পরিকল্পনা করে উদয়ন গুহকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কোচবিহার জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। কোনও মতে প্রাণে বেঁচেছেন প্রাক্তন এই বিধায়ক তথা এবারের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ৫৭ ভোটে হেরে যাওয়া উদয়নবাবু। তাঁর উপর হামলার প্রতিবাদে তৃণমূলের তরফে ৩০ ঘন্টা দিনহাটা বনধের ডাক দিল তৃণমূল। শুক্রবার রাত ১২ টা পর্যন্ত বনধ চলবে।
জখম উদয়নবাবু
বৃহস্পতিবার বিকেলে দিনহাটায় প্রাক্তন বিধায়ক ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতা উদয়ন গুহকে আক্রমণ করা হয়েছিল। উদয়নবাবুর একটি হাত ভেঙে যায়। মাথায়ও আঘাত লেগেছে বলে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে। তড়িঘড়ি তাঁকে দলের অন্য কর্মীরা নিয়ে যান ও তাঁর শুশ্রুষা করানো হয়।
কখন ঘটনাটি ঘটেছে
দিনহাটার প্রাক্তন বিধায়ক এবং সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ২০২১ বিধানসভার প্রার্থী দিনহাটা থেকে উদয়ন গুহ বৃহস্পতিবার দলীয় কিছু কর্মীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময় বিকেলে দিনহাটা জলের ট্যাঙ্কের কাছে দুর্বৃত্তরা তাঁর উপর হামলা করে। বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটার দিকে এই হামলা হয়। উদয়ন গুহ বর্তমানে দিনহাটার টাউন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
দলীয় নেতৃত্বের দাবি ও অভিযোগ
উদয়ন গুহর বিষয়ে জানতে ফোন করলে তৃণমূল কংগ্রেসের দিনহাটার যুব সভাপতি মৌমিতা ভট্টাচার্য জানান, বুধবার টিএমসি কর্মীদের উপর হামলা হয়েছিল, তাদের বাড়িঘর ভেঙে ফেলা হয়েছিল। উদয়ন বাবু তাঁদের সাথেই দেখা করে ফিরে যাচ্ছিলেন। দিনহাটায় জলের ট্যাঙ্কের কাছে, তৃণমূলের আগে গুন্ডাদের একটি দল, যারা আগে তৃণমূল ছিল এবং পরে বিজেপিতে চলে যায়, তারা স্থানীয় ক্লাবের কাছে গাড়িটির অপেক্ষায় তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। উদয়ন বাবু যখন টিএমসি কর্মীদের সাথে দেখা করতে যান, তখব ক্লাবের দিকে অস্ত্র জমায়েত হচ্ছিল। কর্মীদের দেখে ফেরার পথে তাঁর গাড়িটি প্রথমে আক্রমণ করা হয়। টিএমসি কর্মীরা গাড়ি থেকে বেরিয়ে উদয়নবাবুকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। উদয়ন গুহ তাঁর দুজন নিরাপত্তাকর্মী-পুলিশ সদস্যকে নিয়ে গাড়ি থেকে বাইরে বের হন। গুন্ডারা উদয়ন গুহাকে তাঁর মাথায় আঘাত করে, তারা তাঁকে হত্যা করার পরিকল্পনা করছিল বলে তাঁর অভিযোগ। যখন গুহ তার মাথাটি বাঁচানোর চেষ্টা করে, তাঁর ডান হাতটিতে লাঠির বাড়ি পড়ে। ফলে তাঁর ওই হাতটি ভেঙে যায়। তাঁর পিছনের বাম দিকেও একটি ফ্র্যাকচার রয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীদের একজনের মাথায় তিনটি সেলাই পড়েছে। অন্য জনের একটি পা ভেঙেছে। উদয়ন গুহকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল বলে মৌমিতাদেবীর অভিযোগ।
ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে এগিয়ে দিনহাটা
২ মে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই লরাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস অব্যাহত। তার মধ্য়ে কোচবিহারের দিনহাটা ও উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া রয়েছে। দিনহাটার ঘটনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপি এবং টিএমসি দুজনেই একে অপরকে নিজ নিজ কর্মী ও সমর্থকদের উপর হামলার অভিযোগ করেছে। দিনহাটার প্রাক্তন বিধায়ক উদয়ন গুহ এই বছর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে দিনহাটা থেকে মাত্র ৫৭ ভোটে স্থানীয় সাংসদ বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামানিকের কাছে হেরে যান।