"বাতাসে বহিছে প্রেম, নয়নে লাগিল নেশা..."। পৃথিবীর হাওয়ায় আপাতত বসন্তের ছোঁয়া লেগেছে। কিন্তু, এই পৃথিবীই তো আর শেষ কথা নয়। এর বাইরেও 'মহাবিশ্বে, মহাকাশে' একটা বিশাল জগৎ রয়েছে। সেই জগৎ আমাদের কাছে একেবারেই অজানা। আর অজানা জিনিসের প্রতি মানুষের আগ্রহ তো সেই সভ্যতার আদিকাল থেকে চলে আসছে। সম্প্রতি NASA মঙ্গল গ্রহের একটি ভিডিও শেয়ার করেছে। সেই ভিডিওয় শোনা যাচ্ছে, লাল গ্রহে হাওয়ার শব্দ। কেমন সেই শব্দ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ছবি : টুইটার (@NASA)
মহাকাশ নিয়ে আমাদের বিস্ময়ের শেষ নেই। চাঁদ হোক কিংবা মঙ্গল গ্রহ, প্রত্যেকটা ব্যাপারেই আমার-আপনার কৌতুহল একেবারে আকাশছোঁয়া। সম্প্রতি মঙ্গল গ্রহে অবতরন করেছে পারসিভিয়ারেন্স রোভার। NASA-র বিজ্ঞানীরা গোটা বিশ্বের কাছে এক নতুন দরজা খুলে দেন। তারপর থেকে পৃথিবীতে বসে মানুষজন মঙ্গল গ্রহের বিভিন্ন খুঁটিনাটি সম্পর্কে জানতে পারছে। সৌরজগতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম গ্রহে বাতাসের শব্দও কানে এসেছে।
আসুন প্রথমে সেই শব্দটা শুনে নেওয়া যাক :
এই ভিডিওতে আপনারা ১০ সেকেন্ডের যে আওয়াজটা শুনতে পাচ্ছেন, সেটাই মঙ্গল গ্রহে বাতাসের শব্দ। পারসিভিয়ারেন্স রোভারের বিশেষ ক্যামেরার সাহায্যে এই ভিডিওটি তোলা হয়েছে। নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির ডিরেক্টর মাইকেল ওয়াটকিন্স বলছেন, "এই প্রথমবার এরকম কোনও ইভেন্টকে ক্যামেরায় বন্দি করা সম্ভব হয়েছে৷ গোটা উইকেন্ড এই ভিডিও দেখা যাবে।"
উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালের পর থেকে এই মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ২০বার মঙ্গল অভিযান করেছে। মনে করা হচ্ছে পারসিভিয়ারেন্স সবচেয়ে ভালো ফলাফল দিতে পারবে৷ পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গলের মাটিতে অবতরণের পরেই নাসার সদর দফতরের বিজ্ঞানীরা আনন্দে মেতে ওঠেন। পারসিভিয়ারেন্স রোভার আগামী ২ বছর মঙ্গলের বুকে ঘোরাফেরা করবে। সেইসঙ্গে লাল গ্রহের বিভিন্ন খুঁটিনাটি তথ্য আমাদের পাঠাবে।
এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, মঙ্গলে নাকি প্রতিদিন রাতেই তুষারঝড় হয়। যেহেতু পৃথিবীর থেকে মঙ্গলের ঠান্ডা (তাপমাত্রা কম-বেশি মাইনাস ১২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো) অনেকটাই বেশি, তাই এই মারাত্মক ঠান্ডায় বরফ গলে জল হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। বিজ্ঞানীদের মতে, মঙ্গলের অভিকর্ষ বল অনেক কম বলে বায়ুমণ্ডলের যেহেতু বেশির ভাগটাই উড়ে গিয়েছে। তাই এখানকার বায়ুমণ্ডল একেবারে পাতলা।
সেকারণে সূর্যের উত্তাপে পৃথিবীর চেয়ে অনেক বেশি গরম হয়ে ওঠে মঙ্গল গ্রহ। সেকারণেই যদি সামান্যতম জলও থাকে মঙ্গলের পিঠে, সেটাও খুব তাড়াতাড়ি উবে যায়। সেই উবে যাওয়া জল উপরে ওঠে এবং তা জমে গিয়ে বরফ হয়। সেই বরফের টুকরোগুলোই মঙ্গলের মেঘে ভেসে ভেসে বেড়ায়। অতঃপর মেঘ ভারী হয়ে গেলে বরফের টুকরোগুলো ভোর রাতে নেমে আসতে থাকে ঝড় হয়ে।
ছবি : টুইটার (@NASA)