দ্বিতীয় ডোজও নেওয়া হয়ে গিয়েছে পুরনো নিয়মে, ৩০ এপ্রিলের মধ্যেই।
এ দিকে মার্চের ৮-১০ তারিখে যাঁরা প্রথম ডোজ নিয়েছেন নতুন নিয়মে তাঁদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার এখনও সময় আসেনি। ফলে এই মুহূর্তে কেভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তবে কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে এমন কোনও সমস্যা নেই। সব মিলিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ মেনে কেন্দ্রীয় নির্দেশের ফলে রাজ্যের করোনা টিকাকরণের কাজ আংশিক থমকে গিয়েছে। একইসঙ্গে কেভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার লম্বা তালিকার চাপ দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে রাজ্যে করোনার গণটিকাকরণের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের।