পৃথিবী পেঁয়াজের মতো আলাদা আলাদা অংশে বিভক্ত। বাইরে পাতলা খোসার মতো এবং তারপর স্থিতিস্থাপক ম্যানটেল আউটডোর এবং এরপর তরল আউটার কোর। এই পদার্থের ভিতরে বৈজ্ঞানিকেরা দুটি বড় দাগ বা ব্লগ খুঁজে পেয়েছেন। যা পৃথিবীর দুটি আলাদা আলাদা বিপরীত দিকে অবস্থিত।
এই দাগ অর্থাৎ ব্লব সাইন্টিস্টরা লো শিয়ার ভেলোসিটি প্রভিন্সেস বলে অভিহিত করেছেন। এই দুটি দ্বীপের আকার এত বড় যে তা মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা ১০০ গুণ বেশি। উঁচু একটি ব্লব আফ্রিকা মহাদেশকে নীচে এবং অন্যটি প্রশান্ত মহাসাগরের নীচে রয়েছে।
বৈজ্ঞানিকরা যখন এই ব্লব-এর স্টাডি করতে শুরু করেন। তখন তারা অবাক হয়ে যান, বৈজ্ঞানিকেরা ভূকম্পীয় তরঙ্গ মাপার মেশিন এর উপযোগ করেন, এর ভিত্তিতে যখন তারা দুটি ব্লবের নকশা বানানো শুরু করেন, তখন আচম্বিত হয়ে যান। এই দুটি ব্লব আকারে এবং অত্যন্ত জটিল। আসলে এর কোনও আকার নেই।
এখনও পর্যন্ত এই ব্লগের বিষয়ে কোনও রকম খোঁজখবর ছিল না। খুব কম তথ্য জানা ছিল। অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ আর্ট এবং স্পেস এক্সপ্লোরেশন বিভাগের সাইন্টিস্ট কিয়াং ওয়ান এবং মিংমিং লি তারা স্টাডি করেন এবং এই দুই বিজ্ঞানী জিয়োডায়নামিক মডেলিং করেন। এরপরই তারা এই রিপোর্ট নেচার জিও সায়েন্স জার্নালে প্রকাশ করেন।
কিয়াং এবং মিংমিং নিজের স্টাডিতে খুঁজে পান দিয়ে ব্লব এর উচ্চতা ও ঘনত্বতে অনেক পার্থক্য রয়েছে। দুজনে এর উচ্চতা খুঁজে বের করেন। তো জানা যায়, যে এটি মাউন্ট এভারেস্টে চেয়ে ১০০ গুণ বেশি উঁচু। আসলেই চারিদিকে উপস্থিত স্থিতিস্থাপক পদার্থ তার উচ্চতা নিয়ন্ত্রিত করে।
দুই বিজ্ঞানী যখন রিসার্চ শুরু করেন, যখন তারা তাদের তথ্য পান। আফ্রিকা মহাদেশের নীচে একটি মজুত ব্লগ এবং প্রশান্ত মহাসাগরের নীচে মজুত একটি ব্লগ হাজার কিলোমিটার উঁচু। আফ্রিকান ব্লব এর ঘনত্ব কম। যেখানে প্রশান্ত মহাসাগরের নীচে মজুত ঘনত্ব অনেক বেশি। দুই বিজ্ঞানী জানিয়েছেন যে, দুটি ব্লবের আকার তাদের উচ্চতার ওপর কোনও রকম প্রভাব ফেলে না।
আফ্রিকার এই ব্লব কিছু সময় থেকে উপরের দিকে বৃদ্ধি পাচ্ছে যার কারণে আফ্রিকা মহাদেশের এবং তার আশপাশের টোপোগ্রাফির ওপর তার প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া পূর্ব আফ্রিকার তীব্র আগ্নেয়গিরির গতিবিধিও হচ্ছে। এর ফল এখন ভূগর্ভ বিজ্ঞানীদের নতুন ভাবে চিন্তা করতে বাধ্য করেছে। কারণ আফ্রিকার নীচে মজুত অনিয়ন্ত্রিত লাগাতার এই এলাকার গ্র্যাভিটি টপোগ্রাফি আগ্নেয়গিরির গতিবিধির ওপর টেকটোনিক প্লেটের উপর প্রভাব ফেলছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে আমাদের ভূকম্পীয় ডিটেল বিশ্লেষণ এবং জিও ডায়নামিক মডেল জানাচ্ছে যে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আকৃতির জিনিস এটি। এর চেয়ে বড় পৃথিবীর উপর আর কিছু নেই। অবাক হওয়ার বিষয় এটা যে এত বড় আকৃতি লাগাতার বুঝতে চেষ্টা করে যাওয়া হচ্ছে এটি এতো বড় যে এর সম্পর্কে জানতে খুব মুশকিলে পড়তে হচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো আরও বেশি কিছু জানা যাবে।