দেশের ১৫০ টি চিড়িয়াখানাকে টপকে সেরা চিড়িয়াখানার তকমা পেল দার্জিলিং চিড়িয়াখানা। দেশের চিড়িয়াখানাগুলিকে নিয়ে র্যাঙ্কিং সিস্টেম চালু করল জাতীয় চিড়িয়াখানা নিয়ামক সংস্থা ‘সেন্ট্রাল জু অথরিটি অব ইন্ডিয়া’। এবারই প্রথম র্যাঙ্কিং ব্যবস্থা চালু করার পরই প্রথমবারই র্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বর স্থান পেল শৈলরানি দার্জিলিং চিড়িয়াখানা। প্রথম বারেই বাজিমাত করায় খুশি জিটিএ থেকে পর্যটন সার্কিট। পুজোর মুখে ভরা মরশুমে এটি বাড়তি মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
আরও পড়ুনঃ Durgapuja 2022: প্রথমা থেকে নবমী, পুজোয় কোন পোশাক পরলে মা-দুর্গার কৃপা পাবেন?
সেরা দার্জিলিং চিড়িয়াখানা
দেশের মধ্যে সেরা চিড়িয়াখানা হিসেবে শীর্ষে এখন দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিকাল পার্ক। এই স্বীকৃতি দিয়েছে সেন্ট্রাল জু অথরিটি অফ ইন্ডিয়া। গত ১০ সেপ্টেম্বর ভুবনেশ্বরে দেশের সব ক'টি চিড়িয়াখানা ও সাফারি পার্কের উপর সমীক্ষা করে এই র্যাঙ্কিং তৈরি করা হয়েছে। দেশের সব ক'টি চিড়িয়াখানা ও সাফারি পার্কের অধিকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেরার শিরোপা পেতেই উচ্ছ্বসিত পার্কের আধিকারিক থেকে অন্যান্য কর্মীরা।
আলিপুর কত নম্বরে?
এ রাজ্যের বিখ্যাত ও প্রাচীনতম আলিপুর চিড়িয়াখানা এই র্যাঙ্কিংয়ে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে। এ ছাড়া চেন্নাই, দিল্লি ওড়িশার বিখ্যাত নন্দনকাননকে পিছনে ফেলে শিরোপা পাওয়ায় খুশি দার্জিলিং চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষও। দেশের প্রায় ১৫০ টি চিড়িয়াখানাকে ক্রমতালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে। সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছে দার্জিলিংয়ের এই চিড়িয়াখানা। ক্রমতালিকায় কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানা রয়েছে চতুর্থ স্থানে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চেন্নাইয়ের চিড়িয়াখানা এবং ক্রমতালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে মহিশূরের চিড়িয়াখানা। দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুওলজিকাল পার্কের অধিকর্তা বাসবরাজ সংবাদমাধ্যমকে জানান, শিরোপা পেয়ে অত্যন্ত খুশি সকলে। এটা সবার সাফল্য। এর ফলে দায়িত্ব যেমন বেড়ে গেল , তেমন আরও ভিজিটর বাড়বে, যা এলাকার অর্থনীতিকে বদলে দেবে বলে তাঁরা মনে করছেন।
কিসের ভিত্তিতে এই তালিকা তৈরি হয়েছে?
জানা গিয়েছে বিভিন্ন বিষয়কে মাথায় রেখে এই ক্রমতালিকা করা হয়েছে। মূলত চিড়িয়াখানা পরিচালন পদ্ধতি, পর্যটকদের ভিড়, পর্যটকদের সুবিধা, পরিকাঠামো, আবাসিক বন্যপ্রাণীদের দেখভাল, প্রজননের পরিকাঠামোর মতো বিষয়গুলি ঠিকঠাক নজরে রাখা সহ আরও কয়েকটি বিষয়ের নিরিখে এই র্যাঙ্কিং চালু করা হয়েছে। তাতেই বাজিমাত করেছে হেরিটেজ এই শহরের ঐতিহ্যশালী চিড়িয়াখানা। সেন্ট্রাল জু অথরিটি’ সূত্রের খবর, পশুপাখিদের রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে তাদের প্রজনন, পরিচালনা, চিড়িয়াখানায় আসা পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা মিলিয়ে প্রায় ৮৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে দেশের মধ্যে সেরা চিড়িয়াখানার শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছে দার্জিলিং চিড়িয়াখানা।
কী কী দেখার রয়েছে দার্জিলিংয়ের এই চিড়িয়াখানায়?
দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানায় একাধিক এমন প্রাণী রয়েছে, যা দেশের কোথাও নেই। এখানকার মূল আকর্ষণ বিরলতম রেড পান্ডা, হিমালয়ান ব্ল্যাক বিয়ার, স্নো লেপার্ড, গোরাল, হিমালয়ান টার, মিশমি টাকিনস, নীল হরিণের মতো প্রাণী। প্রতি বছর এই চিড়িয়াখানায় আসেন দেশ-বিদেশের লক্ষাধিক পর্যটক। এখানকার পর্যটক আকর্ষনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হল পদ্মজা নাইডু চিড়িয়াখানা।
১৯৭৫ সালে রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল প্রয়াত পদ্মজা নাইডু চিড়িয়াখানার নামকরণ করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় রেড পান্ডা, তুষার চিতার কৃত্রিম প্রজনন করানো হয়। ১৯৮৬ সাল থেকে এই প্রজনন প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। দার্জিলিং শহরের উপকণ্ঠে ৬৭ একর জমির ওপর এই চিড়িয়াখানা তৈরি করা হয়েছিল।