বিগত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা করোনা অতিমারীর জেরে গোটা বিশ্ব আর্থিক সঙ্কটে ভুগেছে। ভারতেও একই হাল! শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও বিপর্যস্ত!
চরম আর্থিক সঙ্কটে পরিস্থিতি সামাল দিতে সব রাজ্যকেই ঋণ নিতে হয়েছে। কিন্তু বিগত এক বছরে রাজ্যগুলির ধারের পরিমাণ হিসেব করলে দেখা যাবে অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে পশ্চিমবঙ্গের ঋণের বহর অনেকটাই কম!
গত বছর করোনা অতিমারী আর সুপার সাইক্লোন আমফানের জোড়া ধাক্কা সামলেও ঋণের অঙ্ক তেমন বাড়েনি বাংলার। আমফানের দাপটে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়নি। সরকারি ত্রাণও মিলেছে কম-বেশি! সব সামলেও ঋণের বহরের নিরিখে দেশের অনেক রাজ্যের থেকেই ভাল এ রাজ্যের অবস্থা।
দেশের অন্যতম একটি ক্রেডিট রেটিং সংস্থা Care Ratings রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI) থেকে সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে গত বছর রাজ্যগুলির ঋণের বহরের একটি পরিসংখ্যান পেশ করেছে। ওই পরিসংখ্যানেই এই তথ্য সামনে এসেছে।
ক্রেডিট রেটিং সংস্থা Care Ratings-এর প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষের হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ ঋণ নিয়েছে মোট ৫৯ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। ২০১৯-২০২০ অর্থবর্ষে এই ঋণের অঙ্ক ছিল ৫৬ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এক বছরে রাজ্যের ঋণের বহর বেড়েছে মাত্র ৫ শতাংশ।
Care Ratings-এর প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষের হিসাবে তামিলনাড়ু ঋণ নিয়েছে মোট ৮৭ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। কর্ণাটকের মোট ঋণের অঙ্ক বেড়ে হয়েছে ৬৯ হাজার কোটি টাকা।
এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষের হিসাবে উত্তরপ্রদেশ ঋণ নিয়েছে মোট ৭৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ওই অর্থবর্ষে মহারাষ্ট্রের ঋণের অঙ্ক বেড়ে হয়েছে মোট ৬৯ হাজার কোটি টাকা।
Care Ratings-এর প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষের ঋণের বহরের হিসাবে ওড়িশা, ত্রিপুরা, অরুণাচল প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ এবং মণিপুরের অবস্থা এ রাজ্যের চেয়ে অনেকটাই ভাল। এই রাজ্যগুলির মোট ঋণের পরিমাণ, এক বছরে নেওয়া মোট ঋণের অঙ্ক— সব ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি বাংলার চেয়ে ভাল।
এ বারে বিধানসভা নির্বাচনী প্রচারে যেখানে বার বার বাংলার ঋণের বোঝা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, ভিন রাজ্য থেকে এখানে প্রচারে এসে এ রাজ্যের বিপুল ঋণের অঙ্ক নিয়ে সরব হচ্ছেন, তখন এই পরিসংখ্যান বাংলার মানুষের কাছে এ রাজ্যের বাস্তব চিত্রটা কিছুটা তুলে ধরতে পারে।