মেয়েদের টি শার্টে কী কী ক্যাপশন থাকা উচিত। তা নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasreen)। আর সেই পোস্ট এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল। বিভিন্ন পোস্ট, লেখা ইত্যাদির কারণে বরাবরই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন লেখিকা। এবার তাঁর পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
পোস্টে কী লিখেছেন তসলিমা ? লেখিকা লিখেছেন, 'গা ঘেঁষে দাঁড়াবেন না' লেখা টিশার্ট বাংলাদেশের কিছু মেয়ে পরছে। এরকম টিশার্ট আরও মেয়ের পরা উচিত।
এরপরই তিনি জানান, কী কী ক্যাপশন লেখ থাকা দরকার টিশার্টে। তার তালিকাও দেন তিনি। সেগুলো হল -
১. ঘেঁষবেন না, আমি আপনার মা বোন নই
২. যৌনবস্তু নই। তফাৎ যাও।
৩. নারী -নির্যাতন বন্ধ করো।
৪. আমরা তোমার সহযাত্রী, আমরা খাদ্য নই।
৫. বর্বরতা দূর করো। সভ্য সমাজ গড়ে তোলো।
৬. পুরুষতন্ত্র বিদেয় করো, বিবেকবান মানুষ গড়ো।
৭. পশুর কাছে ধর্ষণ না করা শেখো।
৮. ধর্ষণমুক্ত সমাজ চাই।
৯. নারীবিদ্বেষ আর নয়।
১০. নারীর সমানাধিকার ছাড়া সমাজ সভ্য হয় না।
১১। আমি আপনার স্ত্রী নই, প্রেমিকাও নই। দূরত্ব বজায় রাখুন।
১২। আমাকে বাধ্য করবেন না আপনাকে ঘৃণা করতে।
১৩। যৌনহেনস্থাকারী হওয়ায় কৃতিত্ব নেই, বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ হন।
১৪। পুরুষাঙ্গ হওয়ার চেয়ে পুরুষ হওয়া ভালো।
আরও পড়ুন : 'বাংলায় বাড়ছে উর্দু-আরবি শব্দের প্রয়োগ', কী বলছেন তসলিমা ...
প্রসঙ্গত, বরাবরই নারী স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করে আসেন তসলিমা। যে সব পুরুষরা নারীদের অপমান করেন বা তাঁদের স্বাধীনতার বিপক্ষে কথা বলেন, তাঁদের ছেড়ে কথা বলেন না লেখিকা। কয়েক মাস আগেই যেমন লিখেছিলেন, 'সুগোল সুডোল ফার্ম স্তন দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। মেয়েরা স্তন দেখানো, ক্লিভেজ দেখানো জামা পরলে বেশ লাগে দেখতে। সুদর্শন পুরুষদের যেমন শর্টস পরলে বা সুঠাম বাইসেপ দেখানো স্লিভলেস টিশার্ট, বুকের লোম দেখানো ডীপ ভি নেক টিশার্ট পরলে দেখতে ভালো লাগে, তেমন মেয়েদের কিছুটা নিতম্ব ঝিলিক দেওয়া সুগঠিত পা দেখানো মিনি শর্টস পরলে, ক্লিভেজ বা অর্ধেক স্তন দেখানো, পেট এবং নাভি দেখানো ছোট টপ পরলে দেখতে বেশ লাগে। কিন্তু আজকাল কী যে হয়েছে, যার স্তন দেখতে ভালো নয়, স্যাগিং, বা প্রায় ফ্ল্যাট, তারাও, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক জগতের সেলেব্রিটিরা ডীপ ভি নেক ড্রেস পরেন। কেন যে পরেন, কী দেখাতে, বুঝি না। আর বিশাল বপুর কুচ্ছিত পুরুষগুলোও আঁটসাঁট জামা পরে চললেন। চোখ সরাতে পারলে বাঁচি!'
যদিও সেবার তসলিমার পোস্টের বিরোধিতা করেন অনেকেই। একাংশ লেখে, কোনও মহিলা কী ধরণের পোশাক পরবেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। শরীর সুগঠিত হলে তবেই সে নিজের পছন্দের পোশাক পরতে পারবে, আর তা না হলে তাঁর কোনও আধুনিক পোশাক পরার অধিকার নেই, এমনটা কখনই হওয়া উচিত নয়।
আবার গায়ক কবীর সুমনের 'মুক্ত কাম' নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। একজন অশীতিপর বৃদ্ধ নিজের যৌন পারদর্শিতার কথা সদর্পে বলতে পারেন। একই কথা যদি অশীতিপর নারীর মুখে শোনেন! কী হবে সমাজের প্রতিক্রিয়া? প্রশ্ন তোলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। ফেসবুকে পোস্টও করেন। তা ভাইরাল হয়।
যদিও তসলিমার সম্প্রতি যে পোস্টটি সামনে এসেছে তা বেশ কয়েক বছর আগের। তবুও সেই পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে। জোর চর্চা শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।