Eso Kotha Boli:গল্প করার লোক নেই। বাড়িতে লোক আছে,কিন্তু কেউ আপনার কথা শোনে না? অথবা সবার জন্য কাজ করতে করতে আপনার নিজের জন্য় সময় নেই? অথবা আপনার আদপেই কেউ নেই? এমন যদি হয়, আপনার জন্য কিছুটা খুশির খবর রয়েছে। আপনার সঙ্গে কথা বলার লোকের অভাব আর হবে না। কারণ আপনার মুশকিল আসান করতে চলে এসেছে একটি সংগঠন। আপনার যত খুশি গল্প করুন। তাঁরা আপনার কাছে লোক পাঠাবে। আপনি শুধু আপনার ইচ্ছের কথা জানিয়ে রাখুন। আসুন জেনে নেই কারা এগিয়ে এসেছেন মনের কথা শুনতে।
আরও পড়ুনঃ কালিম্পং ঘোরার নিয়মে বিরাট বদল, না জানলে গুণতে হবে জরিমানা
এসো কথা বলি
মনের কথা শুনবেন তাঁরা। আপনার সঙ্গে গল্প করবেন। সমাজ যাদের বাঁকা নজরে দেখে তারাই দায়িত্ব নিয়েছেন এ সমাজের মানুষের মন ভালো রাখতে। কোচবিহারের রূপান্তরকামীরা সকলের মনের কথা শুনবেন। তাঁরাই নিয়েছেন এই উদ্যোগ। এই উদ্যোগের নাম "এসো কথা বলি"। রূপান্তরকামীদের একটি সংগঠন মৈত্রী সংযোগ সোসাইটি কোচবিহার ১ ব্লকের ঘুঘুমারি এলাকার একটি বাড়িতে চালু হয়েছে এই উদ্যোগ ৷ উদ্যোক্তাদের অন্যতম সুমি দাস জানালেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই এতটাই মজে থাকেন যে পাশের জনের সঙ্গেও কথা বলতে চান না কেউ ৷ তাছাড়া সমাজের সবাই ধীরে ধীরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। কারও সঙ্গে কেউ আজকাল সেভাবে গল্প করেন না বা একে অপরের মনের কথা শোনেন না ৷ তাই রূপান্তরকামীরা শুনবেন সেই সব মানুষের মনের কথা। যাতে তাদের মন ভালো থাকে, সুস্থ থাকে, সেরে ওঠে মনের অসুখ৷ সেই চেষ্টাই করবেন তাঁরা।
ভুল ধারণা ভাঙতে চান তাঁরা
কোচবিহার মৈত্রী সংযোগ সোসাইটির মাধ্যমে রূপান্তরকামীরা নতুন বাঁচার স্বপ্ন দেখেছেন৷ এঁদের সম্পর্কে অনেকের ভুল ধারণাও আছে ৷ সেই ভুল ভাবনা থেকেই কু'কথাও বলেন কেউ কেউ। "এসো কথা বলি "র মাধ্যমে তাদের সম্পর্কে সেই ভুল ভাবনাও মেটাতে চান তাঁরা ৷ তাঁরাও যে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই, সেই বার্তা তাঁরা দিতে চান সমাজকে ৷ যেমন এক রূপান্তরকামী ঈশ্বর চন্দ জানিয়েছেন, তাঁরা তাদের মনের কথা কাকে বলবেন৷ তাদের ভাবনা ও কথার সঙ্গে অনেকেই একমত না হতে পারেন। তাই মন খুলে তাদের কথা বলার একটি ঠিকানা এই ঘরটি।
কবে কবে খোলা থাকবে মনের দরজা?
এই ঘরটি আপাতত কোচবিহার মৈত্রী সংযোগ সোসাইটির অফিস ঘর। এই ঘরের একটি বসার ঘরকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। এই ঘরে হয় আড্ডা আলোচনা। সুমি জানান, শুধু রূপান্তরকামীরাই নন, সাধারণ মানুষও আসছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে। কেউ এসেছেন পারিবারিক সমস্যার কথা বলতে, আবার কেউ এসে শুনিয়েছেন প্রেমের সম্পর্ক ভেঙ্গে কতটা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তা নিয়ে কথা বলতে ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁর ব্যক্তিগত সমস্যা মেটাতে না পারলেও, তাঁরা সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে গল্পের পরে মানসিক শান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৷ জানা গিয়েছে, এসো কথা বলির এই ঘরের দরজা খোলা থাকছে প্রতি সপ্তাহের সোম, বুধ, শুক্র এই তিন দিন। দুপুর ১২ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত৷ যে কেউ আসতে পারেন।