Odisha: কিছু সম্পর্ক অমূল্য। তা প্রেম এবং স্নেহে পূর্ণ। এবং সেই বন্ধন যখন কোনও পোষ্যর সঙ্গে হয়, তখন সেটা চিরস্থায়ী হয়। এটা নতুন কোনও কথা নয়। বারবার দেখা গিয়েছে এমন উদাহরণ।
ওড়িশার গজপতি জেলায়
তেমনই এক ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে ওড়িশার গজপতি জেলার পারলাখেমুন্ডিতে। সোমবার সেখানকার এক বাড়ির পোষ্য মারা যায়। ওই পরিবার মারা যাওয়া তাদের পোষা কুকুর অঞ্জলিকে চোখের জলে বিদায় জানায়। মিছিলের আয়োজন করেছিল। অঞ্জলি গত ১৬ বছর ধরে তাদের সঙ্গে বসবাস করছেন।
ফুল দিয়ে সাজানো হয় মরদেহ-বহনকারী ভ্যানটি। অঞ্জলির শেষকৃত্যের জন্য শ্মশানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকাটি ভেসে ওঠে ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র, ডিজে-র শব্দে। এবং আতশবাজিও পোড়ানো হয়।
পোষ্যর মালিক
পোষা প্রাণীটির মালিক টুনু গৌদা। শ্মশানের দিকে যাওয়ার সময় সারা পথ তাঁর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। অঞ্জলির মৃত্যুর পর গৌড়া ও তাঁর পরিবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। পুরো পরিবার অঞ্জলির সঙ্গে যেন একটি মানসিক বন্ধন গড়ে তুলেছিলেন এবং তাঁরা তাঁদের পোষ্য প্রাণীর মৃত্যুর পরে অসহায় এবং হতবাক ছিল।
আরও পড়ুন: কোন মুসলিম প্রধান দেশের নোটে গণেশের ছবি রয়েছে?
আরও পড়ুন: টেক বিপ্লব! কিবোর্ড-মাউজে ইমোজি, জায়গা পেল ওয়েব অ্যাড্রেসেও
আরও পড়ুন: 'অমর জ্যোতি নিভছে না, ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে মিশছে,' সাফাই কেন্দ্রের
টুনু গৌদা আর্থিক ভাবে দুঃস্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার মৃত্যুর পর পরিবার চালানোর জন্য তিনি বিভিন্ন দোকানে কাজ করতেন। সেই সময়েই গৌদা এক কুকুরছানার সঙ্গে দেখা। এবং তারপর বাড়িতে নিয়ে আসে।
নাম রেখেছিলেন অঞ্জলি
গৌড়া এর নাম রাখেন অঞ্জলি। ধীরে ধীরে তাঁর পরিবারের একজন হয়ে ওঠে। যদিও তিনি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কুকুরকে দত্তক নেন। তবে তিনি বিশ্বাস করেন যে অঞ্জলি তাঁর জন্য সৌভাগ্য এনেছে। তাঁর আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয় এবং তিনি নিজের একটি বাড়ি তৈরি করার মতো টাকাপয়সা আয় করেছেন।
সোমবার সকালে বিধ্বস্ত পরিবার অঞ্জলির মৃতদেহকে হলুদ জল দিয়ে স্নান করান এবং তার শেষকৃত্যের আগে মালা পরিয়ে দেয়। পরে গৌড়া প্রথাগত রীতি অনুযায়ী অঞ্জলির শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।
পরিবার মৃত্যুর পরের আচার-অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। স্থানীয় মানুষজনকে খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ১৬ বছরের সম্পর্ক। তাকে কী করে এত সহজে ভোলা যায়?