ভোজনরসিক বাঙালির পাতে নানা পদে, নানা স্বাদে ঘুরে ফিরে আসে পোস্ত। আলু পোস্ত, পটল পোস্ত, পোস্ত বাটা, পোস্তর বড়া ছাড়াও মাছ-মাংসের নানা পদে স্বাদ বদলে দিতে এর জুড়ি মেলা ভার!
তবে বাঙালির অতি প্রিয় পোস্ত এখন মহার্ঘ্য! দাম বাড়তে বাড়তে সাধের পোস্ত এখন প্রায় ১,৮০০ টাকা থেকে ২,০০০ টাকা কিলো! অর্থাৎ, মাত্র ১০০ গ্রাম পোস্ত কিনতে কড়কড়ে ২০০ টাকা বেরিয়ে যাবে।
কিন্তু এত দাম দিয়ে রসনার তৃপ্তিতে যা কিনে আনছেন, তা খাঁটি তো! এ প্রশ্ন শুনে হয়তো অনেকেই বলবেন, পোস্তর দানার সঙ্গে সুজির দানা মিশিয়ে ওজনে ঠকানোর রীতি নতুন কিছু নয়। খালি চোখে দেখে বোধার উপায় থাকে না।
কিন্তু পোস্ত কিনতে গিয়ে মোটা দাম দিয়ে ঘাসের বীজ কিনে খাচ্ছেন না তো? এবার নিশ্চয়ই চমকে উঠলেন! অবিশ্বাস্য মনে হলেও পোস্তর নামে ঘাসের বীজের দানাই সুন্দর মোড়কে বিক্রি হচ্ছে বাংলায়।
ঘাসের বীজের দানা, যা দেখতে অনেকটা পোস্তর মতোই, তবে একটু বেশি কালচে ধরনের। পাখির খাবার এখন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর পাল্লায় পড়ে পোস্ত হিসাবে উঠছে সাধারণ মানুষের খাবার পাতে।
দুর্গাপুর, আসানসোলের শহরতলি থেকে গ্রামগঞ্জে নকল পোস্ত প্যাকেটে করে বিকোচ্ছে ‘শুদ্ধতার গ্যারেন্টি’র সঙ্গে! পোস্তর প্যাকেটে কী আছে তা জানেন না অনেক খুচরো ব্যবসায়ীও। সেখানে সাধারণ মানুষ চিনবেন কী করে!
প্রাচীন পন্থায় পোস্তর দানার সঙ্গে সুজির দানা মিশিয়ে ওজনে ঠকানো হতো ক্রেতাদের। এখন সুজির বদলে ৩০-৪০ টাকা কেজি দরের ঘাসের বীজ ভাঙা মিশিয়ে বাজারে ছাড়ছেন একদল অসাধু কারবারী।
দুর্গাপুরের বেনাচিতি, বীজুপাড়া এলাকার মুদি দোকানের কারবারীরাও এই ভেজাল পোস্ত নিয়ে বেজায় চিন্তুত। কারণ, তাঁদেরও একাংশর অভিযোগ, ১,৮০০ টাকা থেকে ২,০০০ টাকা কিলো দরে কেনা মাল যদি অধিকাংশই ঘাসের বীজ ভাঙা হয়, তাহলে তো তাঁরাও ঠকছেন!
এলাকায় পোস্তর এই ব্যাপক ভেজালের কারবার ঠেকাতে এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টে খবর দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে মহকুমা প্রশাসনিক স্তরে। একাধিক অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়ে দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক নিজে উদ্যোগী হয়েছেন।