শহরে চুরি ,ডাকাতি এবং অপরাধ মূলক ঘটনা ঘটাতে অভিনব পদ্ধতিকে কাজে লাগাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। তবে এরা মূলত বিহারের গ্যাং বলে ধারণা পুলিশের। ডাকাতি করে বিহারে পালিয়ে যাওয়ার আগে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার দুই বিহারের বাসিন্দা। চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসলো পুলিশের হাতে। ঘটনায় উদ্ধার হয়েছে সোনা ও রূপা এবং ইমিটেশনের গহনা। সেই সাথে উদ্ধার হয় বেশকিছু চাবি।
অভিনব কায়দায় একের পর এক ডাকাতি, চুরি ও মাদক পাচারে শিলিগুড়িতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিহারের গ্যাং। যার ফলে ক্রমশ উদবিগ্ন বাড়ছে পুলিশ-প্রশাসন মহলে।
মাটিগাড়া পুলিশের অভিযানে আবারো মিলল বড় সাফল্য। শুক্রবার বিকেলে শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়া এলাকায় বিহার নম্বরের একটি গাড়িকে ইতস্তত ঘুরতে দেখে মাটিগাড়া থানার পুলিশ। এরপর সন্দেহ হলে পুলিশ ওই গাড়ির চালক ও যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
এমনকী তারা নিজেদের আসল পরিচয়পত্র পুলিশকে দেখায়। কিন্তু তাতেও সন্দেহ থেকে যায় পুলিশকর্মীদের। এরপর তারা যেখানে থাকতো সেই জায়গা দেখাতে বলে। পুলিশের কথা মতো দুষ্কৃতীরা গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে।
এরপরই সুনিশ্চিত হয় পুলিশ যে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। তাদের পিছু ধাওয়া করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ঘটনাস্থল থেকে তিনজন পালিয়ে গেলেও পুলিশের হাতে ধরা পরে যায় দুই দুষ্কৃতী।
ধৃতরা হলো বিহারের বেতিয়ার চম্পারনের বাসিন্দা নুর মহম্মদ খান এবং জাহিদ খান। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, পলাতকরাও বিহারের বাসিন্দা। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৫২ কেজি গাঁজা, লক্ষাধিক টাকার সোনা, রূপার গয়না ও চুরির সরঞ্জাম। যার বাজার মূল্য বহু লক্ষ টাকা। পুলিশের ধারণা তারা এখনও সবটা সত্যি বলেনি। তাদের জেরা করা হচ্ছে।
পরবর্তীতে পুলিশ তদন্তে নেমে আরও জানতে পারে, ওই সোনাগুলি শিলিগুড়ি সংলগ্ন টুম্বাজোতের বাসিন্দা মুকেশ কুমার নামে এক ব্যবসায়ীর সোনার দোকান থেকে চুরি করা হয়েছিল। তিন-চারদিন আগে স্থানীয় এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল দুষ্কৃতীরা।
পাশাপাশি পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরো জানতে পেরেছে মানুষের চোখে ধুলো দিতে সোনার দোকানের তালা না ভেঙে নতুন চাবি বানানো ও চুরির পর সেই জায়গায় নতুন তালা লাগিয়ে দিত দুষ্কৃতীরা। পুলিশ আরও জানতে পারে ধৃতরা অপরাধ সংঘটিত করার আগে স্থানীয় এলাকাতেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে ডাকাতির প্ল্যানিং করতো।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার পুর্ণিমা শেরপা বলেন, " ধৃতরা বিহারের গ্যাং ডাকাতি সহ অন্যান্য অপরাধ করছিল। তবে তারা অভিনব কায়দায় এই ধরনের কাজ করতো। তারা কোনো রকম ভাঙচুর না করে তালার নকল চাবি বানাতো এবং ডাকাতির পর ওই জায়গায় নতুন তালা লাগিয়ে দিত।
এ ছাড়াও তারা যেই এলাকায় ডাকাতি কিংবা চুরির ঘটনা ঘটাতে সেখানে আগে থেকে ভাড়া নিয়ে তার প্ল্যানিং করত। ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই জনকে দশদিনের রিমান্ড নেওয়া হচ্ছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের পিছনে কে বা কারা জড়িত রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"