Advertisement

৩০০ বছর পর ২ গ্রামে বিয়ে, সুখে সংসার করছে দম্পত্তি

কয়েক শতাব্দী ধরে ২ গ্রামের মধ্যে বিয়ের কোনও সম্পর্ক গড়ে উঠছিল না। কারণ, কুসংস্কার। তবে আড়াই বছর আগে সেই কুসংস্কার ভেঙে দুই গ্রামের মধ্যে প্রথম বিয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কথা হচ্ছে মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার মাহলং ও জিয়াখর্দ্দ গ্রামের।

Villege
সৌমেন কর্মকার
  • বহরমপুর ,
  • 22 Apr 2021,
  • अपडेटेड 10:36 PM IST
  • ৩০০ বছরের কুসংস্কার ভেঙে বিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে
  • এখন ওই দম্পতির এক সন্তানও রয়েছে
  • তাঁরা সুখে সংসার করছেন

পাশাপাশি ২ গ্রাম। এক গ্রামের মানুষের সঙ্গে অন্য গ্রামের মানুষের দেখা হয় নিয়মিত। চলে খোশগল্প। একে অপরের বিপদে পাশেও দাঁড়ান গ্রামবাসীরা। কয়েক শতাব্দী ধরে ২ গ্রামের মধ্যে বিয়ের কোনও সম্পর্ক গড়ে উঠছিল না। কারণ, কুসংস্কার। তবে আড়াই বছর আগে সেই কুসংস্কার ভেঙে দুই  গ্রামের মধ্যে প্রথম বিয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কথা হচ্ছে মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার মাহলং ও জিয়াখর্দ্দ গ্রামের। এই গ্রামের মহম্মদ মিনহাজ শেখ বিয়ে করেন মাহলংয়ের জামিনাকে। তাঁরা এখন সুখে সংসার করছেন। রয়েছে এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানও। কিন্তু,  মিনহাজ ও জামিনার বিয়ের পর বেশ কয়েকবছর কেটে গেলেও এখনও কুসংস্কারের আগল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি গ্রামের অনেকেই। তাই নতুন করে দুই গ্রামের মধ্যে আর বৈবাহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। 

৩০০ বছরের কুসংস্কার ভাঙেন মিনহাজ 

মিনহাজ শেখ পেশায় ব্লক অফিসের অস্থায়ী কর্মী। ছোটো থেকেই শুনে এসেছিলেন দুই গ্রামের মাঝে অবস্থিত এক মাজারের কথা। সেই মাজারের কারণেই নাকি দুই গ্রামের মধ্যে বিয়ে সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। বিয়ে করলেই নাকি কোনও না কোনও অঘটন ঘটবে দম্পত্তির। একজন মারা যাবেনই। তবে মিনহাজ তাতে কর্ণপাত করেননি। তিনি পণ করেছিলেন, মাহলংয়ের মেয়েকেই বিয়ে করবেন। 

যেই কথা সেই কাজ। মাহলংয়ের বেশ প্রভাবশালী ব্যক্তি মণিরুল ইসলামের কাছে তাঁর মেয়ের সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান মিনহাজের বাড়ির লোকজন। দুই গ্রামের মধ্যে বিয়ের সম্পর্ক যে কয়েক শতাব্দী ধরে হয়নি, সেকথা জানতেন জামিনার বাবা। তবে তিনিও কুসংস্কার ভাঙতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। তাই রাজি হয়ে যান। ধুমধাম সহ বিয়ে হয়  মিনহাজ-জামিনার। 

আরও পড়ুন: প্রিমিয়াম ফার্স্ট ফ্ল্যাশ চা অধরা, মাথায় হাত চা শিল্পে

সেদিনের কথা বলতে গিয়ে পেশায় স্কুল-শিক্ষক মিনহাজের ভাই মহম্মদ মিজাম সেখ বলেন, 'বিয়ে খুব ধুমধাম সহ হয়েছিল। দুই গ্রামের মানুষকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। অনেকে এসেছিলেন। দুই গ্রামের মধ্যে বিবাদ ছিল। ছিল কুসংস্কারও। তবে তা আমরা ভাঙতে পেরেছিলাম। মিনহাজ-জামিনার এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানও হয়েছে। নাম ফারহানা ইয়াসমিন। ' 

Advertisement

এই  বিয়ের পর কেটে গিয়েছে আড়াই বছর। অথচ তারপর আর দুই গ্রামের মধ্যে বিয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। কেন? স্থানীয় বাসিন্দাদের কারও কারও মতে, এখনও কুসংস্কারে আগল থেকে বেরোতে পারেনি গ্রামের সবাই। তাই হয়তো নতুন করে ২ গ্রামের কেউই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়নি। 

এনিয়ে এলাকার সমাজকর্মী মীর রাকেশ রৌশান বলেন, আমরাও শুনেছিলাম কুসংস্কারের কথা। কয়েকবছর আগে ২ গ্রামের মধ্যে বিয়ের সম্পর্ক গড়েও ওঠে। কিন্তু, তারপর আর যেমন কার তেমন। তবে এলাকার মানুষ সচেতন হচ্ছেন। নিশ্চয় এই কুসংস্কারও তারা ভাঙতে পারবেন।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement