করোনা আবহে স্কুল বন্ধ। তবে পড়াশোনা কিংবা বিভিন্ন প্রক্রিয়া বন্ধ তো নয়, তাই এবার বাড়ি থেকেই গত এক বছরে অন্যান্য অনুষ্ঠানের মত মাদার্স ডে পালন হল শিলিগুড়িতে।
শিলিগুড়ির বিভিন্ন স্কুলে নানা রকম অ্যাক্টিভিটির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করা হয়েছে। কচি কাঁচাদের পাশাপাশি মায়েরাও নানা ভূমিকা পালন করেছেন দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে।
কেউ নিজেদের হাতে গ্রিটিংস কার্ড বানিয়ে তাতে মায়ের ছবি লাগিয়েছে, কেউ আবার মায়ের জন্য শুভেচ্ছা বার্তা লাগিয়ে মাকে উদ্দেশ্য করে তা ডেডিকেট করেছে।
কোনও কোনও ছাত্র-ছাত্রী মায়েদের সঙ্গে নানা রকম অনুষ্ঠানে দিনটি পালন করেছে। কেউ যেমন নাচে অংশ নিয়েছে, তেমনই আবার কেউ অংশ নিয়েছে ছোট নাটিকাতে।
শিক্ষামূলক ড্রামা, নাটক মন কেড়েছে নেটিজেন দের। এভাবেও যে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সদিচ্ছা থাকলে যে কোনও দিনই উদযাপন করা যায়, তা এই সমস্ত স্কুল গুলি প্রমাণ করে দিয়েছে।
শিলিগুড়ির বিভিন্ন আইসিএসই, সিবিএসই স্কুলগুলিতে মাদার্স ডে পালন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে অংশ নেয় মূলত নার্সারি, প্রি নার্সারি, কেজি ক্লাসের ছাত্র ছাত্রীরা। সকলেই খুবল উদ্দীপনার সঙ্গে এই দিনটি পালন করেছে এক সঙ্গে।
বাচ্চাদের এই বিশেষ অঙ্গভঙ্গি, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা এবং প্রশংসা হৃয়স্পর্শী হয়ে ওঠে। মা এবং বাচ্চাদের নিয়ে দিনটি উপভোগ্য হয়ে ওঠে। এই দিনটি মা ও শিশুদের কাছে ছিল স্মরণীয় হিসেবে থাকার মতো।
দীর্ঘদিন ঘরে থাকতে থাকতে শিশু মনে একটা আবদ্ধ তা তৈরি হয়েছে। যা থেকে বের হতে এই ধরণের উদ্যোগ সহায়তা করবে বলে একটি স্কুলের কর্ণধার সন্দীপ ঘোষাল জানান।
মূলত পড়াশোনার একঘেঁয়েমি কাটাতে পাশাপাশি এই ধরণের উদ্য়োগ শিশুমনের বিকাশে বাড়তি অক্সিজেন যোগাবে। যা এই কঠিন সময়ে অত্যন্ত জরুরি ও সময়োপযোগী বলে জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি আধুনিক শিশুদের মধ্যে আত্মকেন্দ্রিকতার বাইরে নিজে থেকে কিছু করার মধ্য দিয়ে তাঁদের মানসিক বিকাশও সম্ভব বলে মনে করছেন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরাও।
শিশুদের এই পরিস্থিতিতে মানসিক স্থিতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে এমন উদ্যোগ আরও বেশি করে নেওয়া দরকার বলে মত বিশেষজ্ঞদেরও।
সরাসরি সাক্ষাতের সুযোগ যখন একেবারেই নেই, তখন এ এভাবে একে অপরের সঙ্গে মিলে মিশে অন্তত ভার্চুয়াল হলেও কিছুটা থাকা দরকার।
শুধু মাদার্স ডে নয়, রবীন্দ্র জয়ন্তী বা অন্য় কোনও উপলক্ষে শিশুদের চাঙ্গা রাখতে এ ধরণের উদ্যোগের জুড়ি নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশেষ করে শিলিগুড়ির মত কসমোপলিটন শহরে আত্মকেন্দ্রিকতা বাড়ছে বলেই সম্প্রতি একটি সমীক্ষার রিপোর্টে জানা গিয়েছে। ফলে এ থেকে মুক্তির উপায় বেশি করে মেলামেশা।
নইলে অবশ্যম্ভাবী ভাবে একদিন করোনা আবহ কাটবে, তবে মানসিক স্থবিরতা গ্রাস করে নেবে একটা গোটা প্রজন্মকে। ভিডিও গেম আর অ্যাপের বন্ধন থেকে মুক্তি নেই। তবে কিছুটা রিলিফ দেওয়া সম্ভব এভাবেই।
তাই অন্তত মাসে একবার বা সম্ভব হলে একাধিকবার এই ধরণের উদ্য়োগ ও প্রচেষ্ঠা শিশুদের সঠিক ট্র্যাকে রাখতে সাহায্য করবে।